ভারতের সাইবার স্পেসে বড়সড় হামলার আশঙ্কা রয়েছে। সাম্প্রতিক রিপোর্টে এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করল সিকিউরিটি ফার্ম চেক পয়েন্ট। দেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন তাঁরা। চেক পয়েন্টের বিশ্লেষণে উঠে এসেছে, আমেরিকা, ফ্রান্স এবং ইতালির মতো প্রথম বিশ্বের দেশগুলির পাশাপাশি ভারতকে লক্ষ্য করে ভয়াবহ সাইবার হামলার ছক কষছে হ্যাকাররা।
চেক পয়েন্ট জানিয়েছে, ভারতে সাইবার ক্রিয়াকলাপ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধের প্রেক্ষিতেই এই বাড়বাড়ন্ত বলে মনে করছেন তাঁরা। সাইবার হামলার বেশিরভাগই ডিডিওএস অপারেশন। জাতীয় পরিকাঠামো থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদেরও নিশানা করা হচ্ছে। চেক পয়েন্ট বলছে, ‘‘প্যালেস্তাইনপন্থী সাইবার অ্যাক্টিভিস্টরা ইজরায়েলের মিত্র হিসেবে পরিচিত দেশগুলিকে লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে’‘।
এই সাইবার হামলার পিছনে উঠে এসেছে ‘সাইবার এরর সিস্টেম’ নামের একটি গোষ্ঠীর নাম। এরা মূলত এশিয়া, আরও নির্দিষ্ট করে বললে ভারত জুড়ে কার্যক্রম চালায়। যুদ্ধকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করে এই অঞ্চলকে অস্থির করতে চাইছে তারা, জানিয়েছে চেক পয়েন্ট। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হ্যাকিংয়ের মুখে পড়েছে আইসিএমআর। ৮১.৫ কোটির বেশি ভারতীয়ের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যা ভারতীয় সাইবার নিরাপত্তাকে বড়সড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। এই ঘটনা প্রথম আমেরিকান সাইবার সিকিউরিটি এবং গোয়েন্দা সংস্থার নজরে আসে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় যে শুধু গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো রক্ষা নয়, ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তার জন্যেও শক্তিশালী সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রয়োজন। এছাড়া ভারতীয়দের আধার তথ্য ফাঁসও বড়সড় কেলেঙ্কারি বলেই মনে করছেন তাঁরা। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র। ভারতীয় কম্পিউটার এমার্জেন্সি রেসপন্স টিমের আধিকারিকরা তদন্তের নেতৃত্ব দেবেন বলে জানা গিয়েছে।
এক বছর আগে সাইবার হামলার মুখে পড়েছিল দেশের সবচেয়ে বড় মেডিক্যাল প্রতিষ্ঠান এইমস। আইটি সিস্টেমগুলি পুরোপুরি কবজা করে নেয় হ্যাকাররা। ফাঁস হয়ে যায় রোগীর রেকর্ড এবং আর্থিক তথ্য। ভারতীয় কম্পিউটার এমার্জেন্সি রেসপন্স টিমও এই সম্পর্কে যে তথ্য দিয়েছে তাতে উদ্বেগ আরও বাড়ছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২১ সালে ১,৪০২,৮০৯ সাইবার হামলার শিকার হয় ভারত। ২০২২ সালে সেই সংখ্যাটা ছিল ১,৩৯১,৪৫৭।