১৭ দিনের বন্দিদশা ঘুচল, উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গ থেকে বেরোলেন ৪১ জন শ্রমিক, মানুষের হাতেই সাফল্য

১৭ দিনের বন্দিদশা ঘুচল, উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গ থেকে বেরোলেন ৪১ জন শ্রমিক, মানুষের হাতেই সাফল্য
দেহরাদূণ: যন্ত্র নয় মানুষের দ্বারাই কার্যোদ্ধার শেষ পর্যন্ত। ১৭ দিনে ধরে বন্দি থাকার পর, উত্তরাখণ্ডের সুড়ঙ্গ থেকে প্রথমে বেরিয়ে আসেন দুই জন শ্রমিক (Uttarakhand Tunnel Rescue)। তার পর বাকিদের বের করে আনা হয় একে একে। ধ্বংসস্তূপ টপকে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছতে তিন মিটার বাকি ছিল যখন, সেই সময়ই সুড়ঙ্গের মধ্যে অ্যাডভান্স লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুল্যান্স, স্ট্রেচার এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার এক এক করে প্রবেশ করে। শ্রমিকদের দেখতে পৌঁছয় চিকিৎসকদের একটি দলও। আগে থেকেই গ্রিন করিডর করে রাখা হয়েছিল। শ্রমিকদের সুড়ঙ্গ থেকে বের করে, সেই পথ ধরেই হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেবে অ্যাম্বুল্যান্স। (Uttarakhand Tunnel Collapse)

গত ১২ নভেম্বর ভোররাতে নির্মাণকার্য চলাকালীন উত্তরকাশীর ওই সিল্কয়ারা সুড়ঙ্গটি ভেঙে পড়ে। সেই থেকে ভিতরে আটকে ছিলেন ৪১ জন শ্রমিক। বিদেশ থেকে আনা ড্রিল মেশিন, উদ্ধারকারী দল এনে শুরু হয় উদ্ধারকার্য। পাহাড়ের উপর থেকে গর্ত খুঁড়েও পৌঁছনোর চেষ্টা হয় শ্রমিকদের কাছে। শেষ মেশ সাফল্য এল ‘ব়্যাট-হোল মাইনিং’ বিশেষজ্ঞদের হাত ধরে। ধ্বংস্তূপ খুঁড়ে, উদ্ধারকার্যের ১৭তম দিনে শ্রমিকদের বের করে আনার কাজে সাফল্য এল।

‘ব়্যাট-হোল মাইনিং’ পদ্ধতি উদ্ধারকার্য চালানোর বিশেষ একটি পদ্ধতি। এর মাধ্যমে গন্তব্যে পৌঁছতে একেবারে সঙ্কীর্ণ গর্ত খোঁড়া হয়।  সাধারণত কয়লা খনিতে এই পদ্ধতিতে খননকার্য চলে। সরু গর্ত খুঁড়ে তার মধ্যে প্রবেশ করে, দড়িতে বেঁধে কয়লা উপরে পাঠাতে থাকেন শ্রমিকরা। উত্তরাখণ্ডে শ্রমিকদের উদ্ধার করতেও ওই পদ্ধতিই অবলম্বন করা হয়।

কয়লা খনিতে এই ‘ব়্যাট-হোল মাইনিং’ পদ্ধতিতে কয়লা উত্তোলন করা নিয়ে ঢের বিতর্ক রয়েছে। কিন্তু উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে, ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে থাকা শ্রমিকদের উদ্ধার করতে, এছাড়া উপায় ছিল না। সরু গর্ত খুঁড়ে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছন উদ্ধারকারীরা। এই কাজের জন্য ২৪ জন অভিজ্ঞ ‘ব়্যাট-হোল মাইনিং’ বিশেষজ্ঞকে আনা হয়।

এর আগে, দফায় দফায় দেশীয় এবং বিদেশ থেকে আনা ড্রিল মেশিন দিয়ে উদ্ধারকার্য চালানোর চেষ্টা হয়। কিন্তু প্রতিবারই বাধাপ্রাপ্ত হয় উদ্ধারকার্য। বার বার যান্ত্রিক গোলযোগ দেখা যায়। কখনও ধাতব কাঠামোয় লেগে মাটির মধ্যে গেঁথে যায় ড্রিল মেশিনের ব্লেড। তাতেই শেষ পর্যন্ত হাত দিয়ে উদ্ধারকার্য চালানোর পরিকল্পনা গৃহীত হয়। সেই মতো সোমবার থেকে ‘ব়্যাট-হোল মাইনিং’ পদ্ধতিতে মাটি খোঁড়ার কাজ শুরু হয়। তাতেই সাফল্য মিলল শেষ পর্যন্ত।

(Feed Source: abplive.com)