সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: দীপান্বিতা অমাবস্যায় আলো ঝলমলে রাজ্য। দিকে দিকে উৎসবের রোশনাই। কিন্তু এই প্রথম দীপবলিতে তাঁদের জীবনে নেই প্রদীপের আলো। গ্রাস করেছে আঁধার।
নেই প্রদীপের আলো: একমাত্র মেয়েকে কেড়ে নিয়েছে ৯ অগাস্টের রাত। অভিশপ্ত সেই রাতের পর কেটে গেছে ৮৩ দিন… এখনও বিচার মেলেনি। কবে মিলবে সুবিচার? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন আরজি কর কাণ্ডে নিহত চিকিৎসকের বাবা মা। কালীপুুজোয় যখন সবদিক আলোর মালায় সেজেছে, তখন কার্যত অন্ধকারে তাঁরা। কীভাবে কাটত আগের বছরগুলো? তার বর্ণনা করতে গিয়ে ডুকরে কেঁদে উঠছেন অসহায় বাবা মা।
কালীপুজো এলে আলোয় আলোয় ঝলমলিয়ে উঠত বাড়িটা। নিজের হাতে রঙ্গোলি আঁকত মেয়ে। আনন্দে মেতে উঠত সকলে। কিন্তু, গত ৯ অগাস্টের পর থেকে সব পাল্টে গেছে। নিহত চিকিৎসকের মা বলেন, “গত বছরের কথা মনে পড়লে মন ভেঙে যাচ্ছে। দুর্গাপুজোয় বেরোতাম না। এই কালীপুজোতেই বেরোতাম। আজ আমি প্রদীপ জ্বালাতে পারব না। রঙ্গোলি করতে ভালোবাসত। সব আছে। মানুষটা নেই।”
শুধু তাঁদের জীবনই নয়, বাড়িজুড়ে যেন চিরতরে নেমে এসেছে এক অদ্ভুত অন্ধকার। ডাক্তার মেয়ের মৃত্যুর পর থেকে পুরো বাড়িটাই প্রাণহীন হয়ে পড়েছে।দীপাবলির দিনও সেখানে নিকষ কালো শোকের অন্ধকার। নিহত চিকিৎসকের বাবার কথায়, “বাড়ি লাইট দিয়ে সাজানো হত টুনি দিয়ে। বাজি ভয় পেতো। চরকি ফাটাতো।”
তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ, খুনের পর থেকে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট। কিন্তু, সম্প্রতি আত্মপ্রকাশ করেছে আরেকটি সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন, যার একাধিক সদস্য থ্রেট কালচারে জড়িত বলে অভিযোগ। নিহত চিকিৎসকের মা বলেন, “কী উদ্দেশ্যে এতো সংগঠন তৈরি হচ্ছে জানিনা। সবাই বিচার চাই বলছে। কিন্তু বিচার অধরা। দেখতেই পাচ্ছি ছাত্ররা প্রথমে যেভাবে ঝাঁপিয়েছে, সেটা স্তিমিত। মানুষও উৎসবে ফিরেছেন। আন্দোলন হয়তো থেমেছে। আন্দোলন আমরাই করব।”
(Feed Source: abplive.com)