#কলকাতা: কেন্দ্রের ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। অগ্নিপথের বিরোধিতায় ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি সংগঠন রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বিক্ষোভ প্রশমিত করার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপও করা হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়াও কার্যত উত্তাল এই ইস্যুতে। এরই মধ্যে ‘অগ্নিপথ স্কিম’ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে সিপিএম।
বৃহস্পতিবার দলের পলিটব্যুরোর পক্ষ থেকে এক প্রেস বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। সেখানেই এই দাবি জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “অগ্নিপথ প্রকল্প ভারতের জাতীয় স্বার্থের গুরুতর ক্ষতি করবে সিপিআইএম-এর পলিটব্যুরো জোরের সাথে এই প্রকল্প বাতিল করার দাবী জানাচ্ছে। চার বছরের ঠিকা বন্দোবস্তে সেনাবাহিনীতে নিয়োগ করে পেশাদার সশস্ত্রবাহিনী নির্মাণ করা যায় না। খরচ বাঁচাতে এই প্রকল্পে পেনশনের কোন সুবিধাই নেই, আমাদের দেশের সেনাবাহিনীর গুণমাণ ও পেশাদারিত্বের প্রসঙ্গে এমন প্রকল্প এক নির্লজ্জ আপস ছাড়া আর কিছুই নয়। গত দু’বছরে সেনাবাহিনীতে কোনও নিয়োগ হয়নি। স্থায়ী নিয়োগের পরিবর্তে এই ধরনের প্রকল্পের মাধ্যমে ভবিষ্যতে জওয়ানদের কোনরকম কাজে যুক্ত হওয়ার নিশ্চয়তা ছাড়াই সেনাবাহিনীতে অস্থায়ী নিয়োগ করতে চাইছে সরকার। চার বছর পরে এই সব সেনা জওয়ানদের বিভিন্ন গোষ্ঠীনিয়ন্ত্রিত অথবা ব্যাক্তিগত মিলিশিয়া বাহিনীতে যুক্ত করার মতো ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।”
ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ”আমাদের দেশের বর্তমান সামাজিক বিন্যাসে ইতিমধ্যেই বহুবিধ অনভিপ্রেত শোষণ, নিপীড়নের সুযোগ রয়েছে, এধরনের প্রকল্পে সেই বিন্যাস আরও জটিল আকার নেবে। নিযুক্ত হওয়া কাজে ন্যূনতম সুরক্ষার বন্দোবস্তটুকু ছাড়াই যে কায়দায় দেশের যুবসমাজকে দেশের স্বার্থে আত্মাহুতির মতো চরম কর্তব্য পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে তা কার্যত অপরাধ। এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে দেশের জনসাধারণের কতটা ক্ষোভ তৈরি হয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আয়োজিত স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভগুলিতে তারই আঁচ পাওয়া যাচ্ছে। অবিলম্বে উক্ত ‘অগ্নিপথ’ প্রকল্প বাতিল করে সেনাবাহিনীতে স্থায়ী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে, সিপিআইএম-র পলিটব্যুরো সেই দাবী জানাচ্ছে।”
সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য বলেন, “চার বছর পর তাঁদের জীবন কী হবে কেউ জানে না। অনিশ্চয়তার অন্ধকার। তখন কি প্রাইভেট ভাড়াটে বাহিনীর হাতে তাঁদের কাজ করতে হবে? এটা কখনও হয়? কোনও মানুষের ভবিষ্যৎ এটা হতে পারে নাকি? যুব সমাজের সর্বনাশ করছে। আর যে পেশাদারিত্ব আর্মির, সেটাও বারোটা বাজিয়ে দেওয়া হবে। এ একটা ক্রিমিনাল অফেন্স। জীবনের শ্রেষ্ঠ চারটে বছর নিয়ে নিলাম। সুপ্রিম স্যাক্রিফাইসের জন্য তাঁরা তৈরি। কিন্তু তাদের জন্য আমাদের কোনও দায়িত্ব নেই। রাষ্ট্র যদি এভাবে চলে, তাহলে মানুষের প্রতিক্রিয়া তো স্বাভাবিক।”