রঞ্জন চন্দ, পশ্চিম মেদিনীপুর: ব্রিটিশ পরাধীনতা থেকে শৃঙ্খলমোচনের পর ভারতবর্ষে প্রযুক্তিবিদ্যায় পড়াশোনার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভের আগে থেকেই একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়, যেখানে আলোচনা হয় প্রযুক্তিবিদ্যার প্রশিক্ষণের জন্য গঠন করা হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সেইমত ১৯৫১ সালে পশ্চিমবঙ্গের খড়গপুর শহরে প্রতিষ্ঠা পায় ভারতবর্ষের অন্যতম এবং প্রাচীনতম প্রযুক্তিবিদ্যার প্রতিষ্ঠান আইআইটি খড়গপুর। ছোট্ট চারাগাছ থেকে আজ মহীরুহে পরিণত হয়েছে আইআইটি। একাধিক বিভাগ, ম্যানেজমেন্ট স্কুল, অ্যাকাডেমি অব এক্সেলেন্স, একাধিক ল্যাবরেটরি-সহ একাধিক কৃতী ছাত্র-ছাত্রী, গবেষক, অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা সারা পৃথিবীর কাছে সুখ্যাতি এনে দিয়েছে আইআইটি খড়্গপুরের। মাত্র তিনটে বিভাগ নিয়ে শুরু হওয়া আইআইটি খড়্গপুরে এখন কয়েক হাজার কৃতী ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র এই ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি।
প্রসঙ্গত ভারতবর্ষ স্বাধীনতা লাভের আগে থেকেই ১৯৪৬ সাল থেকেই ভারতবর্ষে উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব এবং পশ্চিমে এলাকায় প্রযুক্তিবিদ্যার শিক্ষাদানের জন্য বিশেষ প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয়। এই সরকারি কমিটি ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির মতো ভারতেও উচ্চতর কারিগরি প্রতিষ্ঠান স্থাপনের সুপারিশ করে। সেই মতো বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠান গড়ার জন্য পর্যবেক্ষণ করা হলেও, ১৯৫১ সালে আগস্টে খড়গপুর শহরে হিজলি বন্দিনিবাস থেকে প্রথম শুরু হয় আইআইটি খড়্গপুরের পথ চলা। মাত্র তিনটি বিভাগ দিয়ে শুরু হয় ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি, খড়্গপুরের প্রথম দিন। এখন বর্তমানে ২১ টি ডিপার্টমেন্ট, একাধিক টেকনোলজি স্কুল, সেন্টার ফর অ্যাকাডেমি অব এক্সেলেন্স-সহ একাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে আইআইটি-তে।
আইআইটি প্রতিষ্ঠার পর মাত্র ৪২ জন অধ্যাপক অধ্যাপিকা দিয়ে শুরু হয় পঠন পাঠন। শুধু তাই নয় সিভিল, ইলেকট্রিক্যাল এবং মেকানিক্যাল বিভাগে ২২৪ জন ছাত্র-ছাত্রী দিয়ে শুরু হয় আইআইটি খড়গপুর। তবে বর্তমানে সেই সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১৭ হাজারেরও বেশি। অন্যদিকে মাত্র ৪২ জন অধ্যাপক অধ্যাপিকার জায়গায় এখন ৮০০ জনেরও বেশি অধ্যাপক অধাপিকা শিক্ষাদান করেন। আগামী ২০২৫ সাল থেকেই আইআইটি খড়্গপুরের শুরু হবে ৭৫ তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠান।
সারা পৃথিবীর একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় সম্মানজনক ক্ষেত্রে নাম রয়েছে ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি খড়্গপুরের। আইআইটি খড়গপুর থেকেই নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন একাধিক কৃতী ছাত্রছাত্রী। নিজেদের প্রতিষ্ঠা শুধু নয়, আইআইটি খড়গপুর থেকে শিক্ষা নিয়ে নিজেরাই আজ হয়েছেন চাকরিদাতা। সুন্দর পিচাই-এর মত কৃতীকে তৈরি করেছে এই আইআইটি। স্বাভাবিকভাবে ভারতবর্ষের এই প্রাচীনতম প্রযুক্তিবিদ্যার প্রতিষ্ঠান মাথা উঁচু করে সগর্বে ৭৫ বর্ষে পা দিতে চলেছে। সারা ভারতবর্ষ নয়, সারা পৃথিবীর কাছে এক অন্যতম প্রতিষ্ঠান আইআইটি খড়্গপুর।