মা বিড়ি বাঁধতেন। ছোটবেলাতেই না ফেরার দেশে চলে গিয়েছিলেন বাবা। পদে পদে প্রতিকূলতা। চরম দারিদ্রতা। অন্য কেউ হলে হয়তো পড়াশোনাটাই মাঝপথে ছেড়ে দিতেন। তবে নন্দলা সৈকিরন একেবারেই অন্য ধাতুতে তৈরি। তিনি এই চরম দারিদ্রতার মধ্য়েও ধীরে ধীরে নিজেকে তৈরি করেছেন। আর সেই যুবকই এবার ইউপিএসসিতে সর্বভারতীয় স্তরে ২৭ তম স্থানে রয়েছেন। তিনি পেশায় ছিলেন হার্ডওয়ার ইঞ্জিনিয়ার। বাবা ছিলেন তাঁতি। কিন্তু নন্দলা যখন একেবারে ছোট্ট তখন তাঁর বাবা মারা যান। এরপর মা বিড়ি বেঁধে সংসার চালিয়ে তাকে মানুষ করেন। আর সেই ২৭ বছর বয়সি যুবক ইউপিএসসিতে তাক লাগানো রেজাল্ট করলেন।
এনিয়ে দ্বিতীয়বারের প্রচেষ্টা ছিল তাঁর। আর সেখানেই সফল। তিনি একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে কাজ করতেন। সেই কাজের ফাঁকেই চলত পড়াশোনা।
প্রথমবার মাত্র ১৯ নম্বরের জন্য তাঁর সুযোগ হাতছাড়া হয়েছিল। এরপর তিনি দেখতে শুরু করেন ফাঁকটা ঠিক কোথায়। তিনি দুমাস ধরে ইউপিএসসির সিলেবাসগুলো ভালো করে দেখেন। কী ধরনের প্রশ্ন দেয়, কীসের উপর জোর দিতে হবে সবটা ভালো করে বোঝেন। এরপর তিনি বিভিন্ন ব্লগ পড়া শুরু করেন। আগের বার যারা শীর্ষস্থানে ছিল তাদের অভিজ্ঞতার সম্পর্কে তিনি জানার চেষ্টা করেন।
এরপর তিনি পরিকল্পনা করেন যে কীভাবে এগোতে হবে। সেই মতো তিনি পরিশ্রম করা শুরু করেন। সেখানে এতটুকু গাফিলতি করেননি তিনি।
তবে সরাসরি তিনি কোনও কোচিং ক্লাসে যেতেন না। একাধিক ক্ষেত্রে তিনি অনলাইন কোচিংয়ের উপর নির্ভর করতেন।
কাজ করতে করতেই পড়াশোনা। কীভাবে কম সময়ে বেশি পড়া যায় তার উপর জোর দিতেন। কারণ পয়সা উপায়ের জন্য তাকে পেশাটা বজায় রাখতে হচ্ছিল। সারা সপ্তাহ হাড়ভাঙা খাটুনি। পড়ার সময় পেতেন না। আর সপ্তাহের শেষে তিনি নিজেকে উজাড়় করে দিতেন ইউপিএসসির জন্য। আর যখন খুব দরকার পড়ত তখন ছুটি নিয়ে নিতেন। এছাড়া আর কোনও পথ ছিল না। অফিসের খাবার সময় তিনি ই পেপারগুলো পড়তেন। মূল বিষয় হল যাবতীয় প্রতিকূলতাকে সামলে তাঁকে এগিয়ে যেতেই হবে। সেই মানসিকতাতে সঙ্গী করে তিনি প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।
আর গরীর পরিবারের সেই হীরের টুকরো ছেলেই আজ সকলের মুখ উজ্জ্বল করেছে। তাঁর এই সাফল্য অনুপ্রেরণা অনেকের কাছে।
(Feed Source: hindustantimes.com)