ভার্টিগো থেকে সাবধান, কাজের চাপে ঘুমানোর সময় পাচ্ছেন না?

ভার্টিগো থেকে সাবধান, কাজের চাপে ঘুমানোর সময় পাচ্ছেন না?

ভার্টিগো থাকলে হঠাৎই আপনারা মনে হতে পারে মাথাটা ঘুরে উঠল বা আপনার চারপাশের পরিবেশ ঘুরছে। হ্যাঁ, এমনই বিশ্রী অনুভূতি হতে থাকে। এটি আক্রান্ত ব্যক্তির ভারসাম্যকে ব্যাহত করতে পারে এবং একটি বিভ্রান্তিকর অনুভূতি সৃষ্টি করে। ভার্টিগো বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যার যার মধ্যে কানের অভ্যন্তরীণ সমস্যা, সংক্রমণ হতে পারে। তবে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ভার্টিগো খুবই সাধারণ, সারা বিশ্বে প্রতি ১০ জনের মধ্যে ১ জন তাদের জীবদ্দশায় এটি অনুভব করে থাকেন। ইএনটি সার্জন ড: বিকাশ আগরওয়াল এইচটি লাইফস্টাইলের সাথে একটি সাক্ষাৎকারে ভার্টিগো সম্পর্কে সবিস্তারে জানিয়েছেন। ড: আগরওয়াল বলেছেন, যখন ঘুম ব্যাহত হয় বা অপর্যাপ্ত হয়, তখন শরীর ঠিক ভাবে বিশ্রাম পায় না। এর ফলে ভার্টিগো হতে পারে। ঘুম এবং ভার্টিগো কী ভাবে একে অপরের সাথে সংযুক্ত? এটি জানার জন্য আমাদের ভেস্টিবুলার সিস্টেম সম্পর্কে জনাতে হবে। এই সিস্টেমটি আমাদের কানের মধ্যে অবস্থিত। এটি আমাদের শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কোনও ঘটনা বা পরিস্থিতিতে অভ্যস্থ হতে সাহায্য করে।

ভেস্টিবুলার সিস্টেম এবং ঘুম: ভেস্টিবুলার সিস্টেম হল অভ্যন্তরীণ কানের কাঠামোর একটি জটিল নেটওয়ার্ক, যা আমাদের ভারসাম্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটির সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম কোষগুলি আমাদের নড়াচড়া সনাক্ত করে। আমাদের দাঁড়ানো, হাঁটা এবং স্থিতিশীল ভঙ্গি বজায় রাখার ক্ষমতার জন্য ভেস্টিবুলার সিস্টেমের সঠিক ভাবে কাজ করা অপরিহার্য। এই সূক্ষ্ম কাঠামোর রক্ষণাবেক্ষণ এবং মেরামতের জন্য ঘুম খুবই জরুরি। সম্প্রতি জার্নাল অফ ভেস্টিবুলার রিসার্চে প্রকাশিত একটি গবেষণায় পাওয়া গেছে, যাদের ঘুম কম হয় তাদের মাথার ভার্টিগোর কার্যকারিতা কমতে থাকে।

ঘুম এবং ভেস্টিবুলার সিস্টেম রক্ষণাবেক্ষণ: আমরা যখন ঘুমিয়ে থাকি তখন আমাদের শরীর প্রয়োজনীয় মেরামত এবং পুনর্জন্ম প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। এর মধ্যে ভেস্টিবুলার সিস্টেমের রক্ষণাবেক্ষণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ভেস্টিবুলার সিস্টেমের কার্যকারিতা সঠিক ভাবে বজায় রাখতে এর মধ্যে উপস্থিত তরলের সামঞ্জস্যে এবং আমাদের গতিবিধি সনাক্তকারী ক্ষুদ্র কোষগুলিকে অবশ্যই ভাল অবস্থায় থাকতে হবে। অপর্যাপ্ত ঘুম এই প্রক্রিয়াগুলিকে ব্যাহত করতে পারে, যা ভেস্টিবুলার সিস্টেমকে অকেজো করে দেয় এবং ভার্টিগোর ঝুঁকি বাড়ায়।

ঘুম-সম্পর্কিত ব্যাধি: শরীর সুস্থ রাখতে ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে বহু শারীরিক সমস্যা দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, স্লিপ অ্যাপনিয়া, এক্ষেত্রে ঘুমের সময় শ্বাস-প্রশ্বাস বারবার বন্ধ হয়ে যায় এবং পুনরায় শুরু হয়। এর ফলে আপনারা শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যেতে পারে এবং কানে রক্ত প্রবাহের পরিবর্তন হতে পারে, যা ভার্টিগো শুরু করতে পারে বা বিদ্যমান ভার্টিগো রোগকে আরও খারাপ পর্যায়ের নিয়ে যেতে পারে।

স্ট্রেস এবং ঘুম: স্ট্রেট ভার্টিগোর ক্ষেত্রে একটি অন্যতম কারণ হতে পারে। স্ট্রেসের কারণে সাধারণত ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। তাছাড়াও দীর্ঘস্থায়ী স্ট্রেস পেশিতে টান এবং উদ্বেগ বাড়াতে পারে, যা ভেস্টিবুলার সমস্যা এবং ভার্টিগোতে অবদান রাখতে পারে। সঠিক মাত্রায় ঘুম স্ট্রেস হরমোন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, যা শরীরের সামগ্রিক চাপের বোঝা কমায়।

ওষুধ: ভার্টিগো বা এই ধরণের রোগের জন্যে নির্ধারিত কিছু ওষুধ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসাবে ঘুমের মাত্রার ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। ভার্টিগোর উপসর্গ নিয়ন্ত্রণের কিছু ওষুধও অনিদ্রার সৃষ্টি করে। ডক্টর বিকাশ আগরওয়াল পরিশেষে বলেছেন, ভালো ঘুম একটি স্বাস্থ্যকর ভেস্টিবুলার সিস্টেমের রক্ষণাবেক্ষণে সহায়তা করে, চাপ কমায় এবং সামগ্রিক সুস্থতা বাড়ায়। নিয়মিত ও স্বাস্থ্যকর ঘুমই ভার্টিগোর ঝুঁকি কমাতে পারে।

(Feed Source: hindustantimes.com)