কাঁদতে কাঁদতে জেলাশাসকের দফতরে পৌঁছলেন মহিলা, ‘দেওর আমাকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে…’! শুনেই রেগে কাঁই অফিসাররা

কাঁদতে কাঁদতে জেলাশাসকের দফতরে পৌঁছলেন মহিলা, ‘দেওর আমাকে ভুলিয়ে-ভালিয়ে…’! শুনেই রেগে কাঁই অফিসাররা

Bareilly news: পারিবারিক বিবাদ সামলাতে গিয়ে জেরবার আধিকারিকরাও। শেষ পর্যন্ত তদন্তের আশ্বাস দিয়ে মহিলাকে শান্ত করে বাড়ি পাঠালেন তাঁরা।

বরেলি: সরকারি চাকরির লোভে প্রতারণা, খুন। হতাশ মহিলার কান্নাকাটি, চেঁচামেচি। সব মিলিয়ে জেলাশাসকের কার্যালয়ে হুলস্থূল কাণ্ড। পারিবারিক বিবাদ সামলাতে গিয়ে জেরবার আধিকারিকরাও। শেষ পর্যন্ত তদন্তের আশ্বাস দিয়ে মহিলাকে শান্ত করে বাড়ি পাঠালেন তাঁরা।

মহিলার নাম রীনা। তিনি বরেলি জেলার ফরিদপুরের বাসিন্দা। মহিলার অভিযোগ, তাঁর শাশুড়ি সরকারি চাকরি করতেন। চাকরি করতে করতেই তাঁর মৃত্যু হয়। সেই চাকরি পাওয়ার জন্য ষড়যন্ত্র শুরু করে তাঁর দেওর। প্রথমে তাঁর স্বামীকে হত্যা করে। তারপর সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রীনাকে নিজের পক্ষে নিয়ে আসে।

রীনার দেওর অশ্বিনী এখন তাঁর মায়ের চাকরি পেয়েছেন। কিন্তু সরকারি চাকরি পাওয়ার পরই বেঁকে বসেছেন তিনি। রীনাকে কোনও সাহায্য করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। এতেই ক্ষেপে গিয়েছেন রীনা। মহিলার দাবি, তিনি অসহায়। স্বামী মৃত। তাঁকে দেখার কেউ নেই। সন্তানদের নিয়ে পথে পথে ঘুরছেন। এখন দেওর সাহায্য না করলে সংসার চলবে কী করে? সন্তানদেরই বা মানুষ করবেন কীভাবে?

মহিলার এই কাহিনী যেমন জটিল, তেমনই রোমাঞ্চকর। একেবারে সিনেমার মতো। শুনে থ হয়ে যান জেলাশাসকের দফতরের আধিকারিকরাও। স্বামীকে খুনের জন্য রীনা সরাসরি অশ্বিনীর দিকেই আঙুল তুলেছেন। এমনকী, তাঁকে সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে অশ্বিনী স্বামীর মৃতদেহ পোস্টমর্টেম করতেও বাধা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন রীনা।

এখানেই শেষ নয়। পুরো ঘটনা অশ্বিনী সাজান নিজের পরিকল্পনা মতো। যাতে কারও কোনও সন্দেহ না হয়। রীনার স্বামী অর্থাৎ তাঁর দাদার খুনের জন্যও কেউ তাঁর দিকে আঙুল না তোলে। এই কাজে অনেকাংশেই সফল হন অশ্বিনী। তবে পুরোটা নয়। অনেকেই সন্দেহ করতে শুরু করেন। বিশেষ করে আত্মীয়রা।

অবস্থা বেগতিক বুঝে সব আত্মীয়দের সামনে রীনা এবং তাঁর প্রতিবন্ধী বিবাহিত ননদকে সাহায্যের আশ্বাস দেন অশ্বিনী। কারণ চাকরি পাওয়ার জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের সামনে তাঁদের সম্মতির প্রয়োজন ছিল। সেটাই কৌশলে আদায় করে নিয়েছিলেন তিনি। এখন প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন। রীনা এবং তাঁর ননদকে কোনও সাহায্য করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। এমনই অভিযোগ মহিলার।

এই পরিস্থিতিতে বিচার চেয়ে জেলাশাসকের কার্যালয়ে হাজির হন রীনা। কাঁদতে কাঁদতে সরকারি আধিকারিকদের পুরো ঘটনা খুলে বলেন। দেওর অশ্বিনীর কঠোর শাস্তি দাবি করেন তিনি। উপস্থিত সরকারি কর্তারা তদন্তের আশ্বাস দিয়ে তাঁকে কোনওরকমে শান্ত করে বাড়ি পাঠান।