শিশুর ঘুমের মধ্যে বলা কথাকে অবহেলা করছেন! ফল কতটা মারাত্মক হতে পারে? জেনে নিন

শিশুর ঘুমের মধ্যে বলা কথাকে অবহেলা করছেন! ফল কতটা মারাত্মক হতে পারে? জেনে নিন

ঘুমের মধ্যে নবজাতক হাসে, কাঁদে— দেয়ালা করে। সেই দিকে তাকিয়েই সময় কেটে যায় মায়ের। আবার খানিক বড় হওয়ার পরও শিশু ঘুমের মধ্যে কথা বলে। কার সঙ্গে কী কথা বলে, তা নিয়ে প্রশ্নের শেষ নেই। কত গল্পগাথাই জড়িয়ে রয়েছে এর সঙ্গে।

কিন্তু ঠিক কেন শিশু ঘুমের মধ্যে কথা বলে? এটা কি কোনও রকম অসুস্থতা, অথবা এই অভ্যাস কি ডেকে আনতে পারে কোনও সমস্যা? জেনে নেওয়া যাক এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় ইএনটি সার্জন ডা. বিকাশ আগরওয়ালের কাছ থেকে।

ঘুমের কথা বলার কারণ

কেন শিশুরা ঘুমের কথা বলে, তার যথার্থ কারণ আজও খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। ঘুমের মধ্যে কথা বলার এই অভ্যাসকে বিজ্ঞানের পরিভাষায় সোমনিলকি (Somniloquy) বলা হয়। সাধারণত এথেকে কোনও শারীরিক বা মানসিক সমস্যা হয় না। ঘুমের অপেক্ষাকৃত সক্রিয় স্তরে (Non-REM) এই ঘটনা ঘটে।

অনেক সময় মানসিক চাপ, জ্বর, অনিদ্রা বা অনিয়মিত ঘুমের কারণেও ঘটতে পারে। তবে অনেক সময় দেখা যায় নাক বন্ধ থাকার কারণে ঘুমের মধ্যে শিশুকে মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে হচ্ছে। সেই সময়ও শিশু কথা বলতে পারে। নাকের ভিতরে বিভাজিকা পর্দায় সমস্যা থাকলে এমন হতে পারে। আবার কোনও অ্যালার্জিও সমস্যাটিকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। তবে এই বিষয়ে এখনও বিস্তারিত গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।

আমাদের নাকের ডান ও বাম দিককে ভাগ করে হাড় এবং তরুণাস্থির পাতলা প্রাচীর বা সেপ্টাম। অনেক সময় এই সেপ্টামের অবস্থান স্বাভাবিক নাও হতে পারে। তার ফলে যে কোনও একটি নাসাপথ সরু হতে পারে। কখনও কোনও আঘাত থেকেও এমন হতে পারে।

শিশুর বিকাশের সময় তারা ঘুমের মধ্যে কথা বলে এটা স্বাভাবিক। তবে নাসাবিভাজিকার সমস্যায় (Deviated nasal septum/DNS) নাকের গঠন বিকৃত হলে শিশুর ঘুমে ব্যাঘাত হতে পারে। প্রায় ৬০-৬৫ শতাংশ শিশুর দীর্ঘমেয়াদী সুস্থতাও বিঘ্নিত হয়। এতে শ্বাস নেওয়ার সমস্যা, ঘুমের ব্যাঘাত, নাক ডাকা, শ্বাসকষ্ট, স্লিপ অ্যাপনিয়াও হতে পারে।

এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ডিকনজেস্ট্যান্ট বা ন্যাসাল স্প্রের মাধ্যমেই সমস্যা সমাধান করা যায়। প্রয়োজন হলে সাধারণ অস্ত্রোপচারের (সেপ্টোপ্লাস্টি) মাধ্যমেও ত্রুটি সংশোধন করা যায়। এর পর কিছু শ্বাসের ব্যায়াম করতে হতে পারে।

মনোবিজ্ঞান

ঘুমের মধ্যে বলা কথা, শিশুর মনের গভীর থেকে উঠে আসা বক্তব্য। তা থেকে তার মানসিক পরিস্থিতি বিবেচনা করা যেতে পারে। এটা একজন মনোবিদের পক্ষে খুব সুবিধাজনক পরিস্থিতি, যেখানে তিনি শিশুর অবচেতনের কথা জানতে পারছেন। কিন্তু তিনি যদি তেমন সমস্যা না দেখেন তাহলে ইএনটি-র সঙ্গে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

(Feed Source: news18.com)