আলোয় চোখ ধাঁধানো আটকানো থেকে ফ্যাশনের শেষ কথা, কোন পথে বিবর্তন সানগ্লাসের?

আলোয় চোখ ধাঁধানো আটকানো থেকে ফ্যাশনের শেষ কথা, কোন পথে বিবর্তন সানগ্লাসের?
কলকাতা: জমকালো পোশাক, মানানসই মেক-আপ, সঙ্গে হিল জুতো! তার পরও যেন কিছু একটা ‘মিসিং’? ‘সানগ্লাস’ (sunglass invention history) ছাড়া আজকের ‘লুক’ কিছুতেই সম্পূর্ণ নয়। কিন্তু আজ যে রোদচশমা (sunglass craze) নিয়ে এত মাতামাতি, তার চল শুরু কবে? প্রথম থেকেই তার এত বাহার? ‘সানগ্লাসের’ ইতিহাস একবার ঢুঁ মেরে দেখা যাক?

রোদ, চশমা ও মানুষ…
আজ যে সানগ্লাস ছাড়া আমরা অনেকে বাইরে বেরোনোর কথা ভাবতে পারি না, তার চল শুরু হয়েছিল নিতান্ত প্রয়োজনেই। Inuit অর্থাৎ কানাডার উত্তরাংশ, গ্রিনল্যান্ড এবং আলাস্কার একাংশের বাসিন্দারা, সেই প্রাগৈহাসিক সময় থেকে এক ধরনের রোদচশমা ব্যবহার করতেন। তবে সেগুলির সঙ্গে আজকের সানগ্লাসের সে অর্থে কোনও মিল নেই। যদিও উদ্দেশ্য় অনেকাংশে একই ছিল, ধারণা ইতিহাসবিদদের। আসলে চিরতুষারের দেশে শিকারের সময় চোখ যাতে ধাঁধিয়ে না যায়, সে জন্য চোখের উপর সিন্ধুঘোটকের দুটি দাঁত একসঙ্গে পরে নিতেন তখনকার মানুষ। মাঝখানে শুধু সামান্য ফাঁকা জায়গা থাকত, যাতে অল্প আলো ঢোকে। কল্পনা করলেই বোঝা যাবে, সে যুগের ওই রোদচশমার সঙ্গে আজকের বাহারি সানগ্লাসের কোনও মিলই ছিল না।
তবে যুগে যুগে মানুষের এগিয়ে চলার সঙ্গে বিবর্তন হয়েছে সানগ্লাসেরও। কী রকম?

বদলে যাওয়া…
শোনা যায়, রোমের সম্রাট পান্না দিয়ে তৈরি চশমা পরে গ্ল্যাডিয়েটরদের লড়াই দেখতেন। তবে ইতিহাসবিদদের অনেকে এই তথ্য সত্যি বলে মনে করেন না। ফলে সানগ্লাস-বিবর্তনের ইতিহাসে এর পরের পর্ব হিসেবে অন্যতম দাবিদার হিসেবে উঠে আসে দ্বাদশ শতকের কথা। রোদচশমার ‘Inuit-মডেল’-র নতুন সংস্করণ আনেন চিনের বাসিন্দারা। লেন্স হিসেবে ‘স্মোকি কোয়ার্টজ’ ব্যবহার করেন তাঁরা। তবে রোদ থেকে বাঁচা নয়, তাঁদের মূল উদ্দেশ্য ছিল মুখের অভিব্যক্তি আড়াল করা। এর পর নতুন মোড় আসে ১৭০০ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি। লন্ডনের একটি অপ্টিশিয়ান চোখের কিছু সমস্যার সমাধান খুঁজতে সবুজ কাচ নিয়ে নিজের মতো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখছিলেন। তার পর থেকে, বেশ অনেকটা সময়, চোখকে সূর্যের আলো থেকে বাঁচানোর ক্ষেত্রে সবুজ কাচের উপরই ভরসা রাখতেন সাধারণ মানুষ।
তবে আধুনিক সানগ্লাস বলতে আমরা যা বুঝি, তা তৈরি হয় বিংশ শতকে। ১৯২৯ সালে, স্যাম ফস্টার প্রথম গণহারে তৈরি ‘শেডস’ বিক্রি করা শুরু করেন। দ্রুত ওই সানগ্লাস ফ্যাশনের অংশ হয়ে ওঠে। কয়েক বছর পরে Bausch & Lomb একই ব্যবসা শুরু করে। মার্কিন সেনাবাহিনীর বিমানচালকদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি ওই সানগ্লাস বিপুল জনপ্রিয় হয়। হলিউড ছবির নায়ককে সেই রোদচশমা পরতে দেখে রাতারাতি তার জনপ্রিয়তা তুঙ্গে ওঠে। তার পর থেকে সেই ডিজাইনে খুবই কম বদল এসেছে। তবে সানগ্নাসের নিত্যনতুন ডিজাইন তৈরি হওয়া বন্ধ হয়নি। ১৯৩০-র দশকে পোলারাইজড লেন্স এলে কার্যত বৈপ্লবিক বদল আসে রোদচশমার জগতে। ফ্যাশনের পাশপাশি ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চোখ বাঁচানোর পথও খুলে যায় সাধারণ মানুষের সামনে। সব মিলিয়ে দুরন্ত ‘প্যাকেজ।’

(Feed Source: abplive.com)