প্রথম বার ঘরের মাঠে World Cup Qualifier-এ হারল ব্রাজিল, মারাকানা জয় আর্জেন্তিনার

প্রথম বার ঘরের মাঠে World Cup Qualifier-এ হারল ব্রাজিল, মারাকানা জয় আর্জেন্তিনার

দুই বছর আগে শেষ বার ব্রাজিলে খেলতে গিয়েও ঝামেলার মুখে পড়তে হয়েছিল আর্জেন্তিনাকে। সে বার সাও পাওলোতে ম্যাচটি ছিল। নির্ধারিত সময়েই শুরু হয়েছিল ম্যাচ। তবে ম্যাচ শুরুর কয়েক মিনিট পর ব্রাজিলের জাতীয় স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ এজেন্সির কর্মকর্তারা মাঠে ঢুকে খেলা পণ্ড করে দিয়েছিলেন। আর্জেন্তিনার চার খেলোয়াড়ের বিপক্ষে কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম ভাঙার অভিযোগ উঠেছিল। যে কারণে ম্যাচটি তাঁরা হতে দেননি।

বুধবার, ২২ নভেম্বর রিও ডি জেনিরোর মারাকানা স্টেডিয়ামে ব্রাজিল-আর্জেন্তিনা ম্যাচ ঘিরে ফের ধুন্ধুমার কাণ্ড। বিশ্বকাপের কোয়ালিফায়ার ম্যাচটি ভেস্তে যেতে বসেছিল প্রায়। তবে পরিস্থিতি সামলে আধ ঘণ্টা বাদে ম্যাচটি শুরু হয়। এবং সেই ম্যাচে ব্রাজিলকে ১-০ হারায় আর্জেন্তিনা।

আসলে ম্যাচ শুরুর কয়েক মিনিট আগে গ্যালারিতে ব্রাজিল-আর্জেন্তিনা সমর্থকদের মধ্যে ঝামেলা শুরু হয়। যার জেরে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। আর্জেন্তিনার সমর্থকদের উপর লাঠিচার্জের ঘটনার প্রতিবাদে দল নিয়ে মাঠ ছেড়ে উঠে যান লিওনেল মেসি। দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত শুরু হওয়ার সময়ে ঝামেলার সূত্রপাত। যাইহোক পরিস্থিতি সামাল দিয়ে আধ ঘণ্টা পরে ম্যাচ শুরু হলে, ব্রাজিলকে হারিয়ে আর্জেন্তাইন সমর্থকদের উপর লাঠিচার্জের ঘটনার বদলা নেন মেসিরা। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হয়ে একমাত্র গোলটি করেছেন নিকোলাস ওটামেন্ডি।

গ্যালারির ঝামেলার প্রভাব পড়ে মাঠের খেলাতেও। শুরু থেকেই উত্তপ্ত পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। দুই দলের প্লেয়াররা বারবার ঝামেলায় জড়াতে থাকেন। এদিন ম্যাচে ফাউল এবং কার্ডের ছড়াছড়ি। তবে ফাউল করার ক্ষেত্রে এবং কার্ড দেখায় এগিয়ে ছিল ব্রাজিলই। তবে এদিন আর্জেন্তিনার চেয়ে ভালো ফুটবল খেলেছে সেলেকাওরা। ছোট ছোট পাসে আক্রমণ তৈরি করা, নান্দনিক কিছু ড্রিবলিং, মাঝ মাঠ এবং অ্যাটাকিং থার্ডেও আর্জেন্তিনার উপর চাপ তৈরি- সবই ছিল, শুধু তারা গোলের মুখ খুলতে পারেনি। বরং আর্জেন্তিনার খেলায় ছিল না পরিকল্পনার কোনও ছাপ।

এদিন ম্যাচ শুরুর দু’ মিনিটের মাথায় একক প্রচেষ্টায় প্রায় গোল করে ফেলেছিলেন রাফিনিয়া। কিন্তু দুর্ভাগ্য, অফসাইড ছিলেন তিনি। ম্যাচের ৬ মিনিটের মাথায় ফিরতি বল ধরে জেসুস গোলের চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সেই আক্রমণের তীব্রতা বেশি থাকায় উল্টে তিনি ফাউল করে বসেন। যার জেরে হলুদকার্ড দেখতে হয়। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই দলের মধ্যে উত্তাপ ছড়ায়। এর মধ্যেও অবশ্য ব্রাজিল চেষ্টা করে গিয়েছে গোলের জন্য। তবে ১৩ মিনিটে দি পলকে ফাউল করে হলুদ কার্ড দেখেন রাফিনিয়া। প্রথম ১৮ মিনিটে এদিন ব্রাজিল ফাউল করে বসে ৮টি। প্রথমার্ধে সব মিলিয়ে ২২টি ফাউল করেছে দুই দল। যেখানে ব্রাজিলের ১৬টি ফাউলের বিপরীতে আর্জেন্তিনার ফাউল ছিল ৬টি। বিরতির আগে তিনটি হলুদকার্ড দেখে ব্রাজিল।

ম্যাচের ২৬ মিনিটে গিয়ে প্রথম বার বল পায়ে আক্রমণে দেখা যায় মেসিকে। যদিও সেই আক্রমণে গোলের কোনও সম্ভাবনা তৈরি করতে পারেননি ইন্টার মায়ামি তারকা। প্রথমার্ধে ব্রাজিলের দাপটই ছিল অনেক বেশি। যদিও কোনও দলই গোলের মুখ খুলতে পারেনি। বিরতির আগে খেলা শেষ হয় গোলশূন্য অবস্থায়।

দ্বিতীয়ার্ধেও আর্জেন্তিনার চেয়ে দাপটে বেশি ছিল ব্রাজিলের। একাধিক বার আক্রমণে গিয়ে সুযোগ তৈরিরও চেষ্টা করেছিল তারা। তবে আসল কাজটা করে গিয়েছেন ওটামেন্ডি। ম্যাচের ৬৩ মিনিটে এগিয়ে যায় আর্জেন্তিনা। লো সেলসোর কর্নারে হেডে দুরন্ত গোল করেন ওটামেন্ডি। তবে মেসি এদিন একেবারেই নিষ্প্রভ ছিলেন। ৭৮ মিনিটে তাঁকে তুলেও নেওয়া হয়। এদিকে ৮১ মিনিটে ব্রাজিলের বিপদ আরও বাড়ে জোয়েলিনটন লালকার্ড দেখায়। ১০ জনের ব্রাজিল আর চেষ্টা করেও ম্যাচে ফিরতে পারেনি। কোয়ালিফায়ারে টানা তৃতীয় ম্যাচে হেরে মাঠ ছাড়ল ব্রাজিল।

এদিকে বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়ারে ছ’টির মধ্যে পাঁচটি জয় নিয়ে শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে আর্জেন্তিনা। আর মাত্র দু’টি ম্যাচ জিতে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে ব্রাজিল। ২০০১ সালের পর প্রথম বারের মতো টানা তিনটি ম্যাচে হারল সেলেকাওরা। পাশাপাশি কোয়ালিফায়ারে প্রথম বার ঘরের মাঠে হারল ব্রাজিল।

(Feed Source: hindustantimes.com)