সৌমিতা মুখার্জি: ১৯৮৭, ১৯৯৯, ২০০৩, ২০০৭, ২০১৫-র পর ২০২৩। ষষ্ঠবারের জন্য় বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় অস্ট্রেলিয়া। ২০ বছর আগের বদলা নিতে পারেনি ভারত। ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ভারত খেলেছিল রিকি পন্টিংয়ের অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। সেবার ফাইনালে ভারত হেরেছিল ১২৫ রানে। রোহিতদের সামনে সুযোগ ছিল মধুর প্রতিশোধ নেওয়ার। তবে বদলায়নি ইতিহাস। আহমেদাবাদে অধরাই থাকে ‘বদলাপুর’। স্বপ্নভঙ্গ, আবার বছর ২০ পর। ফাইনালে ভারত হেরে যায় ছয় উইকেটে। বিশ্বসেরা হয় সেই অস্ট্রেলিয়া। প্রায় এক লক্ষ দর্শকের প্রবল শব্দব্রহ্ম মিলিয়ে গিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে! এই ঘটনা গত ১৯ নভেম্বরের। কাট টু ৬ ডিসেম্বর। এবার আর ভারত-অজি প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়। একেবারে ভিন্ন চিত্রনাট্য, হাতে-হাত মিলিয়ে চলার গল্প লেখা শুরু হল। সৌজন্য়ে ২৯ তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (29th Kolkata International Film Festival, KIFF 2023)।
(ছবিতে বাঁ-দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে ব্রুস বেরেসফোর্ড)
বুধবার অর্থাৎ আজ নন্দন সাক্ষী থাকল ঐতিহাসিক দিনের। ভারতীয় সিনেমা এবং অস্ট্রেলীয় সিনেমার মধ্য়ে স্বাক্ষরিত হল ইন্ডিয়া-অস্ট্রেলিয়া কো-প্রোডাকশন এগ্রিমেন্ট। আর এই ব্রহ্মমুহূর্তে হাজির ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অস্কারজয়ী পরিচালক ব্রুস বেরেসফোর্ড। ৮৩ বছরের প্য়াডিংটনের বাসিন্দার ৫০ বছরের বর্ণময় কেরিয়ার। সিনেমার কথার ফাঁকেই তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে, ক্রিকেট মাঠে ভারত-অস্ট্রেলিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে তিনি কী বলবেন? ‘ড্রাইভিং মিস ডেইজি’, ‘টেন্ডার মার্সিজ’, ‘ব্রেকার মোরান্ট’-এর মতো ছবির নির্মাতা হেসে বলে ওঠেন, ‘এ তো চলতেই থাকবে’। সিনেমার মতোই বেরেসফোর্ড অন্যতম পছন্দের বিষয় ক্রিকেট। এমনকী তিনি জানালেন তাঁর দেখা সেরা ভারতীয় ছবি হচ্ছে ‘লগান’। কারণ ছবিটি তৈরি হয়েছে ক্রিকেটকে কেন্দ্র করেই। বেরেসফোর্ড মনে করেন যে ‘লগান’-এর অস্কার জেতা উচিত ছিল। তিনি বলেন,’দেখুন ক্রিকেট নিয়ে বানানো সেরা ছবি- লগান। লগানের গল্প খুব ভালো। একদিকে ব্রিটিশ রাজ, অন্যদিকে ভারতের প্রথম ক্রিকেট খেলা। খুব সুন্দর করে বানানো হয়েছে। অস্কার জেতা উচিত ছিল’।
তবে শুধুমাত্র হিন্দি ছবিই নয়, তাঁর কথায় উঠে এল কিংবদন্তি সত্যজিৎ রায়ের কথাও। তাঁর মতে সত্যজিতের সেরা ছবি ‘পথের পাঁচালী’। পরিচালক এই প্রসঙ্গে বলেন,’সত্যজিত রায় অন্যতম সেরা পরিচালক। ওঁর ছবি থেকে আমরা ভারতীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে জেনেছি। হলিউড স্টাইলে তৈরি ভারতীয় ছবি আমি দেখতে চাই না। আমি এমন ছবি দেখতে চাই যেখানে ভারতের কথা বলা হবে।’ বেরেসফোর্ড এদিন জানিয়েছেন যে, ভালো চিত্রনাট্য পেলে ভারতীয় অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করতে চান তিনি। তাঁর সংযোজন, ‘আমি বানাতে চাই। ওঁরা খুবই সুন্দর। ভালো চিত্রনাট্যের অপেক্ষায় রয়েছি’। এখন দেখার ভারত-অস্ট্রেলিয়ার সিনেমার যাত্রা কোন ইতিহাস লেখে।
(Feed Source: zeenews.com)