দু সপ্তাহের মধ্যেই…আদালতের নির্দেশের পরে উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে তৎপর SSC

দু সপ্তাহের মধ্যেই…আদালতের নির্দেশের পরে উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে তৎপর SSC

কলকাতা: উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ইতিমধ‍্যেই ছাড়পত্র দিয়েছে হাইকোর্ট। উচ্চ প্রাথমিকে প্রায় ১৪ হাজার শূন্যপদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নতুন করে মেধাতালিকা প্রকাশ করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। হাইকোর্টের নির্দেশের পরেই নিয়োগে তৎপর স্কুল সার্ভিস কমিশন।

গতকাল বুধবার হাইকোর্টের নির্দেশ জারি হয়েছে। এবার নিয়োগ সংক্রান্ত বৈঠকে স্কুল সার্ভিস কমিশনের আধিকারিকরা। স্কুল সার্ভিস কমিশন সূত্র অনুযায়ী, দু সপ্তাহের মধ্যেই প্যানেল প্রকাশের লক্ষ্যমাত্রা। হাইকোর্টের নির্দেশের কয়েকটি অংশ আরও বিশদে আদালতের কাছে জানতে চাইবে এসএসসি।

বুধবার হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পরেই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সোশ‍্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে নিয়োগ সম্পর্কে জানান। দুর্গাপুজোর আগেই নিয়োগ হবে বলে ইঙ্গিত দিয়ে দিলেন শিক্ষামন্ত্রী। এসএসসি দ্রুততার সঙ্গে এই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করবে বলে পোস্টে জানান ব্রাত্য।

প্রসঙ্গত, উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগের জন্য SSC টেট বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল ২০১৫ সালের অগাস্ট মাসে। সেই সময় ৭-৮ লাখ পরীক্ষার্থী বসেন টেটে। ২০১৫ সালেই ফল প্রকাশ হয় উচ্চ প্রাথমিক টেটের। এসএসসি উচ্চ প্রাথমিক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয় ২৩.০৯.২০১৬ তারিখে। ১৪৩৩৯ শূন্যপদে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়।

২০১৬ সালে টেট ফলপ্রকাশ হয় আর নিয়োগের জন্য ভেরিফিকেশন হয় ২০১৯ সালে। এ নিয়ে একগুচ্ছ অভিযোগে মামলা হয় হাইকোর্টে। অভিযোগ ওঠে, ফর্ম ফিলাপ না করেই, টেটের নম্বর বাড়িয়ে ইন্টারভিউতে ডাকা হয়েছে। নম্বর বিভাজন প্রকাশ না করেই মেধাতালিকা প্রকাশ করার অভিযোগের পাশাপাশি পরীক্ষায় না বসেই ভেরিফিকেশন এবং ইন্টারভিউ হয় ১১ ডিসেম্বর ২০২০ সালে।

এই মামলায় বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য পুরো মেধাতালিকা বাতিলের নির্দেশ দেন। নতুন করে ভেরিফিকেশন পর্ব থেকে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। এরপর জুন ২০২১-এ, নতুন করে ইন্টারভিউ লিস্ট প্রকাশ পায়। এই নতুন ইন্টারভিউ লিস্টকে চ্যালেঞ্জ করেও ফের মামলা হয়। সে সময় তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নম্বর বিভাজন সহ ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ করতে নির্দেশ দেন এবং বাকি অভিযোগ স্কুল সার্ভিস কমিশনকে খতিয়ে দেখে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়। এরপর মামলা পৌঁছয় ডিভিশন বেঞ্চে। বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ নিয়োগ স্থগিতাদেশ দেয়।

নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেয় হাইকোর্ট। এবার কিন্তু ভুল শোধরাতে এসএসসি-কে নির্দেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ। ইন্টারভিউ তালিকায় ১৪৯২ জনের ভুল ধরে এসএসসি, তাদের ইন্টারভিউ তালিকা থেকে নাম বাদ যায়। পাশাপাশি, ৭০০ জনের নাম নথিভূক্ত হয় ইন্টারভিউ তালিকায়৷ মণিরাজ ঘোষ সহ মামলাকারীরা আবারও আবেদন করে বলেন, যোগ্যরা ডাক পাচ্ছে না। কারণ টেট নম্বর নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়।

এবার মামলা আসে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে। বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, কাউন্সেলিং চলবে তবে চাকরিতে নিয়োগ করা যাবে না আদালতের অনুমতি ছাড়া। এর মাঝে ৮৯০০ জনের কাউন্সেলিং সম্পূর্ণ হয়।

এরপর আসে আরও একটি আবেদন, এসএসসি উচ্চপ্রাথমিক চাকরি পরীক্ষা TET নিয়েছে NYSA কমিউনিকেশন। এই ওএমআর কারচুপি হয়ে থাকতে পারে বলে অভিযোগ ওঠে। তা খতিয়ে দেখার আবেদন জানানো হয় ডিভিশন বেঞ্চ। এই মামলার শুনানি শেষ হয় জুলাই, ২০২৪-এ। আজ সেই মামলারই রায়দান হল।

(Feed Source: news18.com)