বিলুপ্ত ভারতীয় ভাষাগুলো ফিরিয়ে আনবে গুগল! চলছে প্রস্তুতি

বিলুপ্ত ভারতীয় ভাষাগুলো ফিরিয়ে আনবে গুগল! চলছে প্রস্তুতি

হারিয়ে যাওয়া ভারতীয় ভাষা আবারও ফিরিয়ে আনতে চায় গুগল। কাজ শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। মূলত এই ভাষাগুলির ডিজিটাল রেকর্ড তৈরি করার পরিকল্পনা করেছে গুগল, যাতে মানুষ সহজেই নিজেদের স্থানীয় উপভাষা সম্পর্কে জানতে পারে এবং সেই ভাষা ব্যবহার করতে পারে। ভয়েস এবং টেক্সট উভয় ভাবেই এই ভাষা ব্যবহার করে গুগল সার্চ করতে পারেন।

জেনারেটিভ এআই প্ল্যাটফর্ম, জেমিনি এবং অন্যান্য ডিজিটাল পরিষেবাগুলির হাত ধরে এই মুহূর্তে ভারতে ব্যবসা বাড়াচ্ছে গুগল। এমনই পরিস্থিতিতে, ভারতীয় ভাষার বৈচিত্র্য নিয়ে গুগলের কাজ প্রশংসিত হচ্ছে।

গুগলের এই নতুন ভাষা প্রজেক্টের কাজ শেষ হলেই, গ্রামীণ এলাকা এবং বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ গুগল এর জেমিনি এআই প্ল্যাটফর্ম থেকে সঠিক তথ্য খুঁজে পেতে, তাঁদের নিজস্ব ভাষায় ভয়েস সার্চ ব্যবহার করতে সক্ষম হবেন। এই ফিচারের দরুণ তাঁরা সরাসরি কোনও ভাষা অনুবাদ করতে, কিংবা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছোনোর জন্য আরও কার্যকরভাবে ইউটিউব ব্যবহার করতেও পারবেন।

গুগল ডিপমাইন্ডের পরিচালক মনীশ গুপ্তা বলেছেন, এই ভাষা প্রজেক্টে আপাতত ৫৯ ভারতীয় ভাষাকে কভার করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৫ অনলাইনে খুব কম উপলব্ধ ছিল বা প্রায় বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু এআইকে প্রত্যেকের কাছে ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে, বিভিন্ন ভাষার উপর জোর দেওয়ার কথা ভেবেছে গুগল। বিশেষ করে ভারতের এক বিলিয়নেরও বেশি মানুষের উপকারের স্বার্থেই এই পরিকল্পনা করা হয়েছে।মনীশ গুপ্তার কথায়, ‘আমরা অনেকেই ইংরেজি বুঝি। সহজে সমস্ত তথ্য জেনে নিতে পারি। কিন্তু ছত্তিশগড়ের শ্রমিকের মেয়ে বা অসমের কৃষকের মতো মানুষদের কাছে সব তথ্য পৌঁছোয় না। যদিও জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তিগুলি উন্নতি করছে, কিন্তু তারা অনেক ভারতীয় ভাষা এবং বিশ্বের অন্যান্য ভাষার তুলনায় ইংরেজিতেই বেশি ভাল কাজ করে।’ তাই গুপ্তা আরও ব্যাখ্যা করেছেন, ভারতে এক মিলিয়নেরও বেশি ৬০-টিরও বেশি ভাষায় কথা বলেন। এছাড়াও প্রায় ১০০,০০০ জন ১২৫টিরও বেশি ভাষা ব্যবহার করেন। এদের মধ্যে অনেক ভাষারই কোনও ডিজিটাল ডেটা নেই। তাই মনিশ গুপ্তার দাবি, ‘আমরা নিজেদেরকে শুধুমাত্র ২২ তফসিলি ভাষার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চাইনি।’

এখানে কিছু ভাষা রয়েছে যা গুগল প্রথমবারের মতো ডিজিটালভাবে রেকর্ড করেছে:

  • মালভানি: সিন্ধুদুর্গ জেলা, মহারাষ্ট্রে কথিত একটি কোঙ্কানি উপভাষা।
  • কুদুখ: একটি দ্রাবিড় ভাষা যা ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, ছত্তিশগড়, পশ্চিমবঙ্গ এবং অসমের কুরুখ জনগণের ভাষা।
  • শেখাবতী: শেখাবতী অঞ্চলের একটি রাজস্থানী উপভাষা।
  • দুরুয়া: একটি দ্রাবিড় ভাষা যা প্রধানত উড়িষ্যা, অন্ধ্র প্রদেশ এবং ছত্তিশগড়ে কথ্য।
  • বাজিকা: বিহারের কিছু অংশে কথিত একটি ভাষা।
  • বিয়ারিবাশে: দক্ষিণ কর্ণাটক এবং উত্তর কেরালায় বিয়ারি সম্প্রদায়ের দ্বারা ব্যবহৃত একটি স্বাধীন ভাষা।
  • রাজবংশী: পশ্চিমবঙ্গ, অসম এবং বাংলাদেশের কিছু অংশে কথিত একটি ইন্দো-আর্য ভাষা।
  • আঙ্গিকা: বিহার এবং ঝাড়খণ্ডের কিছু অংশে কথিত একটি ইন্দো-আর্য ভাষা।

(Feed Source: hindustantimes.com)