কলকাতা: স্ত্রী পরকীয়া লিপ্ত বলেই মনে করেন স্বামী। তাই সন্তানের পিতৃত্ব মানতে নারাজ হন তিনি। বিষয়টি গড়ায় আদালতের দোরগোড়া পর্যন্ত। কিন্তু মামলায় শেষ পর্যন্ত হেরে যান ওই ব্যক্তি। শুধু হেরে যান তাই নয়, এক অদ্ভুত সাজার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে। আর সেই সাজার কথাই উঠে এসেছে সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে।
চাবুক মারার বিরল শাস্তি
আদালতের তরফে পিতৃত্ব মানতে নারাজ ছিলেন বলে চাবুক মারার শাস্তি দেওয়া হয় তাঁকে। যা এখনও পর্যন্ত একটি বিরল শাস্তি বলেই মনে করছেন ওয়াকিবহালমহল। প্রাক্তন স্ত্রী-এর সন্তানকে নিজের সন্তান বলে মানতে অস্বীকার করায় তাঁকে ৮০ বার চাবুক মারতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
কোন অভিযোগের ভিত্তিতে এই পদক্ষেপ
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতে এই রায় দেওয়া হয় ফারিদ কাদির নামক অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে। অফেন্স অব কোয়াজফ (এনফোর্সমেন্ট অব হাদ) অর্ডিন্যান্স, ১৯৭৯-এর ৭(১) ধারার অধীনে ফারিদকে অপরাধী বা দোষী সাব্যস্ত করা হয়। স্ত্রী-এর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনাই ছিল মূল অভিযোগ। ওই অভিযোগের ভিত্তিতেই ফারিদ সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করেছিলেন।
বিয়ের পর মাত্র একমাস সংসার
ডন নিউজের প্রতিবেদন মোতাবেক, ফারিদের সঙ্গে সায়রা বানোর বিয়ে হয়েছিল ২০১৫ সালে। তার পর একমাস তাঁরা সংসার করেন। এর পর ডিসেম্বর মাসে স্ত্রী-র একটি কন্যাসন্তান হয়। সায়রার অভিযোগ সেই সময় ফারিদ তাদের ভরণপোষণের খরচ দিতে পারছিলেন না। পাশাপাশি স্ত্রীকে বাড়িতে ঢুকতেও দেননি।
আদালতে স্বীকারোক্তি
আদালতে মামলা গড়ালে ফারিদের বিপক্ষে যায় রায়। সেই সময় ফারিদ দুটি আবেদন করেন। এতে তিনি কন্যাসন্তানটির ডিএনএ পরীক্ষা করাতে বলেন। কিন্তু পরে দুটি আবেদনই প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। কন্যাসন্তানটি তাঁর নয় বলে দাবি করলেও ফারিদ এর সপক্ষে কোনও সাক্ষী দাঁড় করাতে পারেননি। এমনকি শপথ নিয়েও সেই কথা বলেননি তিনি। অন্যদিকে ফৌজদারি আইনের ৩৪২ ধারার অধীনে তাঁর একটি জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়। তাতে তিনি স্বীকার করেন ওই কন্যাসন্তানটি তাঁরই সন্তান।
এই স্বীকারোক্তির ভিত্তিতেই জেলা ও দায়রা আদালতের তরফে একটি বিরল শাস্তির রায় দেন বিচারক। ফারিদ কাদির নামে ওই ব্যক্তিকে ৮০বার চাবুক মারতে বলা হয়। অন্যদিকে জামিনের গ্যারান্টি হিসেবে এক লাখ টাকার বন্ড দিতে বলা হয়েছে।
(Feed Source: abplive.com)