‘ডায়মন্ড হারবারে’ দাঁড়ানোর ইচ্ছেপ্রকাশের পরেই ‘মুণ্ডুপাত’ শুরু ! মুখ খুললেন নৌশাদ

‘ডায়মন্ড হারবারে’ দাঁড়ানোর ইচ্ছেপ্রকাশের পরেই ‘মুণ্ডুপাত’ শুরু ! মুখ খুললেন নৌশাদ
কলকাতা: যেকোনও নির্বাচনের আগেই এক একটা বিষয় দাগ কাটে মানুষের মনে। বলাই বাহুল্য কোথায় কীসে চিড়ে ভিজবে ? তা বুঝেই সাজানো হয় ভোট যুদ্ধের দাবায় ঘোড়া-হাতির গুটিকে। কে থাকবে সম্মুখে, কে মাথা খাটাবে, সবই পরিকল্পনা মাফিক হয়। একুশের নির্বাচনে বিজেপির পঞ্চপাণ্ডবের কথা কারও অজানা নেই। যে দলে ছিলেন কেন্দ্রের বিজেপি শাসিত একাধিক রাজ্যের হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রী। একইভাবে পৃথক রণকৌশল সাজিয়েছিল শাসকদল-সহ অন্যান্যরাও। এবার কথা হচ্ছে লোকসভা নির্বাচনের আগে, বঙ্গ রাজনীতিতে সবথেকে বেশি কোন বিষয়টা নজর কেড়েছে ? বলা ভাল, দাগ কেটেছেন কে ? মূলত ডায়মন্ড হারবারে লোকসভার প্রার্থী হতে নৌশাদ সিদ্দিকির ইচ্ছাপ্রকাশ করতেই জোর জল্পনা ছড়িয়েছে। তার কি আঁচ টের পাওয়া গেল ফলতার সভাতেও ? নাম না করলেও আজ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে উঠে এল ‘সংখ্যালঘু’ ইস্যু। তিনি বলেই দিলেন সাফ, ‘অনেকে ডায়মন্ড হারবার থেকে দাঁড়ানোর ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে। দাঁড়াক। এটাই গণতন্ত্র।’ আর এরপরেই মুখ খুললেন আইএসএফ বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকী।

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থান কী ? সেটা তো পরিষ্কার করছেন না : নৌশাদ

এদিন নৌশাদ বলেন, ‘দেখুন ভারতবর্ষের লোকসভা নির্বাচনে, কে কোথায় দাঁড়াবে, কীভাবে দাঁড়াবে ? এটা গণতন্ত্রে প্রস্ফূটিত আছে। সবাই জানে। আমি দাঁড়াব বলা পর থেকে, ওনার দলের ছোট-বড়-মেজো নেতারা, যেভাবে আমার মুণ্ডুপাত করছেন ! যেভাবে আমাকে মানসিক আক্রমণ করছেন, কই সেই বিষয়ে ওনার অবস্থান কী ? সেটা তো পরিষ্কার করছেন না। হ্যাঁ রাজনৈতিকভাবে উনি আমার বিরোধীতা করবেন। আমি ওনার বিরোধীতা করব। এটাই তো সৌজন্যতার রাজনীতি। কিন্তু সৌজন্যতার রাজনীতিকে উপেক্ষা করে, শুধু দাঁড়াব, আমি ইচ্ছেপ্রকাশ করেছি, তার পর থেকে যেভাবে লেগে পড়েছে আমার বিরুদ্ধে,আমাকে মানসিকভাবে আক্রমণ করছে। পরোক্ষভাবে থ্রেট করছে। প্রবাদ বাক্য উদাহরণ হিসেবে দিচ্ছে। পিপিলিকার পাখা গজায়.., কেউ বলেছে হেরে যাওয়ার তরে, কেউ বলছে মরিবার তরে। এগুলি নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থান কী, সেটাও জানতে চাইছি।’

পাখির চোখ সংখ্যা লঘু ভোট

প্রসঙ্গত, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে  বঙ্গে,বিজেপি ভাল ফল করলেও, ২০২১ এর বিধানসভা ভোট, একাধিক কেন্দ্রে বিধানসভা উপনির্বাচন, কলকাতা পুরভোট, পঞ্চায়েত ভোটে আর পালে হাওয়া পায়নি গেরুয়া শিবির। এদিকে দেখতে দেখতে বছর ঘুরলেই ফের ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচন। পাখির চোখ এরাজ্যের ৩০ শতাংশ মুসলিম ভোট। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে, রাজ্যের ১২৫টি সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে তৃণমূল ৯৩টি কেন্দ্রেই এগিয়ে ছিল। তাই এদিন লোকসভা ভোটের আগে, অভিষেকের বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে রাজনৈতিক মহলে।

‘ভোটের সময় আগেও সংখ্যালঘু তাস খেলেছিল..’

মূলত, এদিন অভিষেক বলেন , ‘ অনেকে ডায়মন্ড হারবার থেকে দাঁড়ানোর ইচ্ছাপ্রকাশ করেছে, দাঁড়াক, এটাই গণতন্ত্র।’ পাশাপাশি, তিনি আরও বলেন, ‘মাথা নত করলে মানুষের কাছে করব, বহিরাগতদের কাছে নয়। ধর্মে ধর্মে বিভেদ, মানুষের টাকা আটকে রাখা জনপ্রতিনিধির কাজ নয়। টাকা নিয়ে সেটিং করাও জনপ্রতিনিধির কাজ নয়, মানুষের পাশে থাকাটাই কাজ। যতদিন ডায়মন্ড হারবারে আছি, ততদিন এখানে বিজেপিকে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতে দেব না। গুজরাত-উত্তরপ্রদেশের নেতাও ডায়মন্ড হারবারে ভোটে দাঁড়াতে পারেন। মানুষই ভো-কাট্টা করে দেবে, টাকা ছড়িয়ে কোনও লাভ হবে না। বড় ফুল টাকা দিলে নেবেন, কিন্তু ভোটটা জোড়াফুলেই দেবেন। ভোটের সময় আগেও সংখ্যালঘু তাস খেলেছিল সিপিএম। কিন্তু, যাঁরা সংখ্যালঘু তাস খেলেছিল, তাদের এখন কী অবস্থা সবাই জানে। আমাদের এখানে কাউকে ভাতে মারতে পারবে না কেন্দ্র।’

(Feed Source: abplive.com)