সোমবার ঘরের মাঠে চেন্নাইয়িন এফসি-কে হারিয়ে আইএসএলে ফের জয়ে ফিরল ইস্টবেঙ্গল। ১-০ ব্যবধানে জিতল লাল-হলুদ। দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেন চেন্নাইয়েরই নন্দকুমার। এই জয়ের ফলে আইএসএলের প্লে-অফের দৌড়ে টিকে থাকল লাল-হলুদ। বেঙ্গালুরুকে টপকে পয়েন্ট তালিকায় উঠে এল আট নম্বরে। প্লে-অফের লড়াইয়ে টিকে থাকতে গেলে ইস্টবেঙ্গলকে এই ম্যাচে জিততেই হত। কারণ এর পর কিন্তু কঠিন লড়াইয়ের সামনে পড়তে হবে কুয়াদ্রাত ব্রিগেডকে। পরের চার ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের প্রতিপক্ষ যথাক্রমে ওড়িশা, গোয়া, মোহনবাগান এবং কেরল। প্রতিটা ম্যাচটই কঠিন হতে চলেছে। লিগের পয়েন্ট টেবলে প্রথম পাঁচের মধ্যে রয়েছে এই চার দল। মোহনবাগান ছাড়া বাকি তিন ম্যাচই আবার অ্যাওয়ে। আবার এই ম্যাচগুলোতে পয়েন্ট খোয়ালেই স্বপ্নভঙ্গ হবে লাল-হলুদের। তাই নকআউট ধরে নিয়েই সব ম্যাচগুলো খেলতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে।
জিতল ইস্টবেঙ্গল
শেষ পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তিন পয়েন্ট পেল ইস্টবেঙ্গল। এটা খুবই দরকার ছিল লাল-হলুদের জন্য। ইস্টবেঙ্গল বেশ কিছু সুযোগ পেয়েছিল। যার থেকে ব্যবধান বাড়লেও বাড়তে পারত। তবে এই ম্যাচে নিঃসন্দেহে চেন্নাইয়িন এফসি অনেক বেশি সুযোগ তৈরি করেছিল লাল-হলুদের চেয়ে। কিন্তু তারা সুযোগগুলো কাজে লাগাতে পারেনি। যার খেসারত তাদের ম্যাচ হেরে দিতে হল।
৭ মিনিট ইনজুরি টাইম
নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ। ইস্টবেঙ্গল ১-০ এগিয়ে রয়েছে। চেন্নাইয়িন অনেকগুলো সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারেনি। ৭ মিনিট ইনজুরি টাইম দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে বদলাবে খেলার ফল?
সহজ সুযোগ নষ্ট ক্লেটনের
৮৫ মিনিট- বিষ্ণু ডান দিক থেকে ড্রিবল করে উপরে ওঠেন। দুর্দান্ত ভাবে একজন ডিফেন্ডারকে পিছনে ফেলে সিলভাকে থ্রু বল বাড়ান। ভালো জায়গায় ক্লেটন সিলভাকে পাস দিয়েছিলেন বিষ্ণু। কিন্তু লাল-হলুদ অধিনায়কের শট লক্ষ্যভেদ করতে পারেনি। কর্নার পায় ইস্টবেঙ্গল। সেটার থেকেও কার্যকরী কিছু হয়নি।
সমতা ফেরাতে মরিয়া চেন্নাই
৮৪ মিনিট- গোলের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে চেন্নাইয়িন। নিনথোই ডান দিক থেকে ড্রিবল করে উপর উঠলেও, পাস বাড়ানোর বিকল্প খুঁজে পেতে অনেক বেশি সময় নেন। শেষ পর্যন্ত, তিনি রহিম আলিকে ক্রস বাড়ান। কিন্তু রহিমের হেডার পোস্টের উপর দিয়ে বেরিয়ে যায়।
আরও একটি সেভ গিলের
৭০ মিনিট- রাফায়েল বক্সের প্রান্ত থেকে একটি বাঁকানো শট নেন। খুব ভালো শট ছিল। তবে প্রভসুখন গিল ফের রক্ষাকর্তা। বলটি তিনি বাঁচিয়ে দেন।
গোওওওওললল… ১-০ করল ইস্টবেঙ্গল
৬৫ মিনিট- ভিক্টরের থেকে নন্দকুমার বাঁ দিকের পোস্টে বল পান। তিনি লক্ষ্যে শট মারেন। বলটি চেন্নাইয়ের ফুটবলারের পায়ে লেগে জালে জড়ায়। ১-০ এগিয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল।
দুরন্ত সেভ গিলের
৬২ মিনিট- ফারুখের থেকে ব্যারেটো হয়ে বল যায় মারের কাছে। মারে আর ব্যারেটো প্রথমে ওয়ান-টাচ টাচ ক্রস খেলেন। তার পর শক্তিশালী হেডারে লক্ষ্যভেদ করতে চেয়েছিলেন মারে। কিন্তু লাল-হলুদ কিপার গিল বলটি বাঁচিয়ে দেন। দুরন্ত সেভ গিলের। বড় সুযোগ নষ্ট চেন্নাইয়িনের।
সুযোগ মিস করলেন ক্লেটন
৫৮ মিনিট- ব্যাক হিলে নন্দকুমার পাস বাড়ান ক্লেটনকে। তবে ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়ক অনেক বাইরে দিয়ে শট মারেন। গোল করতে ব্যর্থ হন তিনি।
গোলের দেখা নেই
৫৬ মিনিট- ক্লেটন সিলভা ডানদিকে বিষ্ণুর কাছে ওয়ান-টাচ পাস খেলেন। কিন্তু বিষ্ণু বলের নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি। বলটি কেড়ে নেন চেন্নাইয়িন।
একসঙ্গে তিনটি পরিবর্তন লাল-হলুদের
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ইস্টবেঙ্গল তিনটি পরিবর্তন করল একই সঙ্গে। নিশু কুমারের বদলে নামলেন মন্দার রাও দেশাই। ফেলিসিও ব্রাউনের জায়গায় নামলেন বিষ্ণু। রাকিপের পরিবর্তে নামলেন প্যান্টিচ।
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু। ইস্টবেঙ্গল এই হাফে গোল না করতে পারলে, চাপে পড়ে যাবে। ঘরের মাঠে চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে তিন পয়েন্ট না পেলে, সেরা ছয়ে মধ্যে থাকার স্বপ্ন না দেখাই ভালো! চেন্নাইয়ের দল কিন্তু আগ্রাসী মেজাজেই রয়েছে।
বিরতি
প্রথমার্ধের খেলা শেষ। দুই দলই সুযোগ পেয়েছিল। তবে চেন্নাইয়িন অনেক বেশি সুযোগ তৈরি করেছিল। তবে কোনও দলই কোনও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। বিরতিতে খেলার ফল ০-০।
৪ মিনিট ইনজুরি টাইম
প্রথমার্ধের নির্দিষ্ট সময়ের খেলা শেষ। কোনও দলই গোলের মুখ খুলতে পারেনি। চার মিনিট ইনজুরি টাইম দিয়েছে রেফারি।
মাঠের মধ্যেই রেফারির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরালেন কুয়াদ্রাত
৪২ মিনিট- বারবার রেফারির সঙ্গে ঝামেলায় জড়াচ্ছেন কার্লেস কুয়াদ্রাত। এর কারণও রয়েছে। ইস্টবেঙ্গলের বক্সেই রেফারির গায়ে বল লেগেছিল। কিন্তু রেফারি যখন বাঁশি বাজান, তখন লাল-হলুদের নিয়ন্ত্রণে বল, এবং তারা আক্রমণে উঠছে। খেলা থামিয়ে দেন রেফারি। আর এই নিয়ে দলের ফুটবলারদের পাশাপাশি ক্ষোভ উগরান কুয়াদ্রাতও। আগে থেকেই রেফারিং নিয়ে সমালোচনা করছিলেন লাল-হলুদ কোচ। এদিন ফের তিনি রাগে ফেটে পড়েন। এই ঘটনার পর থেকেই তাঁকে বারবার রেফারির বিরুদ্ধে সরব হতে দেখা যায়। যার জেরে হলুদকার্ডও দেখেন কুয়াদ্রাত।
ফ্রি-কিক থেকে ভালো সুযোগ নষ্ট ক্লেটনের
৩৩ মিনিট- বক্সের একেবারে সামনেই একটি ফ্রি-কিক পায় ইস্টবেঙ্গল। ভালো জায়গায় তারা ফ্রি-কিক পেয়েছে। ক্লেটন সিলভা শট নেন। তবে সেই শট একেবারেই লক্ষ্যে ছিল না।
বড় সুযোগ নষ্ট চেন্নাইয়ের
২৯ মিনিট- অঙ্কিত মুখোপাধ্যায় গোলের সামনে আনমার্কড রহিম আলিকে পাস বাড়ান। রহিম আবার বাঁ-দিকে ফারুখকে বল বাড়ান। কিন্তু ফারুখের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। একটি বড় সুযোগ নষ্ট করল চেন্নাই।
বিপজ্জনক হতে পারত গিলের ভুল
২৩ মিনিট- চেন্নাই কর্নার থেকে বল বাড়ালে গিল সেই বল ধরেও ছেড়ে দেন। গিলের ভুলের সুযোগ অবশ্য কাজে লাগাতে পারেনি চেন্নাই। ভাগ্যক্রমে ইস্টবেঙ্গল বলটি ক্লিয়ার করে দেয়।
মারের চেষ্টা
২০ মিনিট- ফারুক বাঁ-দিক থেকে উপরে উঠে মারেকে একটি থ্রু পাস বাড়ান। মারে পিছনে কাটিয়ে, গোল লক্ষ্য করে শট মারেন। তবে পাঞ্চকরে বল বের করে দেন লাল-হলুদ কিপার গিল। কর্নার পায় চেন্নাইয়িন।
চেন্নাইয়ের আক্রমণ
১৬ মিনিট- চেন্নাইয়িন এফসি আক্রমণের ঝাঁজ বাড়িয়েছে। সাংওয়ানের কাছে একটি থ্রু পাস বাড়ান মারে। তবে সেটা কার্যকরী হয়নি। কিন্তু লাল-হলুদ ডিফেন্সকে চাপে ফেলছে চেন্নাই।
সুযোগ নষ্ট করলেন ফেলিসিও
১২ মিনিট- ডানদিক দিয়ে আক্রমণে উঠে ক্লেটন সিলভা একটি ভালো থ্রু বল বাড়ান ফেলিসিকে। কিন্তু ফেলিসিওর শটে সেই ধার ছিল না। পোস্টের উপর দিয়ে বল বেরিয়ে যায়।
চেন্নাইয়ের প্রচেষ্টা
৮ মিনিট- চেন্নাইয়ের ফারুক তাঁর গতি এবং দক্ষতা ব্যবহার করে বল কেড়ে নিয়ে আক্রমণে ওঠেন। তিনি বক্সে ড্রিবল করে গোল লক্ষ্য করে একটি নীচু ক্রস মারেন। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের কিপার প্রভসুখন গিল বলটি ধরে ফেলেন।
প্রথম মিনিটেই ফ্রি-কিক পেল লাল-হলুদ
১ মিনিট- শুরুতেই ভালো জায়গা ফ্রি-কিক পেল ইস্টবেঙ্গল। ক্লেটন সিলভা শট নেন। কিন্তু তিনি সরাসরি গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদারের হাতে বল মারেন।
খেলা শুরু
দুই দলের সামনেই সেরা ছয়ে ওঠার সুযোগ রয়েছে। তাই ইস্টবেঙ্গল এবং চেন্নাইয়িন- দুই দলই এই ম্যাচ জিততে মরিয়া থাকবে। আপাতত খেলা শুরু। দেখার, কী ফল হয়!
চেন্নাইয়িনের একাদশ
ইস্টবেঙ্গলের একাদশ
ছয় নম্বর স্থান দখলের লড়াইয়ে যারা
এই মুহূর্তে আইএসএল পয়েন্ট টেবলের ছ’নম্বরে রয়েছে জামশেদপুর এফসি। তাদের ১৭ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট।। এখন তাদের হাতে রয়েছে আর পাঁচটি ম্যাচ। এছাড়াও ইস্টবেঙ্গলও এই জায়গাটি পেতে মরিয়া। এই দুই দল ছাড়া ছ’নম্বরে থাকার দৌড়ে রয়েছে নর্থইস্ট ইউনাইটেড (১৬ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট), বেঙ্গালুরু এফসি (১৭ ম্যাচে ১৮ পয়েছে), পঞ্জাব এফসি (১৫ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট) এবং চেন্নাইয়িন এফসিও। এই দলগুলোকে পিছনে ফেলে ছ’নম্বরে পৌঁছে যাওয়ার একটাই রাস্তা খোলা ইস্টবেঙ্গলের সামনে, পরের ম্যাচগুলিতে একটিও পয়েন্ট না খোয়ানো। কিন্তু লাল-হলুদের যা পারফরম্যান্স, তাতে বাকি সব ম্যাচ জেতা সম্ভব?
দশে রয়েছে চেন্নাইয়িন
চেন্নাইয়ের দলটিও ১৫টি ম্যাচ খেলে ফেলেছে। তাদেরও ১৫ পয়েন্ট। তবে ইস্টবেঙ্গলের চেয়ে গোল পার্থক্যে পিছিয়ে রয়েছে তারা। চেন্নাইয়িন এখনও পর্যন্ত ৪টি ম্যাচ জিতেছে। ৩টি ড্র করেছে। ৮টি ম্যাচ হেরেছে। শেষ তিন ম্যাচের মধ্যে চেন্নাইয়িন ২টিতে জিতেছে। বেঙ্গালুরু এফসি এবং কেরালা ব্লাস্টার্সকে হারিয়েছে। তবে নিজেদের শেষ ম্যাচে মুম্বই সিটি এফসি-র কাছে হেরেছে।
ইস্টবেঙ্গলের হাল
জামশেদপুরের বিরুদ্ধে হারের ধাক্কা কাটিয়ে সোমবার ঘরের মাঠে চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে নামছে ইস্টবেঙ্গল। নয়ে থাকা লাল-হলুদের কাছে ভালো সুযোগ রয়েছে চেন্নাইয়িনকে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকায় আটে উঠে আসা। চেন্নাইয়িন এখন ইস্টবেঙ্গলের তলায় রয়েছে। গত ম্যাচে জামশেদপুর এফসি-কে হারালে ছয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে যেত ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু সে দিন তিন পয়েন্ট হাতছাড়া করে বসে থাকা তারা। যার খেসারতই এখন দিতে হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ইস্টবেঙ্গল ১৫টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটিতে জিতেছে। ৬টিতে ড্র করেছে, ৬টি ম্যাচ হেরেছে। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে আইএসএল পয়েন্ট টেবলের নয়ে রয়েছে তারা।