দেশের পরিচ্ছন্নতম শহরের সম্মান আবার ইন্দোরের, তবে এবার যুগ্মভাবে জয়ী সুরাটও

দেশের পরিচ্ছন্নতম শহরের সম্মান আবার ইন্দোরের, তবে এবার যুগ্মভাবে জয়ী সুরাটও

এই নিয়ে টানা সপ্তমবার দেশের পরিচ্ছন্নতম শহরের মুকুট ধরে রাখল ইন্দোর। তবে এবার এই শহরের একার মাথায় উঠল না এই মুকুট। তার সঙ্গে সুরাটও যৌথভাবে এই প্রথম বার সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন শহরের পুরস্কার পেল।

সর্বোচ্চ সংখ্যক পয়েন্ট নিয়ে ইন্দোর র‌্যাঙ্কিংয়ে সবচেয়ে এগিয়ে ছিল প্রথম থেকেই। মজার কথা, এই বার পর্যবেক্ষকরা বৃষ্টির দিনে ইন্দোরে গিয়েছিলেন। তবুও তাঁরা শহরটিকে পরিষ্কার অবস্থায় দেখতে পান। আর সেই কারণেই এবার এই শহরের হাতে যে সম্মান উঠতে চলেছিল, তা সকলেই আন্দাজ করতে পেরেছিলেন।

দিল্লিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেশের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন শহরের জন্য ইন্দোরের নাম ডাকা হলে সকলেই আনন্দে ফেটে পড়েন। পাশাপাশি ওই শহরের কর্পোরেশন সদর দফতরে এলইডি স্ক্রিনে সম্প্রচার দেখে জনপ্রতিনিধি, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আনন্দে লাফিয়ে ওঠেন। ইন্দোরের বাসিন্দারা আরও একবার নিজেদের গর্বিত হওয়ার সুযোগ পেলেন।

এবারের থিম ছিল সম্পদের অপচয় না করা। ইন্দোর এবং সুরাট ৪৪৭৭ শহরের মধ্যে ৯৫০০ পয়েন্ট নিয় সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছে।

সকাল ১১টায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মুর্মু এই উপলক্ষ্যে বলেন যে, পরিচ্ছন্নতা অভিযানকে গণআন্দোলনে পরিণত করতে সবাই সহযোগিতা করেছেন। গান্ধীজির চিন্তা ও পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব নিয়ে কাজ করাটাই আমাদের ঐতিহ্য। স্বচ্ছ ভারত মিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ে, আরও বেশি সংখ্যকজিনসের পুনর্ব্যবহার এবং রিসাইকেলের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।

তাঁর কথায়, ২০২৪ সালেও একই থিম থাকবে। সমস্ত জি-২০ দেশ শূন্য বর্জ্যের প্রচেষ্টায় সম্মত হয়েছে। ভারতেরও এক তৃতীয়াংশ মানুষ শহরে বাস করেন। অনেক শহরেই ময়লার পাহাড়। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সেই পাহাড় থেকে বহু শহর উচ্ছেদ হচ্ছে। আমাদের শূন্য বর্জ্য লক্ষ্য অর্জন করতে হবে। পরিচ্ছন্নতার জন্য জনগণের অংশগ্রহণ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের যুব সমাজেরও বিরাট দায়িত্ব। যদি তাঁরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হন, তাহলে আগামী বছরগুলিতে ভারতকে বিশ্বের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য অর্জন করা যেতে পারে।

কেন্দ্রীয় নগর ও আবাসন মন্ত্রী হরদীপ পুরি বলেন যে, আজ ভারতের সমস্ত শহর খোলা মলত্যাগের পরিবেশ থেকে মুক্ত, কারণ পরিচ্ছন্নতা মিশন একটি গণ আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। পরিচ্ছন্নতা সমীক্ষা আমাদের শহরগুলিকে পরিষ্কার করার জন্য কঠোর পদ্ধতি এবং শৃঙ্খলা প্রদান করেছে।

তিনি বলেন যে স্বচ্ছ ভারত মিশনের কারণে স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং জীবনযাত্রার মান পরিবর্তন হয়েছে। পরিচ্ছন্নতা এককালীন প্রচেষ্টা নয় বরং একটি টেকসই জীবনের উপায়। পরিচ্ছন্নতা জীবনে পরিবর্তন এনেছে।

ইন্দোর ২০২৪ সালে সৌন্দর্যায়নের উপর জোর দিয়েছে। শহরকে আরও সুন্দর করে তোলা হচ্ছে। শূন্য বর্জ্য ওয়ার্ড তৈরি করা হয়েছে। নতুন উদ্যান, স্কোয়ার এবং আর্টওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে। শহরে তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ‘রিডুস, রিসাইকেল এবং রিইউজ’।

অনেক শহরে আলাদা করে আবর্জনা সংগ্রহ করা হচ্ছে না। ইন্দোরে, ছয়টি ভিন্ন উপায়ে আবর্জনা সংগ্রহ করা হয় এবং সরাসরি ট্রেঞ্চিং গ্রাউন্ডে পৌঁছোয়। এ কারণে সহজে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। শহরের জলবায়ু পরিষ্কার করার উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। অন্যান্য শহরের তুলনায় ইন্দোরে দূষণ কমছে।

তবে ইন্দোরের সামনে কিছু চ্যালেঞ্জও আছে। সেগুলি কী কী?  নদীর দূষণ ইন্দোরের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। ৫০০ কোটি টাকা খরচ করেও কান নদীকে পুরোপুরি দূষণমুক্ত করা যায়নি। ইন্দোর এখনও শুধুমাত্র একটি ট্রেঞ্চিং গ্রাউন্ডের উপর নির্ভরশীল। সেখানে আবর্জনা পরিবহন করতে অনেক সময় লাগে। এর পাশাপাশি ভেজা বর্জ্য থেকে কম্পোস্ট তৈরির পরিমাণ কমে গিয়েছে। ব্যাকলেন ক্রমাগত পরিষ্কার রাখাও বড় চ্যালেঞ্জ। মানুষ আবার ব্যাকলেনে ময়লা ফেলতে শুরু করেছেন।

(Feed Source: hindustantimes.com)