হামাসের সঙ্গে যুদ্ধের নামে ইজরায়েল গাজায় প্যালেস্তিনীয় নাগরিকদের কচুকাটা করছে বলে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে মামলা দায়ের করে দক্ষিণ আফ্রিকা। অবিলম্বে প্যালেস্তাইন থেকে ইজরায়েলকে সেনা তুলে নিতে হবে বলে দাবি জানিয়েছে তারা। ইজরায়েল গণহত্যার অভিযোগ যদিও অস্বীকার করেছে, কিন্তু যে হারে প্রতিদিন মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, তাতে তাদের বিরুদ্ধে এই মামলার যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। (Israel Hamas War)
৮৪ পাতার লিখিত আবেদনে আন্তর্জাতিক আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকা জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর হামাসের তরফে আক্রমণ নেমে আসার পর থেকে প্যালেস্তিনীয়দের নির্বিচারে হত্যা করে চলেছে ইজরায়েল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইহুদি গণহত্যার পর তৈরি হওয়া ১৯৪৮ সালের আন্তর্জাতিক গণহত্যা আইন লঙ্ঘন করেছে তারা। রাষ্ট্রপুঞ্জের গণহত্যা প্রতিরোধ বিভাগের সদস্য ইজরায়েল এবং দক্ষিণ আফ্রিকা, তাই এই সংক্রান্ত মামলায় পৌরহিত্যের অধিকার রয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের সর্বোচ্চ আইন বিভাগ, আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের। কারণ ওই গণহত্যা প্রতিরোধ চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলি এই ধরনের অপরাধে লিপ্ত হলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।
ইচ্ছাকৃত ভাবে কোনও দেশ, জাতি বা বিশেষ ধর্মের মানুষের অস্তিত্ব মুছে দেওয়াকে গণহত্যা বলে ধরা হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার দাবি, ইজরায়েল সেই উদ্দেশ্য নিয়েই গাজাকে ধ্বংস করে দিতে উদ্যত হয়েছে। গাজায় মুহুর্মুহু বোমাবর্ষণ, নিরীহ নাগরিকদেরও কচুকাটা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ইজরায়েল সরকার যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কিন্তু যে হারে প্যালেস্তিনীয় নিহতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, তাতে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে ইজরায়েলকে। গত তিন মাসে শুধুমাত্র গাজাতেই ২৩ হাজার ৩৫৭ প্যালেস্তিনীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে ৯ হাজার ৬০০ শিশুও রয়েছে। এখনও নিখোঁজ ৮ হাজার প্যালেস্তিনীয়। এক বা দুই পা এবং হাত হারিয়েছে, এমন শিশুর সংখ্যা ১০০০-এর বেশি। ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে প্রায় ৩৫০ প্যালেস্তিনীয়ের মৃত্যুর খবর সামনে এসেছে। জেরুসালেমে মৃতের সংখ্যা কয়েক হাজার বলে দাবি উঠে এসেছে।
আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতে দক্ষিণ আফ্রিকার দায়ের করা ওই মামলার সমর্থনে এগিয়ে এসেছে Organisatin of Islamic Countries (OIC)-র অন্তর্ভুক্ত সৌদি আরব, ইরান, পাকিস্তান এবং মরক্কোর মতো দেশ।মালয়েশিয়া, তুরস্ক, জর্ডান, বলিভিয়া, মলদ্বীপ, নমিবিয়ার মতো দেশও মামলাটিকে স্বাগত জানিয়েছে। বলিভিয়ার তরফে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (International Criminal Court /ICC)-এও আলাদা করে এ নিয়ে আবেদন জানানো হয়। আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের মতো, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতও নেদারল্যান্ডসের হেগ-এ অবস্থিত। তবে আমেরিকার দাবি, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। যে মানবিক সাহায্য জোগানো হচ্ছে প্যালেস্তাইনে, তা থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা চলছে বলে দাবি করেন আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন।
(Feed Source: abplive.com)