ভারতীয় সেনার ত্রিশক্তি কর্পস বাহিনীর (Indian Army’s Trishakti Corps) তরফে বুধবার সারাদিন ধরে পূর্ব সিকিমের বিভিন্ন এলাকায় উদ্ধারকাজ চালিয়ে হাজারের বেশি পর্যটককে উদ্ধার করা হয়েছে। পর্যটকদের উদ্ধার করে সেনার ছাউনিতে আশ্রয়ের পাশাপাশি গরম খাবার, পোশাক থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দেওয়া হয়। তারপর ধাপে ধাপে তাঁদের পৌঁছে দেওয়া হয় নিরাপদ আশ্রয়ে।
সেনার তরফে জানানো হয়েছে, ভারী তুষারপাতের জেরে সমগো লেক এলাকায় প্রায় ৪০০ গাড়ি আটকে পড়েছিল। যেখানে বেশিরভাগ গাড়িতেই ছিলেন পর্যটকরা। যেখান থেকে ধাপে ধাপে হাজারের বেশি পর্যটককে উদ্ধার করে ভারতীয় সেনার। আগামীকালের মধ্যে আটকে পড়া সমস্ত পর্যটককে উদ্ধার করা সম্ভব হবে বলেই প্রত্যশা ভারতীয় সেনার।
গত ৪ অক্টোবর ভোরে মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে ফেটে যায় নর্থ সিকিমের লোনক হ্রদ। নেমে আসে বিপর্যয়ের স্রোত। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় উত্তর সিকিমের সিংথাম। তিস্তা এখানে ভয়াল চেহারা নেয়। সিংথামের ইস্ট পয়েন্ট হাইস্কুলের নিচের তলার পুরোটা কাদায় ডুবে যায়। সেবক-রংপো রেললাইন তৈরির কাজে ব্যবহৃত পে লোডার, ক্রেন সব কিছু খেলনা গাড়ির মতো এদিক-ওদিক ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, বিপর্যয়ের আগের দিন গভীর রাত থেকে উত্তর সিকিমের দক্ষিণ লোনক লেকের ওপর শুরু হয়েছিল মেঘভাঙা বৃষ্টি। জলের চাপ বাড়তে বাড়তে ভোরের দিকে ফেটে যায় লেক। যার জেরে হুড়মুড়িয়ে নেমে আসে জল। ভেঙে যায় চুংথাম ড্যাম। উত্তর সিকিমের ঘুম ভাঙার আগেই হড়পা বান নেমে আসে তিস্তায়।
ভোরের অন্ধকারে নেমে আসে ১৫ থেকে ২০ ফুট উঁচু জলের স্রোত। ভাসিয়ে নিয়ে যায় রাস্তা, ঘর, বাড়ি, গাড়ি— সব কিছু। উত্তর সিকিমের সিংতামের কাছে বরদাংয়ের সেনাছাউনিতে কাদাজলের নীচে চাপা পড়ে যায় সেনাবাহিনীর ৪১ টি গাড়ি। ডুবে যায় সেনা ছাউনি। ভেসে যান জওয়ানরা। মৃত্যু হয় অনেকের। যে বিপর্যয় প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, তিস্তার গতিপথ রুদ্ধ করে তৈরি হওয়া একাধিক বাঁধ এবং দুই পাড়ের বেআইনি নির্মাণই দায়ী।
(Feed Source: abplive.com)