মসজিদে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিলে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা হয় না, বলল হাইকোর্ট

মসজিদে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিলে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা হয় না, বলল হাইকোর্ট

 

মসজিদে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেওয়ার অভিযোগে দু’জনের বিরুদ্ধে যে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছিল, তা খারিজ করে দিল কর্ণাটক হাইকোর্ট। ওই দু’জনের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫এ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল। যে ধারার আওতায় ভারতের কোনও নাগরিকের ধর্মীয় বা ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান করার জন্য ইচ্ছাকৃত এবং বিদ্বেষী মনোভাব নিয়ে কোনও কাজ করা ব্যক্তিকে দণ্ডিত করা হয়। মঙ্গলবার সেই মামলা খারিজ করে দিয়েছেন কর্ণাটক হাইকোর্টের বিচারপতি এম নাগাপ্রসন্ন। একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, তিনি পালটা প্রশ্ন তুলেছেন যে স্লোগান দেওয়ার বিষয়টি কীভাবে কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানতে পারে।

‘জয় শ্রীরাম’ বললে কীভাবে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগে? প্রশ্ন হাইকোর্টের 

কী কারণে তিনি সেই মন্তব্য করেছেন, সেটাও ব্যাখ্যা করেছেন হাইকোর্টের বিচারপতি নাগাপ্রসন্ন। সংবাদমাধ্যম লাইভ ল’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিচারপতি নাগাপ্রসন্ন জানিয়েছেন যে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫এ ধারায় কোনও শ্রেণির ধর্মীয় বা ধর্মীয় বিশ্বাসকে অপমান করার ইচ্ছাকৃত এবং বিদ্বেষমূলক কাজের কথার উল্লেখ আছে। কিন্তু এটা বোঝা যাচ্ছে না যে কেউ যদি ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দেন, তাতে কীভাবে কোনও শ্রেণির ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করা হচ্ছে?

বিষয়টি আরও ব্যাখ্যা করে হাইকোর্টের বিচারপতি নাগাপ্রসন্ন জানিয়েছেন, বিশেষত অভিযোগকারী তো নিজে বলেছেন, যে এলাকায় সেই ঘটনাটি ঘটেছে, সেখানে তো হিন্দু এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা শান্তিপূর্ণভাবেই বসবাস করেন। ঐক্যবদ্ধভাবেই থাকেন তাঁরা। সেই পরিস্থিতিতে কল্পনার কোনও স্তরেই বিরূপ মনোভাব তৈরি হতে পারে বলে মনে করা যায় না।

সুপ্রিম কোর্টের রায়েরও উল্লেখ হাইকোর্টের

সেই নির্দেশের প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়েরও উল্লেখ করেছেন বিচারপতি নাগাপ্রসন্ন। তিনি জানিয়েছেন, সেই মামলার (মহেন্দ্র সিং ধোনি বনাম ইয়েরাগুন্টলা শ্যামসুন্দর – ২০১৭) প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালত বলেছিল যে প্রতিটি ঘটনাকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫এ ধারায় আনা যায় না। আর যে ঘটনার জেরে শান্তি বিঘ্নিত হয়নি বা জনজীবনে কোনও প্রভাব পড়েনি, তা ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৫এ ধারায় অপরাধ বলে বিবেচনা করা যাবে না বলে জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট।

কী অভিযোগ উঠেছিল?

ওই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে যে মামলা দায়ের হয়েছিল, তাতে দাবি করা হয়েছিল যে ২০২৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ১০ টা ৫০ মিনিট কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি মসজিদে ঢুকে এসে ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি তুলছিলেন। তদন্তের সময় ওই দু’জন ব্যক্তিকে অভিযুক্ত হিসেবে দেখানোর বিরুদ্ধে তাঁরা হাইকোর্টে মামলা করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই দু’জনের বিরুদ্ধে ট্রায়াল কোর্টে যে ফৌজদারি মামলা ছিল, সেটা খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট।

(Feed Source: hindustantimes.com)