GK: লিভ ইনের কথা উঠলে এখনও গ্রামগুলিতে বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। কিন্তু ভারতের একটি জায়গা রয়েছে যেখানে, লিভ-ইন রিলেশনশিপ খুবই সাধারণ বিষয়, এবং বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের এটি করার অনুমতি দিয়ে থাকেন। কোথায় জানেন?
নয়াদিল্লি: দিল্লি এবং মুম্বইয়ের মতো বড় শহরগুলিতে যুবক-যুবতীদের বিয়ের আগে একসঙ্গে একই বাড়িতে থাকা একটি সাধারণ ঘটনা হয়ে উঠেছে। একে লিভ-ইন রিলেশনশিপ বলা হয়। তবে, ছোট শহরগুলিতে এটি এখনও ভুল হিসেবে বিবেচিত হয়।
গ্রামগুলিতে এখনও এই প্রথা শুনলেই বিতর্ক শুরু হয়ে যায়। কিন্তু ভারতের একটি জায়গা রয়েছে যেখানে লিভ-ইন রিলেশনশিপ সাধারণ এবং বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের এটি করার অনুমতি দেন। আমরা রাজস্থান এবং গুজরাটের গরাসিয়া জাতিগোষ্ঠীর কথা বলছি। এই জাতিগোষ্ঠীতে পুরুষ এবং মহিলারা বিয়ে ছাড়াই একসঙ্গে বাস করেন এবং মহিলারা বিয়ের আগে মা হয়ে যান। মহিলাদের নিজের পছন্দের ছেলেকে নির্বাচন করার অধিকার থাকে, যা এই জাতিগোষ্ঠীকে দারুণ বিশেষ গুরুত্ব দেয়।
এখানে বিয়ের জন্য দুই দিনের মেলার আয়োজন করা হয়। এই মেলায় ছেলে-মেয়েরা একত্রিত হয় এবং যদি তারা কেউ কাউকে পছন্দ করে, তবে মেলা থেকে পালিয়ে যায়। এরপর তারা বিয়ে না করেই একসঙ্গে থাকতে শুরু করে। এই সময় তারা সন্তানের জন্মও দিতে পারে। পরে, তারা নিজেদের গ্রামের কাছে ফিরে আসে এবং তাদের বাবা-মায়েরা তাদের বিয়ে ধুমধাম করে পালন করেন।
এই জাতিগোষ্ঠীতে লিভ-ইনে থাকার প্রথা শতাব্দী প্রাচীন। বলা হয়, আগে এই জাতির চার ভাই গ্রাম ছেড়ে কোথাও অন্যত্র চলে গিয়েছিলেন। এর মধ্যে তিনজন ভারতীয় রীতিতে বিয়ে করেছিলেন, কিন্তু একজন ভাই বিয়ে ছাড়াই একটি মেয়ের সঙ্গে থাকতে শুরু করেন। সেই তিন ভাইয়ের সন্তানের জন্ম হয়নি, কিন্তু চতুর্থ ভাইয়ের একটি সন্তান হয়েছিল। সেখান থেকেই এখানে লিভ-ইনে থাকার প্রথার শুরু।
রিপোর্ট অনুযায়ী, গরাসিয়া মহিলারা যদি চান, তবে প্রথম পার্টনারের পরেও দ্বিতীয় মেলায় দ্বিতীয় পার্টনার নির্বাচন করতে পারেন। এইভাবে তারা স্বাধীনতা পায়, যা আধুনিক সমাজেও অনেক সময় পাওয়া যায় না। এই কারণেই এই জাতিগোষ্ঠী বিশ্বজুড়ে পরিচিত, এবং এই ধরনের স্বাধীনতা শহুরে মহিলাদেরও পাওয়া যায় না। ভারতের এমন অনেক অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী রয়েছে যারা এই ধরনের প্রথা অনুসরণ করে।