.বলা হয়, সব বয়সের মানুষই প্রেমে পড়তে পারে। ভালোবাসার কোনও সীমা নেই।  তবে পরিবর্তনশীল সমাজে, বিবাহ সংক্রান্ত মানুষের চিন্তাধারা এবং অনেক ঐতিহ্যেরও পরিবর্তন হয়েছে যুগে যুগে কালে কালে।

সাধারণত আমাদের সমাজে পারিবারিক ভাবে সম্বন্ধ করে বিয়ের প্রথা থাকলেও এখন তরুণ প্রজন্ম প্রেমের বিয়ের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন, যাকে এককথায় বলা হয় লাভ ম্যারেজ।

সব ধরণের সম্পর্ক বা বিবাহের ক্ষেত্রেই কিছু ভাল মন্দ থাকে সম্পর্কের চরাই উৎরাই থাকে। চলুন এই প্রসঙ্গে আজ জেনে নেওয়া যাক বিয়ে সংক্রান্ত এই বিশেষ তথ্য।

সাধারণত বলা হয় প্রেম অন্ধ। কোন নারী কোন পুরুষের হৃদয়ে থাকবে বা কোন পুরুষ কোন নারীর হৃদয়ে নিজের স্থান করে নেবে তা এমনকি নাকি ঈশ্বরেরও অজানা। এখানে সব বিজ্ঞান ব্যর্থ।

তাই বয়সের ফারাক দেখে বৈবাহিক সম্পর্ক কতটা মজবুত হবে তা নিশ্চিত বলা যায় না। এরকম অনেক উদাহরণই আমাদের সামনে রয়েছে। ঠিক যেমন ক্রিকেটার সচিন তেন্ডুলকরের ক্ষেত্রে অনেকেই জানবেন তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি তাঁর চেয়ে চার বছরের বড়। এরকম আরও বহু উদাহরণ আছে আমাদের আশেপাশে।

অন্যদিকে অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া তাঁর স্বামী নিক জোনাসের চেয়ে ১০ বছরের বড়। অথচ দুজনেই ভাল বিবাহিত দম্পতিই শুধু নন, উত্তম বাবা-মা হয়েও সুখে কালযাপন করছেন।

বিবাহ বিশেষজ্ঞ তথা তারকা সিমা তাপারিয়া তাঁর নেটফ্লিক্স শো ইন্ডিয়ান ম্যাচমেকিংয়ে বিবাহের ক্ষেত্রে নারী পুরুষের বয়সের ফারাক নিয়ে আলোকপাত করেছেন। নিখুঁত সেলিব্রিটি দম্পতি হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছেন বিরাট কোহলি ও অনুষ্কা শর্মাকে। তাপারিয়ার মতে বিয়েতে “দুই-তিন বছরের পার্থক্য হলে ঠিক আছে, কিন্তু সাত বছরের ছোট হওয়া কাম্য নয়। এক্ষেত্রে দু’জনের মানসিক পরিপক্কতা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”

চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক, বিজ্ঞান অনুযায়ী স্বামী-স্ত্রীর বয়সের ব্যবধান ঠিক কত হওয়া কাম্য। অর্থাৎ স্বামী স্ত্রীর মধ্যে বয়সের আদর্শ ব্যবধান ঠিক কত।

উল্লেখ্য, এই প্রসঙ্গে আসার আগে, জেনে রাখা ভাল যে বিজ্ঞানে বিবাহের কোনও ধারণাই নেই। বরং এই আলোচনাকে এই ভাবে বলা যেতে পারে যে একজন পুরুষ ও একজন নারীর শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের ন্যূনতম বয়স কত হওয়া উচিত।

বিজ্ঞানে এর জন্য ইংরেজি শব্দ copulation (শারীরিক সম্পর্ক) ব্যবহৃত হয়েছে। এর মতে, নারী-পুরুষের শরীরে হরমোনের কাঙ্খিত পরিবর্তন ঘটলেই তাঁরা শারীরিক সম্পর্কে সক্ষম হন।

এই পরিবর্তন ৭ থেকে ১৩ বছর বয়সি মহিলাদের মধ্যে ঘটতে শুরু করে। যেখানে পুরুষদের মধ্যে এই পরিবর্তন ঘটে ৯ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে।

অর্থাৎ এই হরমোনের পরিবর্তন পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে তাড়াতাড়ি ঘটে। সেই কারণে তারা পুরুষদের তুলনায় তাড়াতাড়ি শারীরিক সম্পর্ক করতে সক্ষম হন।

তবে এই হরমোন পরিবর্তনের মানে এই নয় যে নারী বা পুরুষকে এই বয়সেই বিয়ে করতে হবে। বিশ্বের অনেক দেশেই যৌন মিলনের ন্যূনতম বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে। এই বয়স ১৬ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। আমাদের দেশে শারীরিক সম্পর্কের সর্বনিম্ন বয়সও ১৮ বছর।

এর পাশাপাশি ভারতে আইনগতভাবে বিয়ের ন্যূনতম বয়স নির্ধারণ করা আছে। মেয়েদের বয়স ১৮ বছর এবং ছেলেদের বয়স ২১ বছর রাখা হয়েছে। সেই আইন অনুযায়ী স্বামী-স্ত্রীর বয়সের মধ্যে তিন বছরের ব্যবধান এই দেশে আইনত গ্রহণযোগ্য

তবে সম্প্রতি মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ২১ বছর করা নিয়ে বিতর্ক চলছে। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি পিটিশনও দায়ের করা হয়। যদিও সুপ্রিম কোর্ট তা খারিজ করে দিয়েছে।

সামগ্রিকভাবে, ঐতিহ্যগতভাবে ভারতীয় সমাজে স্বামী-স্ত্রীর বয়সের মধ্যে তিন থেকে পাঁচ বছরের ব্যবধান গ্রহণযোগ্য হিসেবে ধরা হয়। একইসঙ্গে সমাজ আরও বলে যে একটি মেয়ের বয়স একটি ছেলের চেয়ে কম হওয়া কাম্য।

তবে, কখনও কখনও এই ব্যবধান ১০ থেকে ১৫ বছরেরও হয়। বিখ্যাত অভিনেতা শাহিদ কাপুর এবং তার স্ত্রী মীরা কাপুরের মধ্যে প্রায় ১৫ বছরের ব্যবধান রয়েছে। তথাপি তারকা দম্পতি কিন্তু সুখেই কাটিয়ে দিচ্ছেন বিবাহিত জীবন।

শর্তত্যাগ: শুধুমাত্র আপনাদের সচেতনতার উদ্দেশ্যেই এই প্রতিবেদনটি লেখা হয়েছে। আমরা এই লেখায় সাধারণ জ্ঞান ও দৈনন্দিন জীবনের কিছু সাধারণ তথ্য শেয়ার করেছি মাত্র। আপনি যদি কোথাও আপনার স্বাস্থ্য, জীবন ও বিজ্ঞানের যোগ সম্পর্কিত কিছু পড়েন তবে তা গ্রহণ করার আগে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

(Feed Source: news18.com)