হিন্দু ‘রাজতন্ত্র চাই’, তুমুল সংঘর্ষ নেপালে, চলল গুলি, মৃত ২, ডাক পড়ল সেনার

হিন্দু ‘রাজতন্ত্র চাই’, তুমুল সংঘর্ষ নেপালে, চলল গুলি, মৃত ২, ডাক পড়ল সেনার

রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে রক্ত ঝরল নেপালে। সংবাদসংস্থা এপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, হিমালয়ের কোলে অবস্থিত দেশে হিন্দু রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য যে মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছিল, সেটা ঘিরে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। ছোড়া হয় পাথর। চলেছে গুলি। ছোড়া হয় রবার বুলেট। তুমুল খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। তার জেরে এক সাংবাদিক-সহ দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। আবার সংবাদসংস্থা এএফপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুলিবিদ্ধ হয়ে এক বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে। আর অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে সাংবাদিকের। সেইসঙ্গে কমপক্ষে ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে অধিকাংশই নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য। সেই পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে ক্যাবিনেট বৈঠকের ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। সেইসঙ্গে ডাকা হয়েছে সেনাকে। জারি করা হয়েছে কার্ফু।

২০০৮ সালে নেপালে ইতি পড়েছিল রাজতন্ত্রে

আর সেই যাবতীয় অশান্তি তৈরি হয়েছে রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে। সংসদীয় ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে ২০০৮ সালে নেপালে ২৪০ বছরের রাজতন্ত্রে ইতি টানা হয়েছিল। যদিও মাঝেমধ্যেই রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবি তোলেন অনেকেই। আর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি নেপালের গণতান্ত্রিক দিবসে প্রাক্তন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহের ভিডিয়োবার্তার পরে নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে সেই দাবি।

সেই রেশ ধরে শুক্রবার পূর্ব কাঠমান্ডুর তিনকুনে এলাকায় মিছিল করেন হাজার-হাজার মানুষ। হাতে রাজা জ্ঞানেন্দ্রর ছবি এবং নেপালের জাতীয় পতাকা নিয়ে ‘দেশকে বাঁচাতে রাজা ফিরে আসুন’, ‘দুর্নীতিবাজ সরকারের পতন হোক’, ‘আমরা রাজতন্ত্র ফেরত চাই’ স্লোগান তুলতে থাকেন তাঁরা। তাঁরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। যা গণতন্ত্র বজায় রাখার পক্ষে স্বর তোলা সোশ্যালিস্ট ফোরামের সঙ্গে ঝামেলা ঠেকাতে লাগানো হয়েছিল।

ভাঙচুর, লুটপাঠ, আগুন – তুমুল সংঘর্ষ কাঠমান্ডুতে

যদিও কিছুক্ষণের মধ্যেই হাতের বাইরে বেরিয়ে যায় পরিস্থিতি। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায়। ছোড়া হয় পাথর। বাড়ি জ্বালিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। আটটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। বানেশ্বরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় রাজনৈতিক দলের কার্যালয়ে। সুপারমার্কেটে লুটপাঠ চালানো হয়। ভাঙচুর চালানো হয় সংবাদমাধ্যমের অফিসে।

কার্ফু জারি করা হয়েছে বিভিন্ন জায়গায়

পরিস্থিতি সামাল দিতে বিমানবন্দর, গৌশালা, বানেশ্বর চক, তিনকুনে, কোটেশ্বর-সহ বিভিন্ন এলাকায় কার্ফু জারি করা হয়। প্রাথমিকভাবে রাত ১০ টা পর্যন্ত কার্ফু জারি করা হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে তা বাড়িয়ে সকাল সাতটা পর্যন্ত করা হয়েছে। পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যাঁরা টিকিট দেখাচ্ছেন, তাঁদের বিমানবন্দরে যেতে দেওয়া হচ্ছে।

তারইমধ্যে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, খণ্ডযুদ্ধের সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আর ওই সংঘর্ষের খবর করার সময় মৃত্যু হয়েছে এক সাংবাদিকের। তিনি যে বাড়ি থেকে ছবি তুলেছিলেন, সেখানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ওই বহুতলের চারতলা থেকে সাংবাদিকের দগ্ধ দেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে।

(Feed Source: hindustantimes.com)