ভিনেশের সাপোর্ট স্টাফদের বিরুদ্ধে শুরু হবে তদন্ত, দাবি কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতির

ভিনেশের সাপোর্ট স্টাফদের বিরুদ্ধে শুরু হবে তদন্ত, দাবি কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতির

প্যারিস অলিম্পিক্স থেকে ভিনেশ ফোগটের দুর্ভাগ্যজনক প্রস্থানের বিষয়টি হজম করতে পারছে না ভারতের কেউই। কুস্তি ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার (ডব্লিউএফআই) সভাপতি সঞ্জয় সিং তো বলেই দিয়েছেন, এই ঘটনা কেন ঘটল, তাঁর জন্য ভিনেশের সাপোর্ট স্টাফদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করা হবে। মাত্র ১০০ গ্রাম ওজন বেশি হওয়ার জন্য ফাইনালের কয়েক ঘণ্টা আগে ভিনেশকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। বুধবার সকালে ফাইনাল ম্যাচের আগে, তাঁর যখন ওজন মাপা হয়, তখন দেখা যায় ১০০ গ্রাম বেশি ওজন রয়েছে ভারতের তারকা কুস্তিগীরের। আর তাতেই স্বপ্নভঙ্গ হয় ভিনেশ সহ গোটা দেশের।

সঞ্জয় সিং, যিনি বুধবার বিকেলে ইন্ডিয়া টুডে-কে বলেছেন, এই ওজন বাড়ার ক্ষেত্রে ভিনেশের কোনও দোষ ছিল না। এর দায় নিতে হবে কোচ উলার আকোস এবং ফিজিয়ো অশ্বিনী জীবন পাটিল সহ ভিনেশের সাপোর্ট স্টাফদের। গোটা ভারত যখন অলিম্পিক্সে প্রথম মহিলা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখছিল, তখন ভিনেশ ফোগটের ওজন বেশি থাকার কারণে বড় ধাক্কা লেগেছে ভারতের স্বপ্নে।

পুরো ঘটনায় বিরক্ত সঞ্জয় সিং বলেছেন, ‘এটা আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে, এত ভালো কুস্তি লড়ে ফাইনালে ওঠার পরেও ১০০ গ্রাম ওজন বেশি হওয়ায় ভিনেশকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে। ভারত সরকার ওর কোচ, পুষ্টিবিদ এবং ফিজিয়ো সবটা সরবরাহ করেছে। ওরা সকলে গেমস ভিলেজে ওর সঙ্গেই রয়েছে, তবুও…’।

অযোগ্যতার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সঞ্জয়ের দাবি, ‘ওর ওজন ২ দিন ধরে স্থির ছিল, কিন্তু রাতারাতি তা বেড়ে যায় কী করে? এর কারণ কেবল ওর পুষ্টিবিদ এবং ওর কোচই বলতে পারবে।’ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেছেন সঞ্জয় সিং। তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে ডব্লিউএফআই আইনের সাহায্যও নেবে। পিটি ঊষা গেমস ভিলেজে পৌঁছেছেন, আমরা আলোচনা করব এবং আইওসি এবং ইউডব্লিউডব্লিউ-এর বিরুদ্ধে কী ভাবে প্রতিবাদ করব, তা সিদ্ধান্ত নেব…’।

ভিনেশের স্বাভাবিক ওজন প্রায় ৫৭ কেজি। কিন্তু তিনি এবার প্যারিসে ৫০ কেজি বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিলেন। সেমিফাইনাল ম্যাচের আগে ভিনেশের ওজন ৪৯.৯ কেজি ছিল। তবে ম্যাচের পরে তাঁর ওজন বেড়ে হয় ৫২.৭ কেজি। এর পর ওজন কমানোর জন্য মরিয়া হয়ে চেষ্টা করেছিলেন ভিনেশ। সারা রাত ধরেই ওজন কমানোর চেষ্টা করে গিয়েছিলেন ভিনেশ। জগিং, স্কিপিং এবং সাইক্লিং করেছিলেন সারা রাত। ওজন কমানোর জন্য ঘাম ঝরাচ্ছিলেন। চুলও কেটে ফেলেছিলেন তিনি। খাবার, পানীয় সব বাদ দিয়েছিলেন। শরীর থেকে রক্ত পর্যন্ত বার করেছিলেন। তাতে অনেকটাই ওজন কমিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। কিন্তু তার পরেও ১০০ গ্রাম ওজন বেশি থেকে যায়। সেই কারণেই প্রতিযোগিতা থেকে বাতিল করে দেওয়া হয় ভিনেশকে।

এটি ছিল ভিনেশ ফোগটের তৃতীয় অলিম্পিক্স। তবে মহিলাদের ৫০ কেজি বিভাগে তিনি প্রথম বার অংশ নিলেন। এর আগে, হরিয়ানার কুস্তিগীর ৫৩ কেজি বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। যাইহোক, তরুণ অন্তিম পাঙ্ঘাল ৫৩ কেজি বিভাগে ভারতের জন্য একটি কোটা নিশ্চিত করার পরে বাধ্য হয়েই ৫০ কেজি বিভাগে ট্রায়ালে যোগ্যতা অর্জন করে অলিম্পিক্সেক ছাড়পত্র পান ভিনেশ।

এই পরিস্থিতি তার প্রখ্যাত হাঙ্গেরিয়ান কোচ উলার আকোস এবং ফিজিয়ো অশ্বিনী জীবন পাটিল সহ তাঁর সাপোর্ট স্টাফদের ভূমিকা এবং দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, মঙ্গলবার রাতে ভিনেশের ওজন কয়েক কিলো বেড়েছে। তাঁর ওজন কমানোর জন্য একটি মরিয়া প্রচেষ্টাও চালানো হয়েছেষ ভিনেশ গোটা রাত না ঘুমিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যান। ন্যূনতম জল খেয়েছেন এবং অলিম্পিক্সের গেমস ভিলেজের জিমে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটিয়েছেন।

(Feed Source: hindustantimes.com)