কলকাতা: তিনি তখন ক্রিকেট প্রেমে বুঁদ। শিলিগুড়ির গলিতে হোক বা মাঠে, ব্যাট-বল পেলেই যেন অন্য দুনিয়ায় চলে যান। এমনকী, খেপ খেলার সুযোগ পেলেও ছাড়তেন না। টেনিস বলে তেমনই এক টুর্নামেন্ট খেলার ডাক পেয়েছিলেন ঋদ্ধিমান সাহা (Wriddhiman Saha)।
বাবা প্রশান্ত সাহা (Prashanta Saha) ছেলেকে ডেকে বললেন, হাফসেঞ্চুরি চাই। আর তা করলেই মিলবে পুরস্কার। ঋদ্ধিমান সাহা হাফসেঞ্চুরি করলেন। বাড়ি ফিরতেই পেলেন চমক।
‘হাফসেঞ্চুরি করায় কথা রেখেছিলেন বাবা। কিনে দিয়েছিলেন ট্র্যাকশ্যুটের আপার ও লোয়ার। অনেক বছর আগের কথা। রংটা এখনও মনে আছে। সি গ্রিন রংয়ের। কী যে আনন্দ হয়েছিল,’ ফাদার্স ডে-তে এবিপি লাইভকে ছেলেবেলার গল্প শোনাচ্ছিলেন ঋদ্ধিমান। যোগ করলেন, ‘বাবা খেলা-অফিস নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকতেন। তবে সব সময় প্রশ্রয় দিতেন। বরং মা কিছুটা হলেও শাসন করতেন।’
পিতৃদিবসে যেন বাবার জন্য মন খারাপ ঋদ্ধির। তিনি কলকাতায়। বাবা-মা শিলিগুড়ির বাড়িতে। ঋদ্ধি বললেন, ‘আজ দেখা হল না। আগামী সপ্তাহে শিলিগুড়ি যাব। তখন দেখা হবে। তবে বাবার সঙ্গে বেশ রোজ রোজ দেখা হতো। ভারি আনন্দ পেতাম। সেটা এখন আর হয় না।’
বাবাকে নিয়ে কথা বলতে বলতেই ঋদ্ধি শোনালেন নিজের পিতৃসত্তার কথা। ক্রিকেটার ঋদ্ধি নিজেও এখন দুই সন্তানের বাবা। ফাদার্স ডে-তে ঋদ্ধি বললেন, ‘মেয়ে আনভি আর ছেলে অনভয়কে তো সময়ই দেওয়া হয় না। সারা বছরই ম্যাচের জন্য বাইরে বাইরে কাটাতে হয়। তাই বাড়ি ফিরলে পুরো সময়টা ওদেরই দিই।’
শোনালেন মজার কথাও। বললেন, ‘আগে বাড়ি ফিরলেই মেয়ে প্রথম প্রশ্ন করত, আবার কবে ম্যাচ তোমার। মানে জানতে চাইত, কবে ফের ম্যাচ খেলতে বেরিয়ে পড়ব। ও ক্রিকেটকে বেশ হিংসা করত। তবে এখন একটু বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রিকেট দেখতে, বুঝতে শিখেছে। এখন আমি রান না পেলে বরং মন খারাপ করে।’
আইপিএল খেলার সময় জৈব সুরক্ষা বলয়ে পরিবার নিয়ে যাননি ঋদ্ধি। গুজরাত টাইটান্স চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরই বাড়ি ফিরে ছুটি কাটাতে দুবাই গিয়েছিলেন। বাইরে খেলতে গেলে সন্তানেরা কিছু কিনে আনার বায়না করে না? ঋদ্ধি বলছেন, ‘সেভাবে না।’ ক্রিকেটের ঠাসা সূচির মধ্যেও সময় পেলেই মেয়ের হোমওয়ার্ক নিয়ে বসেন। ঋদ্ধি বলছেন, ‘এখন পড়াশোনার ধাঁচ অনেক বদলে গিয়েছে। আমি সময়ও পাই না। মেয়ের পড়াশোনার আশি ভাগ রোমিই দেখে। বাকি সামান্য সময় আমি সাহায্য করি।’
আপাতত সপরিবার শিলিগুড়ির পৈতৃক ভিটেয় যাওয়ার দিন গুনছেন বঙ্গ উইকেটকিপার।
(Source: abplive.com)