এবার কলেরা প্রতিরোধে ভারতের মধ্যে প্রথম কলকাতায় শুরু হল ক্লিনিকাল ট্রায়াল। কলেরা সংক্রমণ রুখতে এই নতুন পদক্ষেপ কেন্দ্র ও রাজ্যের যৌথ উদ্যোগে। কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থা নাইসেডের সঙ্গে এই উদ্যোগে সামিল হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর৷ ১৯৭১ সালে কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তিক অঞ্চলে লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ কলেরাতে আক্রান্ত হন, অনেকে প্রাণও হারান। এই সময়ই অবস্থা সামাল দিতে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের চিকিৎসক দিলীপ মহলানবিশ নুন এবং চিনি নির্দিষ্ট অনুপাতে জলে মিশিয়ে তা খাইয়ে দেন কলেরা আক্রান্ত বিভিন্ন ব্যক্তিকে। আর এতেই হয় মুশকিল আসান। সুস্থ হয়ে ওঠে হাজার হাজার কলের আক্রান্ত রোগী। এই নুন-চিনির নির্দিষ্ট অনুপাতই পরবর্তীকালে ওআরএস নামে খ্যাত হয়।
আর এবার ওওআরএস স্রষ্টার শহরেই কলেরার জীবাণু রোধ করার এই নতুন গবেষণা শুরু হচ্ছে। এই গবেষণার সাফল্যের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন বহু চিকিৎসক, স্বাস্থ্য বিষয়ক গবেষক সকলেই। ইতিমধ্যে আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, হু-এর নেতৃত্বে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে কলেরা প্রবণ অঞ্চলে। তবে ভারতের মধ্যে এই ট্রায়াল কলকাতাতেই প্রথম। প্রাথমিক পর্যায়ে ট্রায়ালের জন্য কলকাতা পুরসভার ট্যাংরা, তপসিয়া, তিনজলা, রাজাবাজার, বেলেঘাটা, পার্ক সার্কাসের পাঁচটি ওয়ার্ডকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
কলেরা মূলত একটা ব্যাকটিরিয়াজনিত সংক্রমণ, যেটা প্রধানত দূষিত খাবার বা জল খেলে হয়। এটি স্বাস্থ্য সম্পর্কিত গুরুতর উদ্বেগের ব্যাপার। কলেরা সেইসব অঞ্চলে বেশি হয়, যেখানে পরিষ্কার জল সরবরাহ ও স্বাস্থ্যব্যবস্থার সুবিধা নেই। এটা সব বয়সের লোককেই প্রভাবিত করে থাকে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, যে প্রতি বছর ১.৩ মিলিয়ন থেকে ৪ মিলিয়ন কলেরার রোগের ঘটনা ঘটে। নাইসেড সূত্রে জানা যাচ্ছে, এটি মূলত ওরাল ভ্যাকসিন। ভ্যাকসিনের নাম দেওয়া হয়েছে ইউভিকল, এর দুটি রোজ রয়েছে। প্রথম ডোজ নেওয়ার এক থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যেই দ্বিতীয় ডোজ নিতে হবে কোনও ব্যক্তিকে। প্রাথমিকভাবে অন্ততপক্ষে ৩০ হাজার মানুষকে দেওয়া হবে কলেরার নতুন এই ওরাল ভ্যাকসিন।
(Feed Source: hindustantimes.com)