‘বাংলাদেশে মন্দির পাহারা দেবার জন্য মাদ্রাসার ছাত্রদের বসিয়ে…’: তসলিমা নাসরিন

‘বাংলাদেশে মন্দির পাহারা দেবার জন্য মাদ্রাসার ছাত্রদের বসিয়ে…’: তসলিমা নাসরিন

হাসিনা সরকারের পতনের পরে বাংলাদেশের হিন্দুদের দুরবস্থার নানা খবর সামনে আসছে। নানা জায়গা থেকে খবর আসছে, সংখ্যালঘু হিন্দুরা বেশ খানিকটা ভয়েই আছেন। শুধু তাই নয়, সোশ্যাল পোস্টে সেরকম দাবিই ক্রমাগত করে চলেছেন বাংলাদেশের লেখিকা তসলিমা নাসরিন। যিনি নিজের দেশ থেকে বিতারিত হওয়ার পর, বর্তমানে ভারতেই রয়েছেন।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার তাঁর নিজের দেশের হিন্দুদের আশ্বস্ত করেছিলেন, প্রতিবারের মতো এবারও দুর্গাপুজো হবে। সঙ্গে বিগত কয়েক বছরে পুজোমণ্ডপে হামলা চালানোর মতো যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছিল, সেগুলো আটকাতে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তাও থাকবে। কিছু স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে, যারা পাহাড়া দেবে মণ্ডপে।

তবে এরপর ফতেয়া জারি করা হয় যে, প্যান্ডেলে, আজানের পাঁচ মিনিট আগে থেকে সমস্ত ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান বন্ধ করা বাধ্যতামূলক হবে। আর আজান ও নামাজের সময় লাউডস্পীকারে স্তোত্র শোনা বা ধর্মীয় মন্ত্র পড়া, ঢাক বাজানো কিছুই যাবে না। আজান শেষ হওয়ার পর, তা ফের শুরু করা যাবে। আর এই নির্দেশে চটেছেন অনেকেই। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মহম্মদ জাহাঙ্গির আলম চৌধুরী এই ঘোষণা করেন মঙ্গলবার।

তসলিমা নাসরিনও বাংলাদেশের পুজো নিয়ে পোস্ট করলেন ফেসবুকে। তিনি লিখলেন, ‘বাংলাদেশ আপাদমস্তক একটি সাম্প্রদায়িক দেশ। মন্দির পাহারা দেবার জন্য মাদ্রাসার ছাত্রদের বসিয়ে একে অসাম্প্রদায়িক প্রমাণ করতে চাওয়া রীতিমত অসততা। হিন্দুদের মন্দিরে, বাড়িঘরে, দোকানপাটে মাদ্রাসার ছাত্ররা প্রায়ই হামলা করে। ভক্ষককে রক্ষকের ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখলে ইউনুস বাহিনীর গায়ে পুলক লাগতে পারে, হিন্দুদের গায়ে পুলক লাগবে না।’

এখানেই শেষ নয়, তিনি একটি পোস্টও শেয়ার করেন, যেখানে লেখা আছে, ‘মাদ্রাসা ছাত্র দিয়ে পুজামন্ডপ পাহারা বসানো স্থুল ও গ্রাম্য আইডিয়া৷ গেটের সামনে একদঙ্গল মাদ্রাসা ছাত্র বসা দেখলে পুজায় কেউ যাবে না৷ পুজাগুলো পুজার মতো সহজ স্বাভাবিক থাকুক৷ পুজার স্থানগুলো শিশু ও নারীদের প্রাণবন্ত পদচারনায় মুখরিত হয়ে উঠুক৷ বরং যাদের দ্বারা পুজামন্ডপ আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা, মাদ্রাসা ছাত্ররা তাদেরকে পাহারা দিক৷’

বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম অনুসারে, পদ্মপাড়ের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গির জানিয়েছেন, মণ্ডপের নিরাপত্তার জন্য রাতে অন্তত তিন জন এবং দিনে কমপক্ষে দু’জন স্বেচ্ছাসেবককে দায়িত্ব দেওয়া হবে। এবছর সেই দেশে প্রায় ৩২ হাজার পুজো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মন্দির কমিটিগুলির জন্য এবার ইউনুস সরকার বরাদ্দ বাড়িয়ে চার কোটি টাকা করে দিয়েছে।

এবার গোট বিশ্বের নজরে থাকবে পড়শি দেশ। ইউনুস সরকার আসার পরই যেভাবে হিন্দু-নিগ্রহের খবর আসছে, সেখানে কতটা শান্তিতে হয় দেবীদুর্গার আরাধনা।

(Feed Source: hindustantimes.com)