ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে আতঙ্ক, আইপিএলে কোন মন্ত্রে ধিক্কার বদলে গেল প্রেমে?

ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে আতঙ্ক, আইপিএলে কোন মন্ত্রে ধিক্কার বদলে গেল প্রেমে?

সন্দীপ সরকার, কলকাতা: আইসিসি (ICC) টুর্নামেন্টে তিনি ব্যাট হাতে নামা মানে যেন ভারতের কাছে মূর্তিমান আতঙ্ক। ওভালে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে মহম্মদ শামি, মহম্মদ সিরাজ, রবীন্দ্র জাডেজাদের পিটিয়ে ১৬৩ রানে অস্ট্রেলিয়ার জয়ের ভিত গড়ে দিয়েছিলেন। হয়েছিলেন ম্যাচের সেরা। ট্রফি জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। ভারতের মাটিতে ওয়ান ডে বিশ্বকাপের ফাইনালে ফের কাঁটা তিনিই। ১২০ বলে ১৩৭ রানের ইনিংসে যশপ্রীত বুমরা, শামি, সিরাজদের বিধ্বস্ত করে ছেড়েছিলেন। গোটা টুর্নামেন্টে অপ্রতিরোধ্য দেখানো রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) টিম ইন্ডিয়ার অশ্বমেধ হ্যাঁচকা টানে মাটিতে নামিয়ে এনেছিলেন। অস্ট্রেলিয়াকে করেছিলেন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। ফের ম্যাচের নায়ক তিনিই।

ট্র্যাভিস হেড (Travis Head)। আইপিএলে (IPL 2024) খেলছেন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের (Sunrisers Hyderabad) হয়ে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ৪১ বলে ১০২ রানের ইনিংস খেলে হইচই ফেলে দিয়েছেন। নিজামের শহরে এখন বন্দিত হচ্ছেন অজ়ি তারকা ব্যাটার।

আইসিসি টুর্নামেন্টে ভারতীয় সমর্থকদের মন ভেঙে দেন। ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে তো আপনি চক্ষুশূল। অথচ আইপিএলে এত সমর্থন পাচ্ছেন। কীভাবে দেখেন বিষয়টা? মিশ্র অনুভূতি? দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলতে দলের সঙ্গে এখন রাজধানী নয়াদিল্লিতে রয়েছেন হেড। সেখান থেকে ভিডিও কলে এবিপি আনন্দকে হেড বললেন, ‘কোনও খারাপ অনুভূতি নেই। ভারতে খেলাটা সব সময় উপভোগ করেছি। ভারতে ক্রিকেট নিয়ে কী পরিমাণ আবেগ আর ভালবাসা রয়েছে, বুঝি। সমর্থকেরা তো নিজেদের দেশকে সমর্থন করবেনই। তাতে অন্যায়ের কিছু নেই।’ হেড যোগ করলেন, ‘ভারতের বিরুদ্ধে ভাল ইনিংস খেললে সকলে খুশি হবেন না, সেটা স্বাভাবিক। তবে আইপিএলে ভাল খেলাটা আমার দায়িত্ব। ভারতীয় সমর্থকদের আবেগটা বুঝি। আইপিএলে দলের হয়ে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেটা পালন করার চেষ্টা করছি।’

চলতি আইপিএলে ৫ ম্যাচে ২৩৫ রান। একটি সেঞ্চুরি, একটি হাফসেঞ্চুরি। প্রায় দুশো স্ট্রাইক রেট রেখে রান করছেন। যেখানে বিরাট কোহলি, কে এল রাহুলদের স্ট্রাইক রেট দেড়শোর নীচে। তা নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে বিস্তর। দেড়শোর নীচে স্ট্রাইক রেট থাকা ব্যাটাররা কি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন অচল হয়ে পড়ছেন?

হেড বলছেন, ‘স্ট্রাইক রেট নির্ভর করছে কোথায় ব্যাট করছি বা দলের ব্যাটিং লাইন আপ কেমন তার ওপর। সানরাইজার্স হায়দরাবাদে পাওয়ার প্লে-র ওভারগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছি। আগ্রাসী ব্যাটিং করার নির্দেশ রয়েছে আমাদের ওপর। এটাই আমাদের গেমপ্ল্যান। সেই অনুযায়ী ব্যাট করছি। স্ট্রাইক রেটেও তার প্রভাব পড়ছে।’ যোগ করছেন, ‘প্রত্যেক দলের নিজস্ব স্ট্র্যাটেজি থাকে। আমাদের ব্যাটিং লাইন আপ খুব শক্তিশালী। হেনরিখ ক্লাসেন, অভিষেক শর্মা, সবাই আগ্রাসী ক্রিকেট খেলে। তাই শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করছি।’

আইপিএলে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছে সানরাইজার্স। চলতি আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ২৭৭/৩ তুলেছিল হায়দরাবাদ। সেটিই ছিল সর্বোচ্চ। পরে নিজেদের সেই রেকর্ড ভেঙে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের বিরুদ্ধে ২৮৭/৩ –এর মাইলফলক গড়েছে হায়দরাবাদ। বোলারদের জন্য কি আরও কঠিন হচ্ছে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট? হেড বলছেন, ‘সব কিছুই নির্ভর করে পিচ কেমন তার ওপর। অনেক দলই রান তাড়া করার কৌশল নিচ্ছে। টসও খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অনেক বোলারই খুব ভাল বল করছে। অনেক ব্যাটার ভাল ব্যাটিং করছে। আমি মনে করি এখনও টি-টোয়েন্টিতে ব্যাটিং ও বোলিংয়ের ভারসাম্য রয়েছে। রান করতে হলে যথেষ্ট কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়। এমন নয় যে, আমরা সহজে রান করে দিচ্ছি।’

(Feed Source: abplive.com)