ডিজিটাল স্টাডি মেটেরিয়াল চালু করতে হবে সব ভাষায়, নির্দেশিকা শিক্ষা মন্ত্রকের

ডিজিটাল স্টাডি মেটেরিয়াল চালু করতে হবে সব ভাষায়, নির্দেশিকা শিক্ষা মন্ত্রকের

ডিজিটাল স্টাডি মেটেরিয়াল চালু করতে হবে তাও আবার আঞ্চলিক সব ভাষায়! স্কুল-কলেজগুলিকে ইতিমধ্যে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রক। এর জন্য আবার তিন বছরের সময়সীমা নির্ধারণ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। জাতীয় শিক্ষানীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রকের একটি আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে ইউজিসি (UGC), এআইসিটিই (AICTE), এনসিইআরটি (NCERT), এনআইওএস (NIOS), ইগনু (IGNOU) এবং আইআইটি (IIT), সিইউ(CU), এনআইটির (NIT) মতো প্রতিষ্ঠানগুলিকে আগামী তিন বছরের মধ্যে সব কোর্সের জন্য ভারতীয় ভাষায় পাঠ্য উপকরণ অর্থাৎ স্টাডি মেটেরিয়ালের সরবরাহ করতে হবে। ইউজিসি (UGC), এআইসিটিই (AICTE) এবং স্কুল শিক্ষা বিভাগকেও রাজ্যের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রে এই বিষয়টি গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। অফিসিয়াল বিবৃতিতে তাদের কাছেও এই বিষয়টিকে তুলে ধরতে বলা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই উদ্যোগের ফলে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভের সুযোগ পাবে। এটি শিক্ষায় বহুভাষিকতার লক্ষ্য অর্জনে এবং শিক্ষাকে আরও অন্তর্ভুক্ত ও অভিগম্য করার প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেবে।

শিক্ষামন্ত্রক জানিয়েছে, ভারত সরকার সারা দেশে ভাষার ক্ষেত্রে যে বাধা রয়েছে, তা অতিক্রম করার লক্ষ্যে একটি নতুন নির্দেশিকা জারি করেছে। এই নির্দেশিকা অনুসারে, আগামী তিন বছরের মধ্যে সব স্কুল ও উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সমস্ত পঠ্যক্রমের জন্য ভারতীয় ভাষায় ডিজিটাল পাঠ্য উপকরণ সরবরাহ করতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রক মনে করে যে এই পদক্ষেপ ছাত্রছাত্রীদের স্থানীয় ভাষায় পড়াশোনা করতে এবং শিক্ষায় উন্নত ফলাফলের জন্য উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনাকে উৎসাহিত করবে।

ভাষার বাধা দূর করা – ভারতের একটি বৈচিত্র্যময় ভাষার ঐতিহ্য রয়েছে। প্রায় 22টি সরকারী ভাষার পাশাপাশি আরও অনেক অনানুষ্ঠানিক ভাষা রয়েছে। এই ভাষাগত বৈচিত্র্য শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি বাধা হতে পারে। অনেক শিক্ষার্থী তাদের মাতৃভাষায় পড়াশোনা করতে পারে না, যার ফলে তাদের শিক্ষার মান কমে যেতে পারে।

এই নতুন নির্দেশিকা এই বাধা দূর করতে সাহায্য করবে। স্থানীয় ভাষায় পাঠ্য উপকরণ সরবরাহ করলে শিক্ষার্থীরা তাদের মাতৃভাষায় পড়াশোনা করতে পারবে। এটি তাদের শিক্ষার মান উন্নত করতে এবং শিক্ষায় আরও বেশি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।

উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনা – শিক্ষামন্ত্রক মনে করে যে স্থানীয় ভাষায় পাঠ্য উপকরণ ছাত্রছাত্রীদের উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনাকে উৎসাহিত করবে। শিক্ষার্থীরা তাদের নিজস্ব ভাষায় পড়াশোনা করলে তারা তাদের ধারণাগুলিকে আরও সহজে প্রকাশ করতে পারবে। এটি তাদের সমস্যা সমাধান এবং নতুন ধারণা তৈরি করার ক্ষমতা বিকাশে সহায়তা করবে।

এই নির্দেশিকা বাস্তবায়ন হলে ভারতের শিক্ষা ব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসবে। এটি শিক্ষাকে আরও অন্তর্ভুক্ত এবং অভিগম্য করবে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য আরও বেশি সুযোগ তৈরি করবে।

অন্যদিকে, শিক্ষামন্ত্রকের বিবৃতি অনুসারে, জাতীয় শিক্ষানীতির (NEP 2020) এই ধারণায় দেওয়া হয়েছে যে, ভারতের বহুভাষিক প্রকৃতির সঙ্গে তার বিশাল সম্পদ এবং শক্তি সামাজিক, সংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং শিক্ষাগত উন্নয়নের জন্য দক্ষতার সঙ্গে ব্যবহার করা প্রয়োজন। স্থানীয় ভাষায় বিষয় বস্তু, বহুভাষিক সম্পদকে বাড়িয়ে তুলবে এবং ২০৪৭ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে এবং বিকশিত ভারতের জন্য অবদান রাখবে।

মূল্যবান তথ্য:

  • এই উদ্যোগটি জাতীয় শিক্ষানীতির (NEP 2020) সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা ভারতীয় ভাষা ও সংস্কৃতিকে শিক্ষার কেন্দ্রে রাখতে চায়।
  • (UGC), এআইসিটিই (AICTE), এবং এনসিইআরটির (NCERT) মতো জাতীয় পর্যায়ের সংস্থা এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
  • আগামী তিন বছর এই উদ্যোগের বাস্তবায়ন কীভাবে হয়, তা পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ।

উল্লেখ্য, গত প্রায় দু’বছর ধরে ভারত সরকার এব্যপারে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। বিভিন্ন শিক্ষার উপকরণ অনুবাদ করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ভিত্তিক অ্যাপও ব্যবহার করা হচ্ছে। এইসব অনুবাদ একুম্ভ পোর্টালে পাওয়া যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রযুক্তি বিদ্যা, চিকিৎসা বিদ্যা, আইন, স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তরের বিভিন্ন বই। দীক্ষায় ৩০টির বেশি ভারতীয় ভাষায় শিক্ষার উপকরণ পাওয়া যাচ্ছে। সেখানে জেইউ, নিটের মতো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য ১৩ ভাষায় শিক্ষার উপকরণ পাওয়া যাচ্ছে।

(Feed Source: hindustantimes.com)