জমি বিবাদে অমর্ত্যের দাবিতেই সিলমোহর আদালতের, বিশ্বভারতীর উচ্ছেদ নোটিস খারিজ

জমি বিবাদে অমর্ত্যের দাবিতেই সিলমোহর আদালতের, বিশ্বভারতীর উচ্ছেদ নোটিস খারিজ

ভাস্কর মুখোপাধ্যায়, শান্তিনিকেতন: বিশ্বভারতীর সঙ্গে জমি বিবাদ মামলায় জয় পেলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। অমর্ত্যকে উচ্ছেদের নোটিস ধরিয়েছিলেন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ (Visva Bharati University)। বুধবার বিশ্বভারতীর সেই নোটিস নাকচ করল বীরভূম জেলা দায়রা আদালত। জমি বিবাদ মামলায় আদালতের রায়ে অমর্ত্যের দাবিই বৈধতা পেয়েছে বলে জানালেন তাঁর আইনজীবী। (Amartya Sen)

গত বছর ১৯ এপ্রিল বিশ্বভারতীর সম্পত্তি বিভাগের আধিকারিক অশোক মাহাতর তরফে নোটিস পাঠানো হয় অমর্ত্যকে। ওই নোটিসে বলা হয়েছিল, ৬ মে-র মধ্যে পৈর্তৃক ভিটে ‘প্রতীচী’র উত্তর-পশ্চিম কোণ থেকে অতিরিক্ত ১৩ ডেসিমেল জমি খালি করে দিতে হবে তাঁকে। ওই নোটিসের বিরুদ্ধে বীরভূম জেলা দায়রা আদালতে আবেদন জানিয়েছিলন অমর্ত্যের আইনজীবীরা।

সেই নিয়ে শুনানি চলাকালীন, গত বছর ৮ অগাস্টই উচ্ছেদের ওই নোটিসের উপর স্থগিতাদেশ দেয় বীরভূম জেলা দায়রা আদালত। এর পাশাপাশি, কোন নথির উপর ভিত্তি করে অমর্ত্যকে উচ্ছেদের নোটিস পাঠানো হয়েছে, বিশ্বভারতীর কাছে সেই রিপোর্টও চেয়ে পাঠানো হয়। এর পর, গত ২ এবং ১১ ডিসেম্বর আদালতে নিজেদের বক্তব্য় পেশ করেন অমর্ত্যের আইনজীবীরা। এ বছর ৬ জানুয়ারি আদালতে নিজেদের পক্ষ তুলে ধরেন বিশ্বভারতীর আইনজীবীরাও। বুধবার সওয়াল-জবাব শেষ হলে অমর্ত্যের দাবিকেই আদালত  বৈধতা দেয় বলে জানা গিয়েছে।

বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের অভিযোগ ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ ডেসিমল জমি অমর্ত্যের পৈর্তৃক বাড়ি ‘প্রতীচী’র মধ্যে ঢুকে রয়েছে। যদিও বিশ্বভারতীর দাবি খারিজ করে দেন অমর্ত্য। তাঁর দাবি ছিল, ‘প্রতীচী’র জমি তাঁর বাবা কিনেছিলেন।,উত্তরাধিকার সূত্রে তিনি তা ভোগ করছেন। সেই নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই। গত বছর ১৪ এপ্রিল ‘প্রতীচী’র বাইরে নোটিস ঝোলায় বিশ্বভারতী। তার পর ডেডলাইন-সহ উচ্ছেদের নোটিস দেয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জায়গা খালি না করলে বলপ্রয়োগের হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।

অমর্ত্যের প্রতি বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এই আচরণের তীব্র নিন্দা করে রাজ্য সরকার। সমাজের বিশিষ্ট মানুষজনেরাও বিষয়টি নিয়ে সরব হন। দেশের রাষ্ট্রপতিকে চিঠিও লেখেন দেশ-বিদেশের ৩০২ জন অধ্যাপক। বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী অমর্ত্যকে হেনস্থা করছেন বলে অভিযোগ করা হয় তাতে। বিশ্বভারতীর জমি জবরদখল হয়ে গিয়ে থাকলে, বিগত ৮০ বছরে তা টনক পড়ল না কেন, বিদ্যুৎ দায়িত্বে আসার পর হঠাৎ এত শোরগোল কেন, প্রশ্ন তোলেন শিক্ষাবিদরা।  কেন্দ্রের NDA সরকারের থেকে অমর্ত্যের আদর্শ আলাদা বলেই বিদ্যুৎ অমর্ত্যকে হেনস্থা করছেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়। তার পরও আইনি লড়াই চলছিল এতদিন।

(Feed Source: abplive.com)