ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গান,হিন্দি বলেন, বিদেশি হয়েও এই দেশের প্রতি এত টান কেন রয়ের?

ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গান,হিন্দি বলেন, বিদেশি হয়েও এই দেশের প্রতি এত টান কেন রয়ের?

ভারতে ফুটবল খেলতে এসে, এ দেশের প্রেমে পড়ে গিয়েছেন, এমন বিদেশি ফুটবলারের তালিকাটা খুব একটা ছোট নয়। ব্রাজিলিয়ান হোসে ব্যারেটো তো ফুটবলার জীবনের ইতি টানার পরেও, এই দেশেই থেকে গিয়েছেন। ভারতের প্রেমে এখন হাবুডুবু খাচ্ছে ফিজির তারকা স্ট্রাইকার রয় কৃষ্ণ।

ফিজির নাগরিক হলে কী হবে, ইন্ডিয়ান সুপার লিগের প্রতিটি ম্যাচের আগে লাইন-আপ করে প্রায়ই তাঁকে ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গাইতে দেখা যায়! এমন ঘটনা নিঃসন্দেহে অবিশ্বাস্য। তবে এমনটা ঘটিয়েই সকলের মন জয় করেছেন রয় কৃষ্ণ।

শুধু জাতীয় সঙ্গীতই গাওয়াই নয়, অনর্গল হিন্দিতে কথাও বলতে পারেন রয় কৃষ্ণ। দলের ভারতীয় সতীর্থদের সঙ্গে হিন্দিতেই কথাবার্তা বলেন তিনি। তাই শুধু বিদেশীরা নন, দলের দেশীয় ফুটবলাররাও তাঁর ভালো বন্ধু। কিন্তু কী করে এত ভালো হিন্দি বলেন, ভারতের জাতীয় সঙ্গীত গান তিনি?

এই রহস্য নিজেই উন্মোচন করেছেন রয় কৃষ্ণ। আইএসএলের ইউটিউব চ্যানেলের অনুষ্ঠান ‘ইন দ্য স্ট্যান্ডস’-এ তিনি বলেছেন, ‘আমি তো ছোট থেকেই হিন্দি বলতে এবং লিখতে পারি। স্কুলে আমি বিশুদ্ধ হিন্দি পড়েছি। ভাষাটা যখন জানাই আছে, গানটা গাওয়ার যখন অভ্যেস আছে, তবে গাইব না কেন? আমার বাচ্চার জন্ম এই ভারতে। এই দেশের সঙ্গে আমার সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। ভারতের জাতীয় সঙ্গীত আমি আমার হৃদয় থেকেই গাই। আমি গাইতে ভালবাসি।’

রয়ের পূর্বপুরুষেরা ভারতে থাকতেন। তবে কবে তাঁরা ভারত ছেড়ে ফিজি চলে যান, তাও জানিয়েছেন তারকা স্ট্রাইকার। তিনি বলেছেন, ‘১৪০ বছর আগে আমার পূর্বপুরুষরা ভারতেই থাকতেন। তাঁরা যখন ভারত ছেড়ে ফিজি চলে যান, তখন এ দেশে ব্রিটিশদের রাজত্ব চলত।’

তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘আমি বরাবরই ভাবতাম এক সময় ছুটি কাটাতে ভারতে বেড়াতে যাব। কারণ ফিজিতে আমরা বলিউডের ছবি দেখতাম। তাই এখানে এসে এখানকার মানুষদের এবং তাদের সংস্কৃতিকে কাছ থেকে দেখার খুব ইচ্ছে ছিল। আমি সৌভাগ্যবান যে, এখানে ফুটবল খেলতে আসার সুযোগ পেয়ে যাই, যা আমি ভালোবাসি। তখন জানতামই না ভারতে, বিশেষ করে কলকাতায় ফুটবল কতটা জনপ্রিয়। তবে শুরু থেকেই অনেক কিছু শিখেছি আমি, অনেক বন্ধু হয়েছে আমার এবং এখনও পর্যন্ত এখানকার অভিজ্ঞতা খুবই ভালো।’

সেই ২০১৯ সালে এটিকে-র হয়ে খেলতে ভারতে এসেছিলেন রয়। তার পর থেকে এই দেশের ক্লাব ফুটবলে অন্যতম কিংবদন্তি হয়ে উঠেছেন ফিজির জাতীয় দলের এই প্রাক্তন অধিনায়ক। এই নিয়ে এবার পঞ্চম বার আইএসএলে খেলছেন রয়। ১০২টি ম্যাচ খেলে ৫৪টি গোল করে ফেলেছেন এবং ২৪টি গোল করিয়েছেন। বর্তমানে ওড়িশা এফসি-র অন্যতম ভরসা রয় কৃষ্ণ। এর আগে তিনি এটিকে, এটিকে মোহনবাগান এবং বেঙ্গালুরু এফসি-র হয়ে খেলেছেন।

প্রথম ভারতের মাটিতে পা রেখেছিলেন এই কলকাতাতেই। সেই দিনের স্মৃতি হাতড়িয়ে রয় বলেছেন, ‘রাত দু’টো-তিনটের সময় বিমানবন্দরের বাইরে আমার জন্য অপেক্ষা করছিল একঝাঁক মানুষ। আমার কাছে সেটা ছিল সম্পুর্ণ নতুন এবং বিশেষ এক অভিজ্ঞতা। এখানে এসে আমি আমার স্ত্রীকে বলি, মনে হচ্ছে এখানে আমি আগেও এসেছি। বিমানবন্দরে যে ভাবে আমার নামে ধ্বনী উঠছিল, মনে হচ্ছিল যেন বাড়িতেই এসেছি।’

(Feed Source: hindustantimes.com)