শুভব্রত মুখার্জি:- ভারতীয় ফুটবল এবং এআইএফএফের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে ক্রোয়েশিয়ার তারকা কোচ ইগর স্টিম্যাচের। ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ কোয়ালিফায়ারের দ্বিতীয় রাউন্ডে ভারত বিদায় নেওয়ার পরেই ইগর স্টিম্যাচকে বরখাস্ত করে এআইএফএফ। ভারতীয় ফুটবলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয় ইগরের।এরপর সম্প্রতি ইগরকে তাঁর চুক্তি অনুযায়ী আগেই বরখাস্ত করার কারণে ৩.৩৬ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ভারতকে। এই বিষয়ে সম্মত হয়েছিল দুই পক্ষ।
ইগর স্টিম্যাচ ছাড়ার পরে ভারতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েছেন মানোলো মার্কুয়েজ। তাঁর প্রশিক্ষণে ভারত নেমেছিল ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপে খেলতে। সেখানে তারা প্রথম ম্যাচ ড্র করলেও দ্বিতীয় ম্যাচে সিরিয়ার কাছে বড় ব্যবধানে হেরে গিয়েছে। এআইএফএফের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হলেও ভারতীয় ফুটবলের খোঁজ খবর এখনও রাখেন ইগর স্টিম্যাচ। তিনি ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপে ভারতের পারফরম্যান্সও দেখেছেন। এমন আবহেই ক্রোয়েশিয়ার জাগরেভ থেকে তিনি এক টেলিফোনিক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন হিন্দুস্তান টাইমসকে। সেখানে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘টাকায় বিশ্বাসী নই আমি। আমি ভালো কিছু করায় বিশ্বাসী। ভবিষ্যত বলবে আমি কতটা ঠিক ছিলাম।’
ভারতে কি আর কোচ হিসেবে ফিরবেন? কী রয়েছে তাঁর ভবিষ্যত পরিকল্পনা? এইরকম নানা বিষয়ে সোজাসাপ্টা উত্তর তিনি দিয়েছেন ইগর স্টিম্যাচ। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি এখনও বুড়ো হয়ে যাইনি। আমি যথেষ্ট উচ্চাকাঙ্খী। যদি এশিয়ান পর্যায়েই কোন কিছু জেতার অবস্থায় আপনি না থাকেন তাহলে আর আলোচনা করে কি লাভ? আমি টাকার লোভী না। আমি ভালো কিছু তৈরি করার পক্ষপাতী।’
এআইএফএফের কাছে ক্ষতিপূরণ নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘আমি এটা করেছি এই কারণেই কারণ আমি যাতে আরও ভালো কিছুর (কোচ হিসেবে) অফার পাই। আমি কিন্তু চাইলেই আরও চাপ বাড়াতে পারতাম। সমস্ত টাকাটা আমি আদায় করে নিতে পারতাম। কিন্তু আমি কিন্তু সেটা করিনি। কারণ আমি এই ক্ষতিপূরণটা না নিলে পরবর্তীতে যখন কোচ হিসেবে আমি নতুন কোন অফারের বিষয়ে কথা বলতে যাব তখন আর আমার কাছ অন্যপক্ষের কাছে দর হাঁকানোর সুযোগ থাকত না।’
তিনি আরও বলেন, ‘এআইএফএফের প্রেসিডেন্ট কল্যান চৌবের কাছে আমি যখন সময় চেয়েছিলাম উনি তখন বুঝতেই পারেননি যে আমাকে সময়টা দিলে আমি ক্ষতিপূরণ না নিয়ে নিজে থেকেই ছেড়ে চলে যেতাম। কল্যান চৌবে তখন অন্য বিষয় নেই কথা বলতে ব্যস্ত ছিল। তাঁর আমাকে দেওয়ার মতন সময় কোথায় ছিল! আমি ভালোভাবেই সরে যেতে চেয়েছিলাম। আমি কখনও কোথাও আলোচনার দরজা বন্ধ করে দিইনি। ভবিষ্যত বলে দেবে যে আমি কতটা ঠিক ছিলাম।’
এরপরে তিনি বলেন, ‘আমি জানতাম যে ভারতীয় ফুটবলকে একটা ভালো জায়গায় পৌঁছাতে গেলে কী করতে হবে। কিন্তু যারা ফুটবলটা চালান তাঁরা এইসব নিয়ে কোন গ্রাহ্য করেননি। আমাদের কঠিন সময় গেছে। দলটাকে আমরা ঢেলে সাজিয়েছি। তারপর এমন একটা দল গড়েছিলাম যারা যে কোন বিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়তে পারে। তবে জাতীয় দলের যখন সবথেকে বেশি দরকার ছিল তখন আইএসএল থেকে কয়েকটা সপ্তাহ তারা জাতীয় দলকে দিতে পারেনি। তাই আমি আর কী করব? ঠিক আছে এখন অন্য কেউ চেষ্টাটা করে দেখুক।’
(Feed Source: hindustantimes.com)