বাবা-দাদার মৃত্যুও টলাতে পারেনি, ছাত্রের ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার রহস্য ফাঁস করলেন বোলিং গুরু

বাবা-দাদার মৃত্যুও টলাতে পারেনি, ছাত্রের ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার রহস্য ফাঁস করলেন বোলিং গুরু

সন্দীপ সরকার, কলকাতা: তূণে ইনস্যুইং তো ছিলই। ডানহাতি ব্যাটারের ক্ষেত্রে যে বল অফস্টাম্প বা তার বাইরে পড়ে মিডল বা লেগ স্টাম্পের দিকে ঢুকে আসে। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আউটস্যুইংয়ের বিষ। যে বল ডানহাতি ব্যাটারের বাইরের দিকে যায়। আর তাতেই আতঙ্ক হয়ে উঠেছেন আকাশ দীপ (Akash Deep)। অভিষেক টেস্টেই যিনি বল হাতে দুরন্ত স্পেল করে নজর কেড়ে নিয়েছেন। তাঁর কোন বল বাইরে যাবে আর কোনটা ভিতরে ঢুকবে, টের পেতে কালঘাম ছুটেছে ইংরেজ ব্যাটারদের (India vs England Test Series)।

বাংলা দলে আকাশ দীপের বোলিং গুরু যা দেখে তৃপ্ত। শিবশঙ্কর পাল শোনালেন, কীভাবে আউটস্যুইং রপ্ত করে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছেন ছাত্র। রাঁচিতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্টে তখন আগুন ঝরাচ্ছেন আকাশ। কলকাতায় বসে যা দেখে আপ্লুত বোলিং গুরু ম্যাকো (ময়দানে শিবশঙ্করের ডাকনাম)। এবিপি আনন্দকে বাংলার প্রাক্তন পেসার বললেন, ‘তিন বছর আগে বাংলার বোলিং কোচ হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ার পরই আকাশকে প্রথম দেখি। ও তখন ইনস্যুইং করাত শুধু। আউটস্যুইং করাতে পারত না। সেটাই হাতে ধরে শেখাই। ও খুব দ্রুত শিখেও নেয়।’

আকাশকে প্রথম কোথায় দেখেছিলেন? শিবশঙ্কর বলছেন, ‘বাংলা দলেই ওকে প্রথম দেখি। তার আগে ময়দানে ওর নাম শোনা যেত। আমি তখন বাংলার মেয়েদের নিয়ে কাজ করতাম। সৌরাশিস লাহিড়ী আমাকে বলেছিল, একজন খুব ভাল বোলার পেয়েছে। আকাশকে দেখে বুঝি, ভুল বলেনি।’

ছাত্র হিসাবে আকাশ কেমন? ম্যাকো বলছেন, ‘খুব ভাল ছাত্র। দারুণ শেখার, জানার আগ্রহ। ম্যাচের আগে কী করতে হবে জেনে নেয়। নতুন বলে কীরকম বোলিং করবে, পুরনো বলে কীরকম করবে, সব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে জানতে চায়। বলের রিলিজ নিয়ে খেটেছে।’

শোনালেন এক গল্পও। শিবশঙ্কর বললেন, ‘আমি আর বাংলার প্রধান কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল মিলে এবার একটা নতুন নিয়ম চালু করেছিলাম। নেট সেশনের আগে সব বোলারের হাতে একটা করে কাগজ দিয়ে দিতাম। তারপর বলতাম লিখে রাখতে, কোন বলটা ভাল হল, কোনটা ঠিক মনের মতো হল না। আত্মসমীক্ষা আর কী। তাতে নিজেদের ভুল নিজেরাই উপলব্ধি করে ক্রিকেটারেরা।’ শিবশঙ্কর যোগ করলেন, ‘দেখতাম আকাশ এক লাইনে বল করে যাচ্ছে। অফস্টাম্প লক্ষ্য করে। চ্যানেল বোলিং। ব্যাটারদের ধৈর্য্যের পরীক্ষা নেয়।’

আকাশের শেখার ইচ্ছে দেখে আপ্লুত শিবশঙ্কর। বললেন, ‘স্লোয়ার, কাটার, নাকল বল শিখেছে। লেংথ নিয়ে পরিশ্রম করেছে। ইনস্যুইং ওর বলের সবচেয়ে বড় অস্ত্র। বল দুদিকেই মুভ করাতে পারে। অনেক দূর যাবে ও।’ যোগ করলেন, ‘ওর বাবা, দাদার অকাল মৃত্যুও ওকে টলাতে পারেনি। লক্ষ্যে অবিচল আকাশ।’

(Feed Source: abplive.com)