#নয়াদিল্লি: মহাকাশে মহামিলন ঘটতে চলেছে আগামী সপ্তাহে। ভোরের একটু আগে আকাশের বুকে এক সঙ্গে ফুটে উঠবে পাঁচটি তারা—বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি আর শনি। পরপর। যেন তারার মিছিল। তবে এরা একা নয়। এদের ঠিক মাঝখানে দেখা যাবে আর একজনকে। যেন বড় আদরে তাকে আগলে রাখবে গ্রহ পরিবারের জেষ্ঠ্যরা।
অত্যন্ত বিরল এই মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী থাকতে চলেছে পৃথিবী। দেড়শো বছরেরও আগে এমন ঘটনা দেখেছিল পৃথিবীর মানুষ। যাঁরা নিয়মিত আকাশ দেখতে ভালবাসেন তাঁরা তো বটেই, খালি চোখে সাধারণ মানুষও দেখতে পাবেন গ্রহদের এই বিরল মিছিল।
জানা গিয়েছে, সৌর পরিবারের পাঁচটি গ্রহ তাদের অবস্থান অনুসারে একেবারের পর পর এক সরল রেখায় অবস্থান করবে ওই দিন—বুধ, শুক্র, মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শনি। মাঝখানে শুধু যাকে দেখা যাবে না, সে হল পৃথিবী। তাতে কী! পৃথিবীর শূন্যস্থান স্বমহিমায় পূরণ করে দেবে একফালি চাঁদ। কৃষ্ণ একাদশীর বাঁকা চাঁদকে নিয়েই মিছিল হবে মহাজগতে। তথ্য বলছে, এমন ঘটনা এর আগে পৃথিবী থেকে দেখা গিয়েছিল ১৮৬৪ সালে। অর্থাৎ, প্রজন্মের পর প্রজন্ম এমন বিরল ঘটনার সাক্ষী থাকতে পারেনি, সে কথা নিশ্চিত। তাই এই সুযোগ কোনও ভাবেই হাতছাড়া হতে দেওয়া যায় না!
দেখে নেওয়া যাক কখন কোথায় দেখা যাবে গ্রহদের।
কখন দেখা যাবে?
নিজেদের কক্ষ পথে যে ভাবে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে চলে গ্রহগুলি, সে ভাবেই পর পর অবস্থানে আকাশে এক সরলরেখায় দেখা যাবে পাঁচটি গ্রহকে। আর এটিই এই মহাজাগতিক বিরল ঘটনার বিশেষত্ব। এই অবস্থান দেখা যাবে ২৩ থেকে ২৫ জুনের মধ্যে। সবথেকে ভাল দেখা যাবে ২৪ জুন ভোর রাতে। এ জন্য রাতের অন্ধকার থাকতে থাকতেই উঠে যেতে হবে ছাদে বা খোলা জায়গায়। তারপর চোখ রাখতে হবে পূর্ব দিকে। তারপর ক্রমশ দৃষ্টি এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে উত্তর-পূর্ব দিকে।
তবে সব ক’টি তারা এক সঙ্গে ফুটে উঠবে ভাবলে ভুল হবে। প্রথম দেখা যাবে শনিকে। মধ্যরাতেই আকাশে দেখা দেবে শনি। বিচ্ছুরিত হবে উজ্জ্বল হলুদ আলো। এরপর একে একে মিছিলে যোগ দেবে বৃহস্পতি, মঙ্গল, শুক্র। যথাক্রমে রাত ১.৩০, ২.০০ এবং ৩.৩০ নাগাদ দেখা মিলবে তাদের। সব শেষে উদিত হবে বুধ, ভোরের আলো ফোটার প্রায় ৩০-৪০ মিনিট আগে। মঙ্গল আর শুক্রর মাঝখানে সাররাত অবশ্য জেগে থাকে একাদশীর চাঁদ।
কোথায়, কী ভাবে দেখতে হবে?
সব থেকে মজার কথা হল, পৃথিবীর প্রায় সব জায়গা থেকেই এই বিরল দৃশ্যের সাক্ষী থাকা যাবে। তবে হ্যাঁ, উজ্জ্বল তারাদের মিছিল দেখতে হলে অবশ্যই এমন জায়গায় যাওয়া উচিত যেখানে বায়ু দূষণের পরিমাণ কম। আর অবিস্মরণীয় দৃশ্যটির সাক্ষী থাকতে গেলে সূর্যোদয়ের আধ ঘণ্টা আগে কষ্ট করে ঘুম থেকে উঠে পড়তে হবে। আরও ভাল ভাবে দেখতে গেলে একটি বাইনোকুলার (Binoculars) অথবা একটি টেলিস্কোপ (Telescope) ব্যবহার করা যেতে পারে। আর এ সব কিছুই করতে না পারলে? চিন্তা কী! বর্তমান প্রযুক্তির যুগে কিছুই অসম্ভব নয়। YouTube-এ একাধিক চ্যানেল থেকে Live দেখানো হবে এই দৃশ্য।