মঙ্গল গ্রহে প্রাণের চিহ্নের সম্ভাবনা প্রবল, প্রাচীন হ্রদের সন্ধান

মঙ্গল গ্রহে প্রাণের চিহ্নের সম্ভাবনা প্রবল, প্রাচীন হ্রদের সন্ধান

ঠান্ডা, শুষ্ক, প্রাণহীন মঙ্গল একসময় উষ্ণ, হ্রদে ঘেরা বাসযোগ্য গ্রহ ছিল। ঠিক পৃথিবীর মতোই। রোবোটিক রোভার চালিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য জানতে পারল নাসা। ঠিক পৃথিবীর মতোই পলি জমা হয়ে হয়ে হ্রদ গুলি নিশ্চিন্ন হয়ে গিয়েছে। এমনকি বিরাট এক অববাহিকারও খোঁজ মিলেছে এরই মধ্যে। পলি জমা হওয়ার বিষয়টি আরও খুঁটিয়ে দেখছেন বিজ্ঞানীরা।

১০০০ দিনের বেশি হয়ে গেল, মঙ্গল গ্রহে ঘুরে বেড়াচ্ছে নাসার পারসিভারেন্স রোভার। সামনে আনছে একের এক অবাক তথ্য। জলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে এরইমধ্যে। লাল গ্রহে এবার প্রাণের চিহ্ন খুঁজতে ব্যস্ত নাসা। শুক্রবার প্রকাশিত একটি সমীক্ষা অনুসারে, নাসা-এর রোভার পারসিভারেন্স দ্বারা সংগৃহীত ডেটা বলছে মঙ্গল গ্রহে জেরেজো ক্রেটার নামে একটি বিশাল অববাহিকার খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। যেখানে একসময় প্রচুর জল ছিল মনে অনুমান।

লস অ্যাঞ্জেলেসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (ইউসিএলএ) এবং অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নাল জানিয়েছে, লাল গ্রহের বুকে রোবোটিক রোভার চালিয়ে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছে নাসা। সেখানে পূর্ববর্তী কক্ষপথের চিত্র এবং অন্যান্য তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে যে মঙ্গল গ্রহের অনেক অংশেই একসময় হ্রদ এবং তার চারপাশে বিভিন্ন অণুজীবেরও অস্তিত্ব বর্তমান।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ওই রোভারটি অনেকটা ওই ছয় চাকার গাড়ির মতো। সাবসারফেস স্ক্যানের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছিল। কারণ এটি মঙ্গলগ্রহের গর্তময় পৃষ্ঠের উপর দিয়ে ঘর্ষণ করে, স্ক্যান করে নমুনা সংগ্রহ করবে। আর রোভারটির এই বৈশিষ্ট্যই নদীর ব-দ্বীপ খুঁজে পেতে সাহায্য করছে বিজ্ঞানীদের। রোভারের রিমফ্যাক্স রাডার যন্ত্রের জন্যই বিজ্ঞানীরা মাটির ৬৫ ফুট (২০ মিটার) নীচে গভীর শিলা স্তরের সন্ধান পেয়েছেন। যা দেখে UCLA গ্রহ বিজ্ঞানী ডেভিড পেইজ বলেছেন, সেটি দেখতে প্রায় একটি কাটা রাস্তার মতো।

এই স্তরগুলি অস্পষ্ট প্রমাণ দেয় যে জল দ্বারা বাহিত মাটির পলিগুলি ব-দ্বীপে জমা হয়ে হয়ে নদীটির জল শুষে নিয়েছে। ঠিক যেমন পৃথিবীর হ্রদে লক্ষ্য করা যায়। যা দেখে বিজ্ঞানীদের সন্দেহ জোরদার হয়েছে। তাঁর অনেকাংশেই নিশ্চিত যে বর্তমানের ঠান্ডা, শুষ্ক, প্রাণহীন মঙ্গল একসময় উষ্ণ, হ্রদে ঘেরা এবং সম্ভবত বাসযোগ্যও ছিল। এই মুহূর্তে বিজ্ঞানীরা পলিগুলির একটি আপ-ক্লোজ পরীক্ষার ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছেন- যা প্রায় ৩ বিলিয়ন বছর আগে গঠিত হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে।

পেইজ বলেছেন, শুক্রবার রিপোর্ট করা রিমফ্যাক্স রাডার রিডিংগুলি গর্তের পশ্চিম প্রান্তে চিহ্নিত পাললিক স্তর গঠনের আগে এবং পরে ক্ষয়ের লক্ষণ খুঁজে পেয়েছে। সেখানেই রয়েছে একটি জটিল ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসের প্রমাণ। ওই বিজ্ঞানীর দাবি,

‘আগ্নেয়গিরির শিলা ছিল যেখানে ছিল, সেখানেই আমরা অবতরণ করেছি,” পেইজ বলেছিলেন। আসল খবর হল যে এখন আমরা ব-দ্বীপের দিকে চলে এসেছি এব এই হ্রদের পলির প্রমাণও দেখতে পাচ্ছি, যেটি আমাদের এই স্থানে আসার অন্যতম প্রধান কারণ। সুতরাং সেই ক্ষেত্রে এটি একটি আনন্দের বিষয়।’

(Feed Source: hindustantimes.com)