সিবিআই সেজে প্ৰথমে রেলের এক অধিকর্তাকে হুমকি দেন প্রতারকরা। ভয় পেয়ে যেই ফাঁদে পা দিলেনও, তারপরেই উধাও হয়ে গেল ৯ লক্ষ টাকা। এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ৫৯ বছর বয়সী ভুক্তভোগী ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস (সিএসএমটি) এ প্রধান বৈদ্যুতিক ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কাজ করছেন। দক্ষিণ মুম্বাইয়ের কোলাবায় থাকেন তিনি।
তথ্য অনুসারে, সাইবার অপরাধীরা সিবিআই অফিসার হওয়ার ভান করে, এমনভাবে রেল অফিসারের ৯ লক্ষ টাকা হাতিয়েছেন তা একেবারেই ধারণার বাইরে। এতদিন ফোন কলে, কিংবা মেসেজে সাইবার প্রতারণা চলছিল। এখন তো তাঁরা ভিডিয়ো কলেও কারসাজি করছেন। ওই রেলওয়ে অধিকর্তাও একই কোপে পড়েছিলেন।
প্ৰথমে রেলের কর্মীকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল যে তিনি একটি মানি লন্ডারিং মামলায় জড়িত। তাঁকে আদালতে উপস্থিত হতে হবে। তাও আবার অনলাইন আদালতে। এরপর ভিডিয়ো কলের মাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে ‘বিচারক’-এর সামনে হাজিরও করা হয়। প্রতারকরা প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে তাঁকে ভিডিয়ো কলে আটকে রেখেছিলেন।
প্রতারণার সূত্রপাত এইভাবে
১৬ সেপ্টেম্বর সকালে প্রতারকদের ফোন আসে: জানা গিয়েছে, ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে ভুক্তভোগীর মোবাইল ফোনে একটি ভয়েস-রেকর্ড করা মেসেজ আসে। এতে বলা হয়, তাঁর মোবাইল ফোন দুই ঘণ্টার মধ্যে ব্লক করে দেওয়া হবে। আরও জানার জন্য তাঁকে ‘০’ নম্বরে যোগাযোগ করতে হবে। ওই ব্যক্তিও যথারীতি ‘০’ বোতাম টিপে তার ফোন থেকে একটি ভিডিয়ো কল করেন। কলকারী নিজেকে একজন সিবিআই অফিসার হিসাবে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলেছিল যে তিনি একটি মানি লন্ডারিং মামলায় রেলওয়ে আধিকারিককে তদন্ত করতে চান। তাঁর মোবাইল নম্বরটি নাকি এমনই একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিল, যা আর্থিক কেলেঙ্কারিতে ব্যবহার করা হয়েছে।
অফিসার তা অস্বীকার করলেও লাভ হয়নি। প্রতারক উল্টে আরও জোর দিয়ে তাঁকে বলেছিল যে তাঁর নামে যে মোবাইল নম্বর নিবন্ধিত ছিল, সেটি ৫.৮ মিলিয়ন টাকার মানি লন্ডারিং মামলার জন্য ব্যবহৃত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে লিঙ্ক করা ছিল। যথারীতি ভয় পেয়ে যান অফিসার। এই সময় তিনি অফিসে ছিলেন। ফোনকারীর হুমকিতে বাড়ি ফিরে আসেন। এরপর একই দিনে দুপুর ২টো নাদাগ একটি ভিডিয়ো কল আসে। কলেই প্রতারকরা অফিসারের কাছ থেকে তাঁর পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড, তাঁর অর্থ ও সম্পত্তির বিবরণ নেয়। তারপর অভিযুক্তরা তাঁকে অনলাইনে আদালতে হাজির হতে বলেন। এও জানান যে বিচারক নাকি মামলার রায় দেবেন।
পরদিন সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এই ভিডিয়ো কল চলে। এ সময় ভুক্তভোগীকে একজন বিচারকের সামনে হাজির করা হয়। বিচারকও তাঁকে বলেন যে তাঁরই অ্যাকাউন্ট থেকে কিছু অননুমোদিত ব্যাঙ্ক লেনদেন হয়েছে। এরপর তাঁকে ব্যাঙ্কের সব বিবরণ দিতে বলা হয়। নিজেকে সত্য প্রমাণ করতে তিনিও সব বিবরণ দিয়ে বসেন। এ সময় প্রতারকরা অফিসারকে ব্যাঙ্কে গিয়ে প্রদত্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৯ লক্ষ টাকা জমা দিতে বলে। টাকা জমা দেওয়ার সময় তিনি বুঝতে পারেন প্রতারণা করা হয়েছে। এরপর তিনি ব্যাঙ্কে গিয়ে ম্যানেজারকে ওই লেনদেন বন্ধ রাখতে বললেও, তা সম্ভব হয়নি। অবশেষে, কোলাবা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
(Feed Source: hindustantimes.com)