গাজা এবং অধিকৃত ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক মিলিয়ে ১৯৬৭ সাল থেকে যত প্যালেস্তিনীয় শিশু মারা গিয়েছে, তার চেয়ে গত এক মাসে ইজরায়েলি হামলায় অনেক বেশি শিশু মারা গিয়েছে। ডিফেন্স ফর চিলড্রেন ইন্টারন্যাশনাল প্যালেস্তাইনের তরফে এই পরিসংখ্যান সামনে আনা হয়েছে। মঙ্গলবার এই পরিসংখ্যান তুলে ধরে তারা শুধুমাত্র ৪ হাজার ৩২৪ শিশু মারাই যায়নি, গত একমাসে ১ হাজার ৩৫০ প্যালেস্তিনীয় শিশুর কোনও হদিশ নেই বলেও জানিয়েছে তারা। ধ্বংসস্তূপের নীচে সকলে চাপা পড়েছে বলে অনুমান। নিখোঁজ শিশুদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ বলে জানিয়েছে ওই সংগঠন। (Israel Palestine Conflict)
গাজার স্বাস্থ্য আধিকারিকরাও এই পরিসংখ্যানে সিলমোহর দিয়েছেন। তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। সংস্থার মহাসচিব অ্যান্টোনিও গুতারেসের কথায়, “গাজার পরিস্থিতি দুঃস্বপ্নের চেয়েও ভয়াবহ। মানবিক সঙ্কট বললেও কম বলা হয়। গাজা শিশুদের সমাধিক্ষেত্রে পরিণত হচ্ছে। অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা উচিত।”
গুতারেশ আরও বলেন, “এই সংঘর্ষে লিপ্ত যাঁরা, তাঁরা তো বটেই, আন্তর্জাতিক মহলও এর দায় অস্বীকার করতে পারে না। এই অমানবিক আচরণ অবিলম্বে বন্ধ হওয়া প্রয়োজন। গাজায় মানবিক সহযোগিতা পৌঁছে দিতে হবে।” গাজার এই পরিস্থিতি নিয়ে একাধিক সংগঠন সরব হয়েছে। এমনিতেই বিগত ১৭ বছর ধরে বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন গাজা। তার মধ্যে মিশরকেও কার্যত ঘিরে ফেলেছে ইজরায়েলি সেনা। প্যালেস্তিনীয়দের কাছে কোনও সাহায্য় পৌঁছচ্ছে না এই মুহূর্তে।
গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলে রকেট নিক্ষেপ করে হামাস। তার পর থেকে দুই পক্ষের মধ্যে লাগাতার যুদ্ধ চলছে। সেই নিয়ে এই মুহূর্তে দ্বিধাবিভক্ত আন্তর্জাতিক মহল। আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্সের মতো দেশ যেখানে ইজরায়েলকে সমর্থন কছে, আরব দুনিয়া, এশিয়ার বিভিন্ন দেশ আবার প্যালেস্তাইনের প্রতি সমবেদনা ব্যক্ত করেছে। এমনকে আমেরিকার সেনেটেও এ নিয়ে দ্বিমত দেখা দিয়েছে। ডেমোক্র্যাটসদের মধ্যে অনেকেই ইজরায়েলের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন।
এই একমাসের যুদ্ধে ইজরায়েলের তরফেও প্রাণহানি হয়েছে। ১ হাজার ৪০০ নাগরিক এখনও পর্যন্ত মারা গিয়েছেন সেখানে। কিন্তু প্যালেস্তাইনে রোজই কার্যত কচুকাটা হচ্ছেন মানুষ জন। ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ১৬৪ জন মারা গিয়েছেন, যার মধ্যে শিশু ৪৪ জন। সব মিলিয়ে ৫ হাজার ৬০০ ইজরায়েলি নাগরিক যুদ্ধে আহত হয়েছেন। গাজায় আহতের সংখ্যা ২৬ হাজার ৪৭৫, যার মধ্যে শিশুর সংখ্যা ৮ হাজার ৬৬৩। গাজায় নিখোঁজ ২ হাজার ৬৬০ প্যালেস্তিনীয় নাগরিক, যার মধ্যে শিশুর সংখ্যা ১৩৫০। ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে আহত হয়েছেন ২১০০ মানুষ।
(Feed Source: abplive.com)