নয়াদিল্লি: আরও ঘোরাল হচ্ছে পশ্চিম এশিয়ার ভূরাজনীতি। এবার ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের মূল দুই গ্যাসের পাইপলাইন উড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। তাদের দাবি, রান্না এবং ঘর উষ্ণ রাখতে যে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্যাস সরবরাহ করা হয়, সেই দুই পাইপলাইনে হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। এই হামলার ফলে ভোগান্তির শিকার দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ। প্রচণ্ড শীতে কাতরাচ্ছেন তাঁরা। (Iran vs Israel)
ইরানের সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের তৈলমন্ত্রী জাভেদ ওউজি। তিনি বলেন, “প্রচণ্ড ঠান্ডায় জবুথবু দেশের মানুষ। এই পরিস্থিতিতে বড় শহরগুলিতে গ্য়াস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা শত্রুপক্ষের।” জাভেদ যদিও সরাসরি ইজরায়েলের নাম মুখে আনেননি। তবে দেশের সংবাদমাধ্যমে এই হামলার নেপথ্যে ইজরায়েলের হাত রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এই হামলাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ এবং ‘নাশকতা’ বলে উল্লেখ করেছেন জাভেদ। ( Middle East Situation)
ইরানে এই ধরনের হামলা বিরল। তবে ২০১৭ সালে দেশের বিচ্ছিন্নতাকামী একটি সংগঠনও এমন কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে সামনে আসে। সেবার কুজেস্তান প্রদেশে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দু’টি তেলের পাইলপাইন উড়িয়ে দেওয়া হয়।
⚡BREAKING:
🇮🇷 Huge explosion of a gas pipeline between the cities of Shahrekord and Borujen in Iran
The explosion and its aftermath are so large that they could be seen from a distance as far away as 60km.
@Middle_East_Spectator pic.twitter.com/MlhpXmVnfG
— Megatron (@Megatron_ron) February 13, 2024
এর আগে, ডিসেম্বর মাসে পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে ইরান। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওই পাঁচ জন ইজরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা Mossad-এর সঙ্গে যুক্ত এবং ইরানের মাটিতে তাঁরা নাশকতা চালাচ্ছিলেন বলে দাবি করে তেহরান। শুধু তাই নয়, দেশের পরমাণু এবং ক্ষেপণাস্ত্র কেন্দ্রকে লক্ষ্য করেও হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করে তারা, যা ইজরায়েল না স্বীকার করে, না অস্বীকার করে।
সরাসরি যুদ্ধে না গেলেও ইরান এবং ইজরায়েলের মধ্যে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরেই ছায়াযুদ্ধ চলে আসছে। ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের প্রতিরক্ষা এবং পরমাণু কেন্দ্রকে নিশানা করে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে একাধিক বার। শুধু তাই নয়, ইরানের পরমাণু বিজ্ঞানী, কম্যান্ডাদের দেশের অন্দরে এবং বাইরে হত্যার অভিযোগও উঠেছে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে।
অতি সম্প্রতি ইরানের বিরুদ্ধে ইজরায়েল সাইবার হামলা চালাতে শুরু করেছে বলেও সামনে আসে। অভিযোগ ওঠে, ইরানের তৈলমন্ত্রকের সার্ভার বিকল করে দেয় ইজরায়েল, যার ফলে গোটা দেশে তেল এবং গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে।
গত বছর অক্টোবরে ইজরায়েল এবং প্যালেস্তিনীয় সংগঠন হামাসের মধ্যে যুদ্ধ বাধলে, তাদের সঙ্গে ইরানের তিক্ততা আরও তলানিতে এসে পৌঁছয়। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে সরাসরি ইজরায়েলের বিরোধিতা করে ইরান। জোর করে প্য়ালেস্তাইনের উপর কব্জা এবং গাজায় মানবাধিকার লঙ্ঘন করা নিয়ে সরব হয় তারা। তবে ইজরায়েল এবং হামাসের যুদ্ধে তাদের কোনও ভূমিকা নেই বলে জানায় ইরান।
আমেরিকার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধে যাওয়ার কোনও অভিসন্ধি নেই বলেও জানায় ইরান। তবে আমেরিকার দাবি, ইজরায়েল এবং আমেরিকার বিরুদ্ধে নাশকতামূলক কাজকর্মে বাইরে থেকে মদত জোগাচ্ছে ইরান। জঙ্গিদের অস্ত্রশস্ত্রের জোগান দিচ্ছে তারা। ইয়েমেনের হুথি, লেবাননের হেজবোল্লা, ইরাক এবং সিরিয়ার জঙ্গিদেরও ইরান মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ।হামাস এবং প্যালেস্তিনীয় যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দেওয়াতেও অভিযুক্ত ইরান।
(Feed Source: abplive.com)