Alexander Duff: অকালপক্কদের কেন 'ডেঁপো' বলে জানেন? সেই 'ডেঁপো' স্রষ্টার মৃত্যুদিন আজ…

Alexander Duff: অকালপক্কদের কেন 'ডেঁপো' বলে জানেন? সেই 'ডেঁপো' স্রষ্টার মৃত্যুদিন আজ…

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: আলেকজান্ডার ডাফ। ১৮০৬ সালে জন্ম, ১৮৭৮ সালের আজকের দিনে, ১২ ফেব্রুয়ারি তাঁর মৃত্যু। জন্মসূত্রে স্কটিশ। শিক্ষিত, ধার্মিক আবার মুক্তমনাও। ডাফ সাহেব এমন একটা সময়ে কলকাতায় এসেছিলেন যখন এই শহরকে কেন্দ্র করে বাংলায় সমাজ সংস্কারের ঢেউ। ইংরেজি শিক্ষার হাত ধরে আসছে বিজ্ঞানশিক্ষার প্রতি ঝোঁক, আসছে বিজ্ঞানমনস্কতা ও যুক্তিবাদিতা। সেই স্রোতেরই যেন অংশ হলেন ডাফ স্বয়ং। তাঁর চেষ্টাতেই কলকাতায় হয়েছে স্কুল– ডাফ হাই স্কুল ফর গার্লস, হয়েছে কলেজ– স্কটিশ চার্চ কলেজ।

এহেন ডাফের শিষ্যরাও খুব স্বাভাবিক ভাবেই ছিলেন তাঁদের আদর্শের মতোই যুক্তিবাদী, সংস্কারবাদী, অগ্রগতির ধারক-বাহক, বিজ্ঞানমনস্ক। তাঁরা প্রায় সকলেই ছিলেন তর্কপ্রিয়। ডাফের শিষ্যদের দেখতে পারতেন না এর উল্টো শিবিরের মানুষজন। তাঁরা বরং এঁদের এড়িয়েই চলতেন। এই নিন্দুকেরা ডাফের অনুগামীদের নাম দিল ‘ডেফো’। ক্রমে সেটা পাকাপাকি ভাবে একটা সমালোচনার ভাষায় পর্যবসিত হল। ডেফো মানে, যাঁরা অন্যদের থেকে বেশি বোঝে, একটু বেশি জানে, সবজান্তা, চলতিতে একটু পাকা গোছের। এই পাকা ছেলেরাই হল ‘ডেফো’, পরে তা থেকে  ‘ডেঁফো’, ক্রমে এর থেকে আজকের অতিচেনা ‘ডেঁপো’।

১৮৩০ সালে আলেকজান্ডার ডাফ কলকাতায় আসেন। এর ঠিক পরেই তিনি তৎকালীন শিক্ষানীতি সংক্রান্ত বিতর্কে জড়িত হন। সিভিলিয়ানদের মধ্যে যাঁরা সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ইংরেজি ভাষায় শিক্ষাদানের পক্ষে ছিলেন, আলেকজান্ডার ডাফ তাদের সমর্থন করেন। অন্য দিকে, প্রাচ্যদেশীয় ভাষায় প্রাচ্যসভ্যতা সম্পর্কে শিক্ষাদানকে যারা সমর্থন করেন তাঁরা ইংরেজি সমর্থকদের কাছে হেরে যান। ১৮৩৫ সালে সরকার ইংরেজি ভাষায় শিক্ষাদান এবং ইউরোপীয় বিজ্ঞান ও সাহিত্য প্রসারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

আলেকজান্ডার ডাফ ১৮৩০ থেকে ১৮৬৩ সাল পর্যন্ত বাংলায় ছিলেন। মাঝে মাঝে বাংলায় বসবাসের সময় তিনি ধর্মপ্রচারের কাজে বিভিন্ন জায়গায় যেতেন।  অসংখ্য ধর্মপ্রচারণামূলক স্কুল ও দাতব্য প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন তিনি। ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধ গৃহীত সরকারের বর্বরোচিত পদক্ষেপের প্রচণ্ড সমালোচনা করেন তিনি। নীলচাষিদের উপর নিষ্ঠুর নির্যাতনেরও প্রবল বিরোধিতা করেন। ১৮৫৭ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, এর পাঠ্যক্রম প্রণয়ন এবং পরীক্ষা পদ্ধতি প্রবর্তনেও তাঁর ভূমিকা ছিল সক্রিয়।

(Feed Source: zeenews.com)