স্তন্যপানের সঙ্গে কি মানসিক অবসাদের কোনও সম্পর্ক রয়েছে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞ?

স্তন্যপানের সঙ্গে কি মানসিক অবসাদের কোনও সম্পর্ক রয়েছে? কী বলছেন বিশেষজ্ঞ?

বেশ কিছু মহিলার ক্ষেত্রে কখনও কখনও স্তন্যপান মন খারাপ বা বিষণ্ণতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এই বিষয়টা অবশ্য অনেকেই জানেন না। আজ এই প্রসঙ্গে আলোচনা করবেন পুণের অঙ্কুরা হাসপাতালের কনসালট্যান্ট নিওনেটোলজিস্ট এবং পেডিয়াট্রিশিয়ান ডা. অনুষা রাও।

তিনি বলেন, সন্তানকে স্তনদুগ্ধ পান করানোর সময় বহু মহিলার মধ্যে বিষণ্ণতা কাজ করে। মানসিক অবসাদের এই অবস্থাকে ডি-এমইআর বা ডিসফোরিক মিল্ক ইজেকশন রিফ্লেক্স বলা হয়। এমন পরিস্থিতিতে পড়লে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। আসলে বহু মহিলাই এই অবস্থার মধ্যে দিয়ে যান। সদ্যোজাত সন্তানকে সঠিক ভাবে স্তন্যপান করাতে না পারার জন্য নতুন মায়েরা অপরাধবোধে ভোগেন। যার জেরে প্রসব পরবর্তী অবসাদ ঘিরে ধরে। কেন নতুন মায়েদের মধ্যে বিষাদ আসে, সেটাই দেখে নেওয়া যাক।

স্তন্যদানকারী মায়েদের মানসিক বিষাদের কারণ:
১. স্তন্যদান আসলে মা আর সন্তানের মধ্যে একটা সুন্দর সম্পর্কের পরিচায়ক। আবার অন্য দিকে গবেষণা বলছে যে, স্তন্যপান এবং পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশনের এক গভীর যোগ রয়েছে। আসলে সন্তানকে স্তন্যদুগ্ধ পান করানোর সময় মায়ের দেহে হরমোনজনিত পরিবর্তন আসে। যা ডিপ্রেশনের জন্য দায়ী।
২. স্তনদুগ্ধদানকারী মায়েরা অনেক সময় ভাল ভাবে জীবনযাপন করতে পারেন না। এই অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মধ্যে থাকে অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস, সন্তানকে নিয়ে মানসিক চাপ এবং নিদ্রার ঘাটতি।
৩. নতুন মায়েদের মানসিক বিষয়টাও থাকে। এই সময় সদ্যোজাত সন্তানের প্রতি কর্তব্য নিয়ে অপরাধবোধে ভোগেন মায়েরা। এটা বিষণ্ণতা অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়।
৪. সঙ্গীর থেকে সমর্থন কিংবা সাহায্য না পাওয়াও মানসিক অবসাদের একটা বড় কারণ। আবার সন্তানের জন্মের পরে মায়ের শারীরিক সমস্যাও হতে পারে, যা তাঁর মানসিক বিষণ্ণতা বাড়িয়ে দিতে পারে।
৫. এর পাশাপাশি সামাজিক চাপ তো থাকেই। এটাও পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশনের অন্যতম বড় কারণ। সমাজের চাপের জেরে বহু মা-ই স্তন্যপান করানোর বিষয়ে অপরাধবোধে ভোগেন। এমনকী তাঁরা নিজেদের প্রতি সন্দিহান হয়ে পড়েন। এতে স্তনদুগ্ধ পান করানোর সময় মানসিক অবসাদ ঘিরে ধরে।

মানসিক অবসাদের উপসর্গ:
মানসিক বিষণ্ণতা ঘিরে ধরলে হতাশা, বিরক্তি, ভয়-আতঙ্ক, উত্তেজনা এবং একাকীত্বের মতো ভাবনা আসে। যে কোনও কাজেই উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন তাঁরা। যখন-তখন যা খুশি খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয়। নিজেকে রুগ্ন এবং অস্থির লাগে। ক্ষণে ক্ষণে ম্যুড স্যুয়িংও হতে থাকে।

(Feed Source: news18.com)