জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: এই নিয়ে পর পর পাঁচ বছর। পর পর পাঁচটি বছর ধরে বিশ্বে বাড়ছে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা। এবছরও রাষ্ট্রসংঘের এ সংক্রান্ত যে-রিপোর্ট সামনে এসেছে, তা ভয়-ধরানো। জানা গিয়েছে, এই মুহূর্তে সারা বিশ্বে ২৮ কোটির বেশি মানুষ খাদ্যসংকটে ভুগছে। গত বুধবার রাষ্ট্রসংঘ এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
কেন এরকম ঘটছে? জানা গিয়েছে, চরম আবহাওয়াই মূলত এই সংকট ডেকে এনেছে পৃথিবীতে। এর সঙ্গে জুড়ি বেঁধেছে অর্থনৈতিক মন্দাও। এই দুই ফলায় জেরবার সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবন। তবে দুর্গত এই মানুষগুলির জন্যে লড়াই করার লক্ষ্যে একত্রিত হয়েছে বিশ্বশক্তি। রাষ্ট্রসংঘের এজেন্সি, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং সরকারি ও অ-সরকারি সমস্ত সংস্থাই এই খাদ্যসংকটের সঙ্গে লড়াই করার জন্য কোমর বেঁধেছে।
বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় যুদ্ধ হচ্ছে। ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার, প্যালেস্টাইনের সঙ্গে ইজরায়েলের, ইরানের সঙ্গে ইজরায়েলের। এই যুদ্ধ বহু মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে, বিচ্ছিন্ন করেছে স্বাভাবিক জীবনযাপন থেকে। আবার যেখানে যুদ্ধ হচ্ছে না, সেখানেও পরিস্থিতি বেশ খারাপ। যেমন, পাকিস্তান। সেখানেও বহু মানুষ খেতে পাচ্ছেন না। সব মিলিয়ে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলিতে নানা ভাবে খাদ্যনিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।
গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (GHI) হল বৈশ্বিক, আঞ্চলিক এবং জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক ভাবে ক্ষুধা পরিমাপের ব্যবস্থা। ক’দিন আগে জানা গিয়েছিল, গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স ২০২৩-এ ভারত ১২৫টি দেশের মধ্যে ১১১তম স্থানে ছিল। ভারত সর্বোচ্চ ১৮.৭ শতাংশ শিশু অপচয়ের হার রিপোর্ট করেছিল। ২০২২ সালে ১২১টি দেশের মধ্যে ভারত ১০৭তম স্থানে ছিল। গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স ২০২৩-এ ভারতের স্কোর ২৮.৭। অর্থাৎ, ভারতে ক্ষুধার মাত্রা অত্যন্ত গুরুতর। ভারতের প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান ১০২ তম স্থানে, বাংলাদেশ ৮১তম স্থানে, নেপাল ৬৯তম, শ্রীলঙ্কা ৬০তম স্থানে। সাহারার দক্ষিণ, এশিয়া এবং আফ্রিকার দক্ষিণ অঞ্চলে ক্ষুধার মাত্রা সবথেকে বেশি।
তখনই বলা হয়েছিল, শিশু নষ্ট হওয়ার সর্বোচ্চ হারও ভারতেরই। এই সূচকে ভারতে স্কোর ১৮.৭ শতাংশ, যা ভারতীয় সমাজের তীব্র অপুষ্টিকেই প্রতিফলিত করে। ওই সূচক অনুসারে, ভারতে অপুষ্টির হার ছিল ১৬.৬ শতাংশ, পাঁচ বছরের কম বয়সীর মৃত্যুর হার ৩.১ শতাংশ। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছিল, ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যে রক্তাল্পতার প্রবণতা দাঁড়িয়েছিল ৫৮.১ শতাংশে। ২০২৩ গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স (GHI) দেখিয়েছিল যে, ২০১৫ সাল পর্যন্ত পৃথিবী প্রচুর উন্নতি করলেও বিশ্বব্যাপী খিদের বিরুদ্ধে কোনও উন্নতিই সে করতে পারেনি।
(Feed Source: zeenews.com)