১৭০ ঘণ্টা পার, উত্তরাখণ্ডে এখনও সুড়ঙ্গে আটকে ৪১ শ্রমিক, পাহাড় ভেদ করে গর্ত খোঁড়ার কাজ শুরু

১৭০ ঘণ্টা পার, উত্তরাখণ্ডে এখনও সুড়ঙ্গে আটকে ৪১ শ্রমিক, পাহাড় ভেদ করে গর্ত খোঁড়ার কাজ শুরু
দেহরাদূণ:  জাতীয় সড়কের উপর নির্মীয়মান সুড়ঙ্গ ভেঙে পড়ে বিপত্তি উত্তরাখণ্ডে। গত এক সপ্তাহ ধরে ধ্বংসস্তূপে বন্দি ৪১ জন শ্রমিক। ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে দৌড় লাগিয়েও, এখনও পর্যন্ত তাঁদের উদ্ধার করা যায়নি। গত ১৭০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়ে রয়েছেন তাঁরা। গত শনিবার থেকে উদ্ধারকার্য চালানো হলেও, এখনও কাউকেই বের করে আনা যায়নি। আটকে পড়া শ্রমিকদের স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। (Uttarakhand Tunnel Collapse)

রবিবার সকালে ড্রিল মেশিন দিয়ে পাহাড়ের উপর দিয়ে উল্লম্ব গর্ত খোঁড়ার কাজ শুরু হয়েছে। এর পাশাপাশি, বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (BRO) সিল্কিয়ারা সুড়ঙ্গের মধ্যে দিয়ে নতুন রাস্তা এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। সব ঠিকঠাক চললে, ওই রাস্তা ধরে এগোলে আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে পৌঁছতে পারবেন উদ্ধারকারীরা। এই আবহে প্রমাদ গুনছেন উদ্ধারকারীরা। (Uttarkashi Tunnel Crash)

এর আগে, শুক্রবার আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন সুড়ঙ্গ নির্মাণ বিশেষজ্ঞ, প্রফেসর আর্নল্ড ডিক্সের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি ভারতের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন বলে জানা দিয়েছে। কী করে নিরাপদে সকলকে বের করে আনা যায়, তার জন্য রুট পৃথক রুট তৈরি থেকে, বিভিন্ন দিক থেকে গর্ত খুঁড়ে বন্দি শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর নকশা সাজানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দফতর এবং বিশেষজ্ঞদের একটি দলও ঘটনাস্থলে রয়েছে। উদ্ধারকার্য তদারকি করছে তারা।

উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন, ড্রিল মেশিন দিয়ে পাহাড়ের উপর দিয়ে গর্ত খুঁড়ে বন্দি শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা চলছে। কিন্তু শুধু একটি পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে চাইছেন না বিশেষজ্ঞরা। তাই উদ্ধারকার্য নিয়ে মোট পাঁচটি পরিকল্পনা রয়েছে। একসঙ্গে সবক’টিই ঝালিয়ে নেওয়া হচ্ছে। যে পরিকল্পনা যত দ্রুত কার্যকর করা যায়, ততই মঙ্গল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার রাতেও ড্রিল মেশিন দিয়ে গর্ত খোঁড়ার চেষ্টা চলছিল। কিন্তু সুড়ঙ্গে বড় ধরনের ফাটল ধরার শব্দে বন্ধ করে দেওয়া হয় ড্রিল মেশিন।

কিন্তু এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার তো বটেই, নির্মাণকারী সংস্থার ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। যে ৪১ জন শ্রমিক ধ্বংসস্তূপে আটকে রয়েছেন, তাঁদের সহকর্মীরা ইতিমধ্যেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন। নির্মাণকারী সংস্থাকে কাঠগড়ায় তুলেছেন তাঁরা। উদ্ধারকার্যেও এত সময় লাগা নিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন। স্টিলের নলের সাহায্য়ে বন্দি শ্রমিকদের খাবার, পানীয় সরবরাহ করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি। কিন্তু কতক্ষণ এভাবে ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকবেন শ্রমিকরা, উঠছে প্রশ্ন।

উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।  ব্রহ্মকাল-যমুনোত্রী জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে সিল্কিয়ারা এবং ডন্ডালগাঁওকে সংযুক্ত করতে সুড়ঙ্গ নির্মাণের কাজ চলছিল সেখানে। সেই কাজ চলাকালীন, গত সপ্তাহের শনিবার ভোরে ওই নির্মীয়মান সুড়ঙ্গটি ভেঙে পড়ে।  নির্মীয়মান সুড়ঙ্গটির ১৫০ মিটার অংশ ভেঙে পড়েছে বলে জানা যায়। সেই সময় সুড়ঙ্গের ভিতর কাজ করছিলেন ওই ৪১ জন শ্রমিক। ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়েন তাঁরা। সেই থেকে আটকেই রয়েছেন। তবে উদ্ধারকার্য সম্পন্ন করতে এখনও চার-পাঁচদিন সময় লাগতে পারে বলে অনুমান করছেন বিশেষজ্ঞরা।

কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকরী ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। উত্তরখাণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামিও রয়েছেন ঘটনাস্থলে। পুষ্কর বলেন, “সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উদ্ধারকার্য চালাতে কোনও ত্রুটি রাখছি না আমরা। বিশেষজ্ঞদেরও আনা হয়েছে ঘটনাস্থলে।” কেন্দ্রীয় সরকারের তরফেও বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করা হয়।s.

(Feed Source: abplive.com)