ঢাকা: বিদ্রোহকালে দেশ ছেড়েছেন। আপাতত ফেরার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। সেই আবহেই বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সাবেক বাসভব, গণভবন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যে বিলাসবহুল বাসভবনে থাকতেন হাসিনা, সেটিকে গণ-অভ্যুত্থানের মিউজিয়ামে পরিণত করার নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনূস। সোমবার গণভবন পরিদর্শন করতে গিয়েই নির্দেশ দেন ইউনূস। (Bangladesh News)
দীর্ঘ ১৫ বছরেরও বেশি সময় ওই গণভবনই হাসিনার বাড়ি হয়ে উঠেছিল। অধুনা ইউনূস সরকার হাসিনার ওই বাসভবনকে নিষ্ঠুরতা, দমন-পীড়ন এবং স্বৈরাচারী শাসকের প্রতীক হিসেবে দেখছে। সোমবার গণভবন পরিদর্শনে গিয়ে সেকথাই তুলে ধরেন ইউনূস। বলেন, “মিউজিয়াম তাঁর (শেখ হাসিনা) অপশাসনের স্মৃতি, তাঁকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে জনগণ যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন, তা সংরক্ষণ করবে।” (Muhammad Yunus)
সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনে যখন অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ, সেই সময়, গত ৫ অগাস্ট বাংলাদেশ ছাড়েন হাসিনা। সেই থেকে ভারতে গোপন আশ্রয়ে রয়েছেন তিনি। হাসিনা দেশ ছাড়ার পর, সেই সময় গণভবনে ঢুকে পড়েন হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। চলে ভাঙচুর, লুঠপাটও। গণভবনের দেওয়ালেও ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা। কোথাও লেখা হয়, ‘খুনি হাসিনা’, কোথাও ‘ছাত্রহত্যার বিচার চাই’, কোথাও আবার বিক্ষোভ চলকালীন গুলিবিদ্ধ হয়ে মরা যাওয়া আবু সইদের নাম লেখা হয়। (Sheikh Hasina)
Chief Adviser Professor Muhammad Yunus asked advisers to fast-track construction of the museum for the July-August mass uprising at the Gonobhaban.#ChiefAdviser #Bangladesh pic.twitter.com/6iS3UsaUak
— Chief Adviser of the Government of Bangladesh (@ChiefAdviserGoB) October 28, 2024
এখনও গণভবনে ভাঙচুরের চিহ্ন ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। জানলার কাচ ভেঙে ঝুলছে। জিনিসপত্রের টুকরো ধুলোমাখা অবস্থায় ছড়িয়ে রয়েছে সর্বত্র। সোমবার সেই সব কিছুই ঘুরে দেখেন ইউনূস। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদও গণভবনে ইউনূসের সঙ্গী হন। সেখানে ইউনূস জানান, হাসিনার জমানায় নিরাপত্তা সংস্থাগুলি আয়নাঘরে যে অত্যাচার চলত, তার রেপ্লিকাও থাকা উচিত গণভবনের মিউজিয়ামে।
গণভবনকে মিউজিয়ামে পরিণত করতে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেন ইউনূস। এ বছর ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রস্তাব চূড়ান্ত করতে হবে বলে জানিয়েছেন। নাহিদ জানিয়েছেন, ২০০৯ সাল থেকে এযাবৎ হাসিনার সমস্ত অপকর্ম মিউজিয়ামে সংরক্ষণ করা হবে। স্বৈরতন্ত্রের অবসান এবং বিপ্লবের স্মৃতিসৌধ হিসেবে রয়ে যাবে গণভবন।
আগে বার বার বিতর্কের জন্য পিছু হটতে হলেও, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর গণভবনের সংস্কার করান হাসিনা। ২০১০ সালের ৫ মার্চ থেকে সেখানে থাকতে শুরু করেন তিনি। সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলন চলাকালীন সেখানে ভাঙচুর হলে, গণভবন দেখাশোনার দায়িত্ব হাতে তুলে নেয় সেনা। এবার সেটিকে মিউজিয়ামে পরিণত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হল।
(Feed Source: abplive.com)