বিশ্বব্যাপী লাফিয়ে বাড়ছে ‘হুপিং কাশি’, কীভাবে নিরাপদ থাকবেন তা জেনে নিন আগেভাগে

বিশ্বব্যাপী লাফিয়ে বাড়ছে ‘হুপিং কাশি’, কীভাবে নিরাপদ থাকবেন তা জেনে নিন আগেভাগে

লাফিয়ে বাড়ছে ‘হুপিং কাশি’। চোখের পলকেই বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে অত্যন্ত সংক্রামক এই ভয়াবহ রোগ। চিনের ন্যাশনাল ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অনুসারে, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩২,০০০ টিরও বেশি কেস ধরা পড়েছে, যা গত এক বছরের আগের তুলনায় প্রায় ২০ গুণ বেশি।

  • হুপিং কাশি কী

হুপিং কাশি, পেটুসিস নামেও পরিচিত, অত্যন্ত সংক্রামক রোগটি শ্বাসযন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। বোর্ডেটেলা পারটুসিস ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট এই কাশির রোগে ব্যক্তির মধ্যে শ্বাসকষ্ট আসে। কাশির সময় তীব্র শব্দ হয়। এই রোগটি বিশেষ করে শিশু এবং ছোট বাচ্চাদের মধ্যে গুরুতর আকার ধারণ হতে পারে, কখনও কখনও এটি নিউমোনিয়া, খিঁচুনি এবং এমনকি মৃত্যুর মতো জটিলতার দিকেও নিয়ে যায়।

হুপিং কাশির লক্ষণগুলি কী কী?

হুপিং কাশি, বা পেটুসিস, সাধারণত সর্দির উপসর্গ যেমন নাক দিয়ে পড়া, হালকা কাশি এবং কম তাপমাত্রার জ্বর দিয়ে শুরু হয়। সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে, কাশি তীব্র হয়ে ওঠে। এই কাশির সঙ্গে সঙ্গে, অনেক সময় বমি বা ক্লান্তিও আসতে পারে।

  • এটি কীভাবে ছড়ায়

একজন সংক্রামিত ব্যক্তি কাশলে বা হাঁচলে, এই অত্যন্ত সংক্রামক রোগ প্যাথোজেন শ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। কারণ ব্যাকটেরিয়াটি গলার শ্বাসনালীগুলির আস্তরণের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে বিষাক্ত পদার্থ তৈরি করে, যা সিলিয়ার ক্ষতি করে। এর ফলে শ্বাসনালী থেকে শ্লেষ্মা পরিষ্কার হয় না। ফলে কষ্ট আরও বেড়ে যায়। শ্বাসনালীগুলি স্ফীত হয়ে যায়, কাশি বাড়ে এবং শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়।

  • কীভাবে নিরাপদে থাকা যায়

হুপিং কাশি, বা পেটুসিস প্রতিরোধে প্রাথমিকভাবে টিকা দেওয়া প্রয়োজন। সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে অতিরিক্ত ব্যবস্থা নেওয়াও দরকার।

১) টিকাকরণ: এই রোগের সবচেয়ে কার্যকর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হল টিকা। DTaP ভ্যাকসিন, যা ডিপথেরিয়া, টিটেনাস এবং পেটুসিস থেকে রক্ষা করে, নিয়মিতভাবে দুই মাস বয়স থেকে শুরু করে একাধিক ডোজের মাধ্যমে শিশু এবং ছোট বাচ্চাদের দেওয়া হয়। গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মহিলা সহ কিশোর এবং প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যও এই বুস্টার সুপারিশ করা হয় যাতে তাঁরা তাঁদের নবজাতকদের ক্ষতি কমাতে সাহায্য করতে পারেন। তাই পরিবারের সদস্য, পরিচর্যাকারী বা শিশু-ছোট বাচ্চাদের ঘনিষ্ঠ পরিচিতদের পেটুসিস টিকা নেওয়ার উচিত।

২) ভাল স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন করুন: বিশেষত কাশি বা হাঁচির পরে, সাবান এবং জল দিয়ে নিয়মিত হাত ধোয়ার ধুতে হবে। এছাড়াও পাত্র বা পানীয়ের কাপের মতো ব্যক্তিগত জিনিসগুলি ভাগ করা এড়িয়ে চলুন।

৩) মুখ ও নাক ঢেকে রাখুন: রোগ ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে কাশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় টিস্যু বা কনুই দিয়ে মুখ ও নাক ঢেকে কাশুন।

৪) অসুস্থ হলে বাড়িতে থাকুন: কাশি সহ শ্বাসকষ্টের অসুস্থতার লক্ষণযুক্ত ব্যক্তিদের স্কুল, কাজ বা অন্যান্য ভিড়ে না গিয়ে বাড়িতে থাকা উচিত, যাতে অন্যদের মধ্যে সংক্রমণ ছড়িয়ে না যায়।

৫) প্রারম্ভিক রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা: আপনি বা পরিবারের সদস্যদের হুপিং কাশির লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

এই প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করে, আক্রান্ত ব্যক্তিরা হুপিং কাশির প্রভাব কমাতে পারবেন। উল্লেখ্য, হুপিং কাশি, কাশি সংক্রমণের এই গুরুতর রূপ। চিন, ফিলিপাইন, চেক প্রজাতন্ত্র এবং নেদারল্যান্ডের মতো বেশ কয়েকটি দেশে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে বলে জানা গিয়েছে। হুপিং কাশির ঘটনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটেনের রেকর্ড করা হয়েছে।

(Feed Source: hindustantimes.com)