রাজীব চক্রবর্তী: পুজোর আগেই তিহাড় জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। এবার তিহাড় জেল থেকে মুক্তি পেতে চলেছেন অনুব্রত মণ্ডলের প্রাক্তন দেহরক্ষী সায়গল হোসেন। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আজ রাতেই দিল্লির তিহাড় জেল থেকে ছাড়া পেতে চলেছেন সায়গল।
গতকাল সায়গল হোসেনকে জামিন দেয় দিল্লি হাইকোর্ট। গোরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন সায়গল। সেই একই মামলায় অনুব্রত-সহ অন্যান্য সবাই ছাড়া পেয়ে গিয়েছেন। সেই যুক্তিতেই জামিন সায়গলের। ব্যক্তিগত ৫ লাখ টাকা জামিনে তাকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। তার পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে।
অনুব্রত মন্ডলের দেহরক্ষী গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক মহল থেকে গোটা বীরভূমে শুরু হয়ে যায় তোলপাড়। তদন্তে উঠে আসে অনুব্রতর দেহরক্ষী এই সায়গল হোসেনের অগাধ সম্পত্তির কথা। যার পরিচারিকার নামেও কলকাতায় রয়েছে ফ্ল্যাট!
কীভাবে তাঁর এই উত্থান? জানা গিয়েছে, ২০১০ সালে কনস্টেবল পদে চাকরি পান সায়গল হোসেন। তাঁর বাবার মৃত্যুতেই তিনি এই চাকরি পান। এরপর কিছুদিন মুর্শিদাবাদে সুতিতে কর্মরত ছিলেন সায়গল। তারপরই অনুব্রত মন্ডলের দেহরক্ষী হিসেবে নিযুক্ত হন। সেই থেকে এখনও অনুব্রত মন্ডলের দেহরক্ষী ছিলেন তিনি। তবে প্রথম থেকেই সায়গল হোসেনের এত প্রতিপত্তি বা তাঁর উত্থান লক্ষ্য করা যায়নি। এমনটাই মত অনুব্রত ঘনিষ্ঠদের। তবে ছবিটা বদলাতে শুরু করে ২০১৬ থেকে। তখন থেকেই কার্যত অনুব্রতর ছায়াসঙ্গী হিসেবে সর্বত্র দেখা যেতে থাকে সায়গল হোসেনকে। আর তারপরই তাঁর এই উত্থান।
অভিযোগ, অনুব্রত মন্ডলের প্রশাসনিক ও ব্যবসায়িক সমস্ত কাজের তদারকি করতেন সায়গল হোসেন। তাঁর ফোন দ্বারাই পরিচালিত হত সবটা। বিরোধীদেরও অভিযোগ, বীরভূমের সব কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করতেন সায়গল হোসেন। এখন, সায়গল হোসেনেরও কয়েকজন ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি আছেন। স্বাভাবিকভাবেই সায়গল হোসেনের গ্রেফতারি বীরভূম জেলার ব্যবসায়িক মহলে যথেষ্ট সাড়া দেয়।
সায়গল হোসেন ছাড়াও সিউড়ি ও ডোমকলে তার স্ত্রী ও মায়ের নামে কোটি টাকার আটটি জমির সন্ধান পাওয়া যায়। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পঁয়ত্রিশ লক্ষ। দলিল ও নথি দিয়ে আদালতে জানায় সিবিআই। সায়গল হোসেনের প্রায় ১ কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ পেল গরু পাচার কাণ্ডে তদন্তকারী সিবিআই আধিকারিকরা। চার্জশিটে যে সম্পত্তিগুলির উল্লেখ ছিল তার বাইরে আরও ১ কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ পাওয়াতে রীতিমতো বেকায়দায় পড়ে যান সায়গল।
(Feed Source: zeenews.com)