#কলকাতা: বাজারে আমের আমদানি শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। তুলনামূলক ভাবে এ বারে দাম একটু চড়া। বাজারে হিমসাগর ৮০-১৩০ টাকা প্রতি কেজি। ল্যাড়া ১০০-১৫০ টাকা কেজি। আম্রপালি ৮০-১২০ টাকা। ফজলি ১০০ টাকা। দামের ছ্যাকা খাওয়ার পরেও তাতেই হাত বাড়াচ্ছে সাধারণ মানুষ। তাই বলে একটি আম ৫০০ টাকা? দাম শুনে চক্ষু চড়কগাছ। কিনতে না পাড়লেও দেখেই স্বাদ মেটানোর লোকের অভাব নেই।
কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে ম্যাঙ্গো ফেস্টিভ্যাল। সেখানেই বিভিন্ন জেলা থেকে হরেক রকমের আম নিয়ে এসেছেন কৃষকেরা। এখানে হরেক রকম আম মিলছে নানা রকম দামে। ল্যাংড়া, হিমসাগর, ফজলি, গোলাপখাস, তোঁতাপুরি যেমন এসেছে তেমনই এসেছে নাম না জানা বেশ কিছু আম। নবাবের জেলা মুর্শিদাবাদ ও মালদহের আমের রকমফের দেখে তো মাথা ঘুরে যাওয়ার জোগাড় কলকাতার বাসিন্দাদের।
এ ছাড়াও উত্তর চব্বিশ পরগণা, দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা, নদিয়া, হুগলি, হাওড়া-সহ বিভিন্ন জেলা থেকে আম নিয়ে এসেছেন কৃষকেরা। তবে সব আমের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নজর কেড়েছে ‘কোহিতুর’। মুর্শিদাবাদ জেলার এই আমকে মূলত নবাবি আম বলেই ডাকেন সেখানকার মানুষ। সাদা তুলোর মধ্যে এই আম রাখা হয়। না হলেই নষ্ট হয়ে যায় শৌখিন এই রসালো ফলটি। কোহিতুর আমটি এখানে নিয়ে এসেছেন আশাবুল মণ্ডল। তিনি বলেন, “মুর্শিদকুলি খাঁ এই আমটি খেতে পছন্দ করতেন। সিরাজদৌল্লা রুপোর চামচ দিয়ে খেতেন। খুব যত্ন সহকারে এই আমটি করতে হয়। হাত দেওয়া যায় না। তুলোর উপরে রাখতে হয়। আমে হাত দিলে স্বাদ খারাপ হয়ে যায়। এই আমের ফলন খুব বেশি হয় না। অন্য সময় এক একটি আম হাজার টাকার নিচে পাওয়া যায় না। এখানে নিয়ে এসেছি বলে পাঁচশো টাকা দাম রেখেছি। দেশ-বিদেশের শৌখিন মানুষেরা মূলত এই আমের ক্রেতা।”
তবে কলকাতায় এই আম দেখতে এসেছেন অনেক মানুষ। নাকতলার বাসিন্দা তপন রায় বলেন, “মুর্শিদাবাদে অনেক রকমের আমের কথা শুনেছি। এই বার নিজের চোখে দেখলাম। সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে হলেও একবার নিজের চোখে দেখতে এসেছি।” বেহালার বাসিন্দা শঙ্কর শীল বলেন, “ট্রেনে হকাররা যেরকম বলে দেখাশোনা ফ্রি কেনাকাটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। এখানে এসেও সেরকমই মনে হলো। চোখে দেখলাম, তবে হাতের সামনে থাকলেও ছুঁয়ে দেখার অনুমতি নেই। আর খাওয়ার তো ক্ষমতাই নেই।” এই আমের কথা শুনে হাওড়ার রামরাজা তলা থেকে এসেছেন তাপস কুন্ডু। তিনি বলেন, “এই ধরনের জিনিস আরো বেশি করে উৎপাদন করার জন্য সরকারের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।”
UJJAL ROY