নয়াদিল্লি: আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় এবার বেনজির পরিস্থিতি দুবাইয়ে। মঙ্গলবার ভারী বৃষ্টিতে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে সেখানে। রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, বিমানবন্দর এমনকি শপিং মলগুলিও জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে দুবাই বিমানবন্দর থেকে পরিষেবাতেও বিঘ্ন ঘটেছে। বিমানের উড়ান এবং অবতরণ, বিঘ্নিত হয়েছে দুই-ই। পড়শি দেশ ওমানে এমনিতেই প্রবল ঝড়-বৃষ্টিতে কমপক্ষে ১৮ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। সেই আবহে দুবাইও জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। (Dubai Floods)
পশ্চিম এশিয়ার অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গন্য হয় দুবাই। কিন্তু প্রবল ঝড়-বৃষ্টির জেরে যে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে, তাতে এই মুহূর্তে থমকে রয়েছে যাবতীয় কাজকর্ম। দুবাই মল এবং মল অফ দ্য এমিরেটস, জল ঢুকে গিয়েছে সেখানেও। জল ঢুকে গিয়েছে মেট্রো স্টেশনের ভিতরেও। কোথাও কোথাও হাঁটু পর্যন্ত জল জমে রয়েছে। নৌকায় চেপে পার হতেও দেখা গিয়েছে মানুষজনকে। (Dubai Flood Situation)
সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ছবি এবং ভিডিও সামনে এসেছে দুবাইয়ের, তাতে জলে খেলনার মতো ভাসতে দেখা গিয়েছে দামি গাড়িকে। রাস্তাঘাট সব জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। গগনচুম্বী বিল্ডিংগুলির সামনেও জল থৈ থৈ অবস্থা। দুবাই বিমানবন্দরে নামার কথা থাকলেও, বিপর্যয়ের জেরে একাধিক বিমানকে অন্যত্র ঘুরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। এই মুহূর্তে যা পরিস্থিতি, তাতে বুধবারও দুবাইয়ে পরিস্থিতি উন্নতির কোনও লক্ষণ নেই। স্কুল-কলেজ আপাতত বন্ধ। আমিরশাহির আল এইন এবং সৌদির আল হিলালের মধ্যে এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফুটবল সেমিফাইনাল ম্যাচেও আবহাওয়ার প্রভাব পড়েছে। ঝড়-বৃষ্টির জেরে ম্যাচ ২৪ ঘণ্টার জন্য স্থগিত রাখা হয়।
Dubai Airport right now
pic.twitter.com/FX992PQvAU— Science girl (@gunsnrosesgirl3) April 16, 2024
পড়শি দেশ ওমানের পর ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যয় নেমে এল দুবাইয়ে। ভারী বৃষ্টি হয়েছে বাহরাইনেও। কিন্তু তেলসমৃদ্ধ আমিরশাহি একটি মরুদেশ। সেখানে বৃষ্টির দেখাই পাওয়া যায় না। তাই আচমকা ভারী বৃষ্টি, বন্যা কেন, উঠছে প্রশ্ন। এর জন্য যদিও জলবায়ু পরিবর্তনকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। জলবায়ু পরিবর্তনের জেরেই আবহাওয়ার আচরণ খামখেয়ালি বলে দাবি তাঁদের।
Current weather in Dubai pic.twitter.com/v6dqxaA97A
— CLEAN CAR CLUB (@TheCleanCarClub) April 16, 2024
এমনিতে বছরে দুবাইয়ে গড়ে ১০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। সেই তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টাতেই ৮০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে মঙ্গলবারই সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আমিরশাহি সরকার। দেশের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, গত ৭৫ বছরে এত পরিমাণ বৃষ্টি দেখা যায়নি। খতম আল-শকলায় ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে ২৫৪.৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। দেড় বছরে যে বৃষ্টি হয়, তা একদিনে হয়ে গিয়েছে। ২৪ ঘণ্টায় ৫ ইঞ্চি জল জমে যায়।
আবহাওয়া বিভাগের তরফে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে। বন্যাদুর্গত এবং জলমগ্ন এলাকা থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে সকলকে। জলবায়ু পরিবর্তনের জেরেই এমন পরিস্থিতি বলে জানিয়েছে আমিরশাহি সরকারও। আগামী দিনে প্রায়শই এমন ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের।
(Feed Source: abplive.com)