পাইলট হতে পারেন না প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা, সার্জেন হিসাবেও তাঁদের পেশা সঠিক হবে না, তাহলে সিভিল সার্ভিসের মতো পেশায় প্রতিবন্ধী ব্যাক্তিদের কেন নিয়োগ দেওয়া হবে, এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসেছেন তেলাঙ্গানা ফাইন্যান্স কমিশনের সদস্য-সচিব- স্মিতা সবরওয়াল। অক্ষমতার মানদণ্ডের অধীনে আইএএস অফিসার হিসাবে পূজা খেদকারের নিয়োগ নিয়ে, চলমান বিতর্কের আগুনে যেন ঘি ঢেলে দিয়েছেন আইএএস স্মিতা।
এই সিনিয়র আমলা সদস্যের দাবি, গ্রাউন্ড ওয়ার্কের কাজ করাটাও প্রতিবন্ধীদের জন্য সহজ বিষয় হতে পারে না। এ প্রসঙ্গে এক্স প্ল্যাটফর্মে প্রশ্ন তুলে অফিসার লিখেছেন, ‘ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের প্রতি যথাযথ সম্মানের সঙ্গে এটাই বলব যে একটি এয়ারলাইন কি একজন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে পাইলট হিসাবে নিয়োগ করে? নাকি আপনি একজন প্রতিবন্ধী সার্জনকে বিশ্বাস করবেন। #AIS (IAS/IPS/IFoS) অফিসারদের কাজই হল ফিল্ড-ওয়ার্ক, এক নাগাড়ে কাজ করে যাওয়া, মানুষের অভিযোগ শোনা, যার জন্য শারীরিক সুস্থতা একান্ত প্রয়োজনীয়, তাহলে কেন এই প্রিমিয়ার পরিষেবার প্রথম স্থানে এই কোটা রাখা হবে!’
পাল্টা দিয়েছেন শিবসেনা এমপি
স্বাভাবিকভাবেই, সাভারওয়ালের পোস্টটি তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই বলেছেন যে অফিসারের এই যুক্তির কোনও মানে নেই। তিনি অজ্ঞ। শিবসেনার এমপি প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী বলেছেন, আমলাদের এমন দৃষ্টিভঙ্গি যে থাকতে পারে, তা কল্পনারও অতীত। কীভাবে তাঁরা তাঁদের সীমিত চিন্তাভাবনা এবং বিশেষাধিকারও ফলাচ্ছেন তা সত্যিই দেখতে আকর্ষণীয়। তাঁর দাবি, ‘আমি আমলাদের কখনও প্রতিবন্ধীদের মতো কোটার সমালোচনা করতে দেখিনি, বৈচিত্র্য এবং অন্তর্ভুক্তির প্রচার করে এমন একটি রিজার্ভেশন বাতিলের জন্য সিস্টেমে প্রবেশ করতে দেখিনি।’
চড়া সুরে আক্রমণ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও এনসিপিইডিপির ট্রাস্টি
সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র অ্যাডভোকেট করুণা নন্দী বলেছেন, ‘ এটা দেখে অবাক হয়েছি যে একজন আইএএস অফিসার অক্ষমতা সম্পর্কে এতটা অজ্ঞ কীভাবে হতে পারেন।’ এনসিপিইডিপির ট্রাস্টি অরবিন্দ গুপ্তা আবার লিখেছেন, একজন ট্রাস্টি হিসাবে, আমরা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উদ্ভাবনী ফলাফল দেখতে পাই, যা অনুপ্রেরণাদায়ক। অথচ আমরা সচেতনতার অভাবের কারণে তাদের প্রতিদিন সংগ্রাম করতে দেখি। এনসিপিইডিপি অক্ষম ব্যক্তিদের ইউপিএসসি পরীক্ষায় সহায়ক। যদি তাঁদেরও সার্বজনীন ইকোসিস্টেম দেওয়া হয়, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও মূলধারার সমাজে সমান ভিত্তিতে অবদান রাখতে পারেন, তাই উন্নত ভারত গড়তে হলে আগে আমাদের শিক্ষিত হতে হবে।
কে এই পূজা খেদকার
২০২৩ সালের ব্যাচে আইএএস অফিসার হওয়ার জন্য ট্রেনিং নিচ্ছিলেন পূজা খেদকার। কিন্তু তিনি প্রতিবন্ধী হওয়ায়, এই পেশা তাঁর জন্য নয় বলে দাবি উঠেছে। কয়েক সপ্তাহ আগে পুনের কালেক্টর সুহাস দিওয়াসে মহারাষ্ট্রের মুখ্য সচিব সুজাতা সৌনিককে চিঠি লিখে দাবি জানিয়েছিলেন এমনটাই। প্রশ্ন উঠেছিল যে কীভাবে তিনি ইউপিএসসির কঠিন নির্বাচন প্রক্রিয়া পেরোলেন। যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও, শারীরিক অক্ষমতা এবং ওবিসি প্রার্থীতার জন্য ছাড় দেওয়া হয়েছিল তাঁকে, এমনটাই অভিযোগ তোলা হয়েছে। তাই এখন অভিযোগের নিষ্পত্তি করতে, আগামী দুই বছরের জন্য তাঁর ট্রেনিং স্থগিত রাখা হয়েছে, এবং আইএএস নির্বাচন কেন্দ্রের একটি প্যানেল পূজার নিয়োগ তদন্ত করছে।
(Feed Source: hindustantimes.com)