সামনেই ঝাড়খণ্ডে ভোট। তার আগে বড় ঘোষণা করে দিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি ভোট প্রচারে গিয়ে ঘোষণা করেছেন, ক্ষমতায় এলেই রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হবে। তবে সেখানে অপর একটা কথাও তিনি জানিয়ে দিয়েছেন। সেটা হল জনজাতিদের এই বিধি থেকে বাদ রাখা হবে।
এদিকে ২০১৯ সালে একইভাবে বাংলায় এসে এনআরসি লাগুর কথা ঘোষণা করেছিলেন শাহ। সেবারও লোকসভা ভোট ছিল বাংলায়। ফের ভোট আসছে ঝাড়খণ্ডে। বিধানসভা ভোট। সেই ভোটের আগে বাংলায় এসে বড় ঘোষণা করে দিলেন অমিত শাহ।
রাঁচির জনসভায় অমিত শাহ জানিয়েছেন, ক্ষমতায় এলে ঝাড়খণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করবে বিজেপি। তবে আমি আশ্বস্ত করছি জনজাতিদের এর বাইরে রাখা হবে। সেই সঙ্গেই অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছেন, জেএমএম সরকারি মিথ্যা প্রচার করছে যে ইউসিসি এলে জনজাতিদের অধিকার ক্ষুন্ন হবে। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে গোটা দেশজুড়েই নানা চর্চা। এই বিধি চালুর ব্যাপারে এর আগেও সওয়াল করেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তবে এবার ভোটমুখী ঝাড়খণ্ডে এনিয়ে রীতিমতো প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিলেন অমিত শাহ। তবে তিনি এই প্রসঙ্গে জনজাতিদের বাদ রাখার কথাও জানিয়েছেন।
এদিকে ঝাড়খণ্ডে জনজাতিদের বাস। সেক্ষেত্রে এই অভিন্ন দেওয়ানি বিধির প্রতিশ্রুতির জেরে যাতে সেই ভোটে কোনও প্রভাব না পড়ে সেটাও অত্যন্ত সচেতনভাবে দেখেছে বিজেপি।
এর আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসে উত্তরাখণ্ড মন্ত্রিসভা ইউসিসির চূড়ান্ত খসড়া অনুমোদন করেছিল।
ইউনিফর্ম সিভিল কোড আসলে কী?
এটি একটি অভিন্ন নাগরিক কোড আইনগুলির একটি সমষ্টিকরণ বলে মনে করা হয়।এটি ধর্ম নির্বিশেষে সমস্ত নাগরিকের জন্য বিবাহ, বিবাহবিচ্ছেদ, দত্তক, উত্তরাধিকার এবং উত্তরাধিকার সহ ব্যক্তিগত বিষয়গুলি পরিচালনা করে। ইউসিসির লক্ষ্য বিদ্যমান বিভিন্ন ব্যক্তিগত আইনগুলি প্রতিস্থাপন করা যা ধর্মীয় অনুষঙ্গের ভিত্তিতে পরিবর্তিত হয়।
ইউনিফর্ম সিভিল কোড উত্তরাখণ্ড ২০২৪ বিল কী?
২০২২ সালে ইউসিসি-র খসড়া তৈরির জন্য সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাইয়ের নেতৃত্বে একটি প্যানেল গঠন করেছিল উত্তরাখণ্ড সরকার। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি প্রমোদ কোহলি, সমাজকর্মী মনু গৌর, উত্তরাখণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যসচিব শত্রুঘ্ন সিং এবং দুন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুরেখা ডাঙ্গওয়ালকে নিয়ে গঠিত প্যানেল ৭৪০ পৃষ্ঠারও বেশি একটি খসড়া প্রতিবেদন তৈরি করেছে এবং এর চারটি খণ্ড রয়েছে।
এই খসড়া তৈরি করার জন্য, প্যানেলটি লক্ষ লক্ষ প্রতিক্রিয়া সংগ্রহ করেছে, লিখিত এবং অনলাইন, বেশ কয়েকটি পাবলিক ফোরাম এবং ৪৩ টি পাবলিক আউটরিচ প্রোগ্রাম করেছে এবং ৬০,০০০ এরও বেশি লোকের সাথে জড়িয়ে ছিল তাদের এই কর্মসূচি। মুখ্যমন্ত্রী ধামির মতে, ইউসিসি বিলটি জনসাধারণের আলোচনা ও পরামর্শের ফলাফল।
জানা গেছে, ইউসিসি উত্তরাখণ্ড ২০২৪ বিলে বহুবিবাহ এবং বাল্যবিবাহ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার মতো সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ইন্ডিয়া টুডের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বিলের কয়েকটি মূল বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে – পুত্র ও কন্যার সমান সম্পত্তির অধিকার, বৈধ ও অবৈধ সন্তানের মধ্যে বৈষম্য দূরীকরণ, মৃত্যুর পরে সমান সম্পত্তির অধিকার এবং দত্তক নেওয়া ও জৈবিক সন্তানের অন্তর্ভুক্তি।
(Feed Source: hindustantimes.com)